শুক্রবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

সবাইকে সমান দৃষ্টিতে দেখতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

সবাইকে সমান দৃষ্টিতে দেখতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোষ্ঠীনির্বিশেষে সবার সমান অধিকার রক্ষা করা সরকারের লক্ষ্য। এখানে বেদে, হিজড়া, চা শ্রমিক, দলিত শ্রেণি- সবারই ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সবার সমান অধিকার থাকবে। আমরা সেটাই নিশ্চিত করতে চাই। সবার ভাগ্য পরিবর্তন করাই আমাদের লক্ষ্য। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। এখানে কাউকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বা অবহেলিত ভাবলে চলবে না। সবাইকে ভাবতে হবে সবাই এ দেশের নাগরিক এবং প্রত্যেক নাগরিকের সমান অধিকার। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ শুধু নয়, আমাদের দলিত শ্রেণি, হিজড়া, চা শ্রমিক, দেশের সব মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তাদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সাবলম্বিতা অর্জন, সেই সঙ্গে তাদের সাংস্কৃতিক বিকাশ, শিক্ষা-দীক্ষায়, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে আমাদের সব জনগোষ্ঠী যেন সমান সুযোগ-সুবিধা পায়, কেউ যেন অবহেলিত না থাকে, কেউ যেন পিছিয়ে না থাকে সেটাই আমাদের লক্ষ্য। শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষা-দীক্ষায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের জন্য আমাদের সব জনগোষ্ঠী যেন সমান সুযোগ পায়, কেউ যেন অহেলিত না থাকে। কেউ যেন দূরে পড়ে না থাকে- সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা বিশেষ কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। যার ফলে আজ এই বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান। বৃত্তিপ্রাপ্ত সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা স্বকীয় পোশাক পরে অনুষ্ঠানে আসায় তাদের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, খুব ভালো লাগল, প্রত্যেকে তার নিজ নিজ পোশাক-পরিচ্ছদ পরে সুন্দরভাবে এসেছে। এটা খুবই সুন্দর লেগেছে।

নিজস্ব ঐতিহ্যচর্চার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজের প্রয়োজনে মানুষ পোশাক পরবে এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু নিজের সংস্কৃতি, নিজস্ব স্বকীয়তাটাও মাঝে মাঝে প্রকাশ করা প্রয়োজন। তাতে মানুষ দেখতে পাবে, আমাদেও বৈচিত্র্যটা কত চমৎকার। উপস্থিত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যার যার পেশা, সেই পেশাটা ছেড়ে দিলে চলবে না। সেই পেশাটাকেও ধরে রাখতে হবে এবং সেটাতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেই যেন আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখে সেদিকে তোমাদের বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে- সেটাই আমি চাই। শিক্ষার্থীদের আগামী দিনের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি দেশ গড়ায় অবদান রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা-দীক্ষা নিয়ে সবাই রাষ্ট্র পরিচালনায় আসবে। দেশটা আমাদের, এ কথাটা সবাইকে মনে রেখে যার যার ক্ষেত্রে সবাই কাজ করে যাবে। এখন যারা উপস্থিত, তাদের কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে, মেডিকেলে পড়ছে বিভিন্ন সাবজেক্টের ওপরে উচ্চতর পড়াশোনা করছে, তারাই একদিন দেশ গড়ার কাজে অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারবে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান। বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী এ্যা ম্যাট। তিনি শিক্ষাবৃত্তিসহ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উন্নয়নে আন্তরিকতা ও বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন। অনুষ্ঠানে ৫০০ শিক্ষার্থীকে ২৫ হাজার করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার বৃত্তির চেক দেওয়া হয়। চলতি অর্থবছরে ২ হাজার শিক্ষার্থীকে আরও ৫ কোটি টাকা বৃত্তি দেওয়ার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সর্বশেষ খবর