মঙ্গলবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ডাকসু যেন প্রহসনের নির্বাচন না হয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডাকসু যেন প্রহসনের নির্বাচন না হয়

মাহমুদুর রহমান মান্না

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) দুবার নির্বাচিত সাবেক ভিপি এবং বর্তমানে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ডাকসু নির্বাচন যেন প্রহসনের না হয়, সেটাই প্রত্যাশা করছি। ৩০ ডিসেম্বরের মতো ভোটের পুনরাবৃত্তি চাই না। সব ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের মতামতের ভিত্তিতে ডাকসুতে একটি কার্যকর ও প্রতিনিধিত্বশীন নির্বাচন দেখতে চাই। গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনালাপে এ মন্তব্য করেন মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে এটা শুভ সংবাদ। কিন্তু নির্বাচনে যেসব ছাত্রছাত্রী বা বিভিন্ন মতের সংগঠনগুলো অংশ নেবেন তাদের মধ্যে উদ্বেগের সঞ্চার হয়েছে, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে কি না প্রশ্নে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে ছাত্র সংগুঠনগুলোর প্রতিনিধিরা অংশ নিয়ে বলেছেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু কোনো পরিবেশ নেই। কারণ, এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংগঠনগুলোর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নেই। বিভিন্ন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা হলেও থাকতে পারছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কিংবা মধুর কেন্টিনেও যেতে পারছেন না তারা। সভা-সমাবেশও করতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সবার সহাবস্থান ও সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে এটা আমার কাছে বোধগম্য নয়। শুধু যে ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরাই এই সমস্যার মধ্যে আছে তা নয়। কোটাবিরোধী আন্দোলন যারা করেছিল তারাও সমস্যার মুখোমুখি। তারা যখন নির্বাচনের ঘোষণা করেছে, তাদের ওপরও আক্রমণ শুরু হয়। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে দখলদারিত্ব চলছে। ভর্তি বা সিট বাণিজ্যের কথা সবারই জানা। এই মুহূর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো হল সরকারি দলের ছাত্র সংগঠনের দখলে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় বা হল কর্তৃপক্ষের কোনো কর্তৃত্ব নেই। প্রচুর পরিমাণে বহিরাগত রয়েছে। সেখানে শুধু সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন নিয়ন্ত্রণ করছে। আর কারও প্রতিনিধিত্ব নেই। এ জন্য সবাই মিলে দাবি তুলেছে, হলে যাতে ভোট না হয়। ভোট যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে হয়। এ সম্পর্কেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সবকিছু মিলে ডাকসু নির্বাচন সত্যি সত্যি কি অর্থবহ হবে এমন পরিবেশ দৃশ্যমান হচ্ছে না। এ নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমি দুবার ডাকসুর নির্বাচিত সহসভাপতি ছিলাম। ওই সময়কার ডাকসুর যে ঐতিহ্য ছিল, সেটাই দেখতে চাই। শুধু গণঅভ্যুত্থানের জন্য নয়, ছাত্র নেতৃত্ব তৈরি করা, শিক্ষাবহির্ভূত গুণাবলি তৈরি করা, ক্রীড়া, সংস্কৃতিসহ সর্বক্ষেত্রেই ডাকসু যেন কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে সেটাই দেখতে চাই। ভবিষ্যৎ সুনাগরিক গড়ে উঠতে পারার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ডাকসুকে দেখতে চাই। কোনোভাবেই প্রহসনের নির্বাচন চাই না।

সর্বশেষ খবর