শুক্রবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
কোচিং বন্ধ শিক্ষকদের

রাঘব বোয়ালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না দুদক : হাই কোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করে ২০১২ সালের নীতিমালা বৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছে হাই কোর্ট। গতকাল এ রায় ঘোষণার সময় আদালত মন্তব্য করে, দুদক সম্পর্কে জনসাধারণের ধারণা জন্মেছে যে, দুদক দুর্বলদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও সমাজের রাঘব-বোয়ালদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না। আদালত বলে, ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। সেসব রেখে দুদক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ক্লাসে আসছে কিনা তা নজরদারি করছে। বড় বড় রাঘব-বোয়াল ধরে এনে ছেড়ে দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। কোচিং বাণিজ্যের বিষয়ে আদালতের মন্তব্য, কোচিং বাণিজ্য কারা করে তা সবাই জানে, কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। সরকারি-বেসরকারি শিক্ষকদের কোচিং বন্ধের সরকারি নীতিমালা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা পাঁচটি পৃথক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করে। এ রায়ের ফলে সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধে নীতিমালা-২০১২ কার্যকর হচ্ছে বলে জানান আইনজীবী। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছে, ‘কোচিং বাণিজ্য অনুসন্ধান এবং তদন্ত করার এখতিয়ার দুদকের আছে। তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি অগ্রাধিকার তালিকা থাকতে হবে, কোন বিষয়ে কমিশন তদন্ত বা অনুসন্ধান করবে। কেননা দুদকের জনবল সংকট রয়েছে। আদালত বলে, কাস্টমস হাউস, ব্যাংক, বন্দর, ভূমি অফিসের দুর্নীতির বিষয়ে ছোটো পরিসরে তদন্ত বা অনুসন্ধানের সুযোগ নেই দুদকের। এসব খাতে গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ ধরনের অভিযোগে নজর দিতে হবে। কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগে রাজধানীর মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না- সেজন্য সরকার গত বছর কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে এ নোটিস দেয় সরকার। এসব নোটিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধের নীতিমালা-২০১২ চ্যালেঞ্জ করে শিক্ষকরা হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন। আদালত গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই চিঠির কার্যকারিতা চার মাসের জন্য স্থগিত করার পাশাপাশি রুল জারি করেছিল। এর আগে ২৭ জানুয়ারি আদালত সব রিটের শুনানি ও এসব রিটের ওপর দুজন অ্যামিকাস কিউরির বক্তব্য শোনার পর রায়ের জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করে। রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর, দুদকের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।

সর্বশেষ খবর