বৃহস্পতিবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার

মুহাম্মদ সামাদ

সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার

আমরা ছাত্রজীবন থেকে সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালুর আন্দোলন করছি। যখন স্কুলে পড়তাম তখন থানা সদরের বড় কিছু দোকানে ইংরেজিতে লেখা সাইনবোর্ড দেখতাম। শহীদ দিবস উপলক্ষে বড়রা আমাদের আলকাতরা ও বাঁশের তৈরি পিচকিরি কিনে দিতেন। ওই পিচকিরিতে আলকাতরা ভরে ইংরেজি অক্ষরগুলো কালি দিয়ে ভরে দিতাম। একুশে ফেব্র“য়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় স্কুল জীবনের কথাগুলো খুব মনে পড়ত। আজও মনে পড়ে। আজ বিশ্বের ৭০টি দেশ একুশে ফেব্র“য়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করছে। ভাষাশহীদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত রাষ্ট্রভাষা বাংলা বিশ্বের ২৫/৩০ কোটি মানুষের মাতৃভাষা। বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতে মাতৃভাষা বাংলার ব্যবহার হচ্ছে। উচ্চ আদালতে ক্ষুদ্র কিছু অংশ বাংলা ভাষায় রায় দিচ্ছে। আমি মনে করি, সর্বত্র সেটা চালু হওয়া উচিত। বিশ্বায়নের এই যুগে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে ইংরেজির ব্যবহার হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সর্বত্র বাংলা ভাষার ব্যবহার নিজেদের মর্যাদা ও দেশপ্রেমের পরিচয় বহন করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট আছে। সেখানে ছয় মাসের বিশেষ ভাষা শিক্ষা কোর্স চালু আছে। আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে দেশি-বিদেশি ভাষার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। আমাদের একটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আছে তারাও সেভাবে কাজ করছে না। বাংলা ভাষার আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে তারা কাজ করতে পারে। উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্নাতক পর্যায়ের বিভিন্ন বিষয়ে এখনো ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানো হয়। এক্ষেত্রে প্রধান বাধা বাংলা ভাষায় পাঠ্যপুস্তক নেই। এই জরুরি কাজটি করতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, বাংলা একাডেমি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট। সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত সবাইকে আন্তরিক হতে হবে। মনে রাখতে হবে, ভাষাপ্রীতির মাধ্যমে দেশপ্রেম প্রকাশ পায়।

লেখক : কবি ও শিক্ষাবিদ

সর্বশেষ খবর