শনিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
সম্প্রচার সম্মেলনে স্পিকার

অবাধ তথ্য প্রবাহের সুবর্ণ সময়ে দেশ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, অবাধ তথ্য প্রবাহের সুবর্ণ সময়ে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। দেশে গণমাধ্যমের কর্মপরিধি ও কাজের পরিসর অনেক বিস্তৃত হয়েছে।

গতকাল সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে সম্প্রচার সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত চার পর্বের এ অনুষ্ঠানে ছিল গণমাধ্যমকর্মীদের সরব উপস্থিতি। এ সময় সম্প্রচার সাংবাদিকদের নবগঠিত সংগঠন ‘সম্প্রচার সাংবাদিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহ আলমগীর, একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল বাবু, নাগরিক টেলিভিশনের রুবানা হক, জিটিভির প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা প্রমুখ।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, কল্যাণমূলক ও ঝুঁকি মোকাবিলা, পেশাগত ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ানো, গবেষণা ও নীতি সহায়তার লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে সম্প্রচার সাংবাদিক কেন্দ্র যেন কার্যকরভাবে এগিয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, সম্প্রচার সাংবাদিকতার সঙ্গে সম্পৃক্ত সব সাংবাদিক যেন এই প্লাটফর্ম থেকে তাদের লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা। তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বিদেশি চ্যানেল প্রদর্শন কোনো অপরাধ নয়। কিন্তু কর না দিয়ে সরকারের অনুমতি ছাড়া বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার করা আইনগতভাবে দণ্ডনীয় অপরাধ। যারা এই কাজগুলো করছেন, তারা আইন লঙ্ঘন করছেন। আমি আশা করব, সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আগেই তারা এসব থেকে বিরত হবেন। এ সময় তিনি দেশের গণমাধ্যম অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে স্বাধীন বলেও দাবি করেন। রেডিও-টেলিভিশনের সাংবাদিকদের বেতন-কাঠামোর জন্য আলাদা নীতিমালার বিষয়েও সম্প্রচার সম্মেলনে আশ্বাস দেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমাদের দেশের কিছু টেলিভিশন বিজ্ঞাপনের রেটের ক্ষেত্রে আপস করে। ফলে বিজ্ঞাপনের রেট কমে যায়। এক্ষেত্রে টেলিভিশন মালিকরা একত্র হয়ে পদক্ষেপ নিতে পারেন। তারা বলতে পারেন, আমরা এত টাকার নিচে বিজ্ঞাপন নেব না।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, ‘গত ১৮/২০ বছরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ওয়েজবোর্ড টেলিভিশনে করতে পারিনি আমরা। এটাই বাস্তবতা। প্রিন্ট মিডিয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি ছাড়া কেউ পূর্ণাঙ্গ ওয়েজবোর্ড দেয় না। আমাদের প্রশিক্ষণ, দক্ষ কর্মীসহ নানা কিছুর সংকট আছে। চ্যালেঞ্জের জায়গাগুলো রয়ে গেছে। এসব সংকট মোকাবিলায় সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।’

শাহ আলমগীর বলেন, আমাদের সম্প্রচার মাধ্যম শুরু থেকে একটি জালের মধ্যে পড়ে গেছে। এটা হলো বিজ্ঞাপনদাতাদের সঙ্গে টেলিভিশনের সম্পর্ক। সম্প্রতি সরকার একটি সম্প্রচার কমিশন আইন করতে যাচ্ছে। এতে সাতজন ব্যক্তি স্বাধীনভাবে কাজে করবেন। তারা টেলিভিশন ও বিজ্ঞাপনের বিষয়গুলো দেখবেন।  

সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা টেলিভিশনকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে পারে মন্তব্য করে মোজাম্মেল বাবু বলেন, আমাদের টেলিভিশনগুলো গণমাধ্যম নয়, বরং এগুলো করপোরেট ফান্ডেড। তাই টেলিভিশনকে বাঁচাতে এর শেয়ার দর্শকের কাছে ছেড়ে দিতে হবে। যাতে তাদের কাছ থেকে পাওয়া আয়ে টেলিভিশন চলতে পারে। আমরা সবাই মিলে টেলিভিশনকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে পারি।

সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, বিগত দুই দশকে টেলিভিশনের অনেক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু আমরা এখনো সংগঠন পর্যায়ে আছি, প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাইনি। আজকে আমাদের দাবি টেলিভিশনকে বাঁচাতে হবে। এজন্য টেলিভিশন মালিকদেরই উদ্যোগ নিতে হবে।

সম্মেলনের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করল টেলিভিশন সাংবাদিকদের নতুন প্লাটফর্ম ‘সম্প্রচার সাংবাদিক কেন্দ্র’। মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক রেজোয়ানুল হক সংগঠনের চেয়ারম্যান ও একাত্তর টেলিভিশনের বার্তা প্রধান শাকিল আহমেদ সংগঠনটির সদস্য সচিব হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।

সর্বশেষ খবর