রবিবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বেহাল জাপার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর বেহালদশা চলছে। সারা দেশে সংগঠনের কার্যক্রম ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেই। নির্বাচনের পর থেকেই জাপার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো অলস সময় পার করছে। জাপা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঘুরে-ফিরে ১৫ থেকে ২০ জন নেতাকে সন্ধ্যার পর আড্ডা দিতে দেখা যায়। গত কয়েকদিনে পার্টির কাকরাইল কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, জাতীয় যুব সংহতির কিছু নেতাকর্মী তাদের রুমে অলস সময় কাটাচ্ছেন। স্বেচ্ছাসেবক পার্টির কার্যালয়ে সাধারণ সম্পাদকসহ তিনজনকে পাওয়া যায়। ছাত্রসমাজের কার্যালয় অধিকাংশ সময় বন্ধ পাওয়া যায়। সংরক্ষিত মহিলা আসনের জন্য এমপি হওয়ার বাসনায় কিছু মহিলা পার্টির নেত্রীকে দেখা গেছে। শ্রমিক পার্টির কার্যালয়ে ৩ থেকে ৪ জনকে দেখা যায়। এছাড়া ওলামা পার্টি, তাঁতী পার্টির কাউকে দেখা যায়নি। জানতে চাইলে পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচনের পর দলের কোনো কর্মকাণ্ড নেই। তাছাড়া পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ সিঙ্গাপুরে আছেন। সোমবার দেশে ফিরবেন। আমরা এখন সংসদে বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করছি। তিনি বলেন, এইচ এম এরশাদ দায়িত্ব দিলে আমি চেষ্টা করব প্রতিটি অঙ্গসংগঠনকে কাউন্সিলের মাধ্যমে সক্রিয় করতে। জানা যায়, মহিলা পার্টির সভানেত্রী দলের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অনন্যা হোসাইন মৌসুমী। সংগঠনের সর্বশেষ কবে সম্মেলন হয়েছে তা মহিলা পার্টির কেউ জানে না। সংগঠনের সভাপতি ৬ মাসেও একবার পার্টি অফিসে আসেন না বলে মহিলা নেত্রীদের অভিযোগ। জাতীয় যুব সংহতির সভাপতি আলমগীর সিকদার লোটন, সাধারণ সম্পাদক ফকরুল আহসান শাহাজাদা। তারাও সারা দেশে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে পারেননি। এখনো অনেক জেলায় সংগঠনের সম্মেলনের বাকি রয়েছে। জাতীয় কৃষক পার্টির সভাপতি পার্টির প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা। এ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিকবার পরিবর্তন করলেও তা স্থায়ী হয় না। সপ্তাহের বেশিরভাগ সময়ই কৃষক পার্টির কার্যালয় বন্ধ থাকে বলে জাপা কার্যালয়ের স্টাফরা জানান। প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা ও পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসুদ পারভেজ সোহেল রানাকে প্রায় দুই বছর আগে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সভাপতির দায়িত্ব দেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন নাজমুল খান। সংগঠনের নেতাদের অভিযোগ, দায়িত্ব পাওয়ার পর একদিনের জন্যও কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেননি সোহেল রানা। অন্যদিকে জাতীয় ছাত্রসমাজের কমিটি গঠন করা হয় নির্বাচনের ৫ মাস আগে। তিন মাসের জন্য সম্মেলন করার শর্তে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ঘোষণা করা হলেও দায়িত্ব নেওয়ার পর কোনো সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড করতে পারেনি তারা। এ ছাড়া এ কমিটি ঘোষণা করার পর ছাত্রসমাজ তেমন সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছে না। জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সভাপতি লিয়াকত হোসেন খোকা ও সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন। শুরুতে এ কমিটি সক্রিয় থাকলেও বর্তমানে সংগঠনটি ঝিমিয়ে পড়েছে। সংগঠনের সভাপতি লিয়াকত হোসেন খোকা সংসদ সদস্য হওয়ার সুবাধে নারায়ণগঞ্জে নিজের আসন নিয়েই ব্যস্ত থাকেন সব সময়। সংগঠনের সভাপতি ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক উভয়ই বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে থাকেন। অঙ্গসংগঠনগুলোর কেন্দ্রের অবস্থা দেখে নিশ্চুপ তৃণমূল নেতাকর্মীরাও। এ ছাড়া জাতীয় মৎস্যজীবী পার্টি, জাতীয় তাঁতী পার্টি, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পার্টি, জাতীয় সৈনিক পার্টি, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পার্টির সাংগঠনিক অবস্থাও নেই বললেই চলে।

সর্বশেষ খবর