রবিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঢেলে সাজাতে হবে সব কিছু

-অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢেলে সাজাতে হবে সব কিছু

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। মৌলিক শিক্ষাকে সবার জন্য বাধ্যতামূলক করতে হবে। এই সিলেবাস হবে সবার জন্য, এখানে কোনো পার্থক্য চলবে না। গত সোমবার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, সবার উচ্চশিক্ষার প্রয়োজন নেই। মৌলিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক হলে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ সবার জন্য দরকার হবে না। বরং এখান থেকে একটি বড় অংশকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করা উচিত। তিনি বলেন, প্রায়োগিক শিক্ষায় দক্ষ এই জনগোষ্ঠীকে উদ্যোক্তা তৈরিতে সরকারের পক্ষ থেকে ঋণ প্রদান করতে হবে। এ ছাড়া বিদেশে দায়িত্বরত বাংলাদেশি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোন দেশে কী ধরনের দক্ষতার জনশক্তির প্রয়োজন রয়েছে সে বিষয়ে খোঁজ নিতে হবে। সে অনুযায়ী দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে। বাজারে চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষা খাত তৈরি করতে হবে। যে ধরনের চাকরির বাজার রয়েছে সে ধরনের শিক্ষা কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা ঘাটতি বিষয়ে অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সেরকম মানসম্পন্ন কোনো গবেষণাই হচ্ছে না। বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও জার্নাল নিয়ে আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছে। শুধু জ্ঞান অর্জন করলে হবে না। জ্ঞান চর্চা ও সৃজন করতে হবে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নজর দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সিলেবাসের বিষয়ে এই শিক্ষাবিদ বলেন, ইংলিশ মিডিয়াম, মাদ্রাসা থেকে শুরু করে যে কোনো প্রতিষ্ঠানের সিলেবাস, শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া এবং গুণগতমান অবশ্যই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনে পরিচালিত হতে হবে। সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলা উচিত নয়।  ইংলিশ মিডিয়ামের ‘এ’ লেভেল, ‘ও’ লেভেল কিংবা কিন্ডারগার্টেন যে প্রতিষ্ঠানই হোক না কেন, সরকারের আওতার বাইরে ইচ্ছামতো চলা কোনো যুক্তির মধ্যে পড়ে না। এসব প্রতিষ্ঠানের সিলেবাসেও কিছু বিষয়ে সমস্যা আছে। তিনি বলেন, ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা ইংরেজিতে ভালো হলেও অন্য বিষয়ে দুর্বলতা লক্ষ্য করা যায়। উচ্চশিক্ষার জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় তাদের সুযোগ পাওয়ার আনুপাতিক হার কম দেখা যায়। অভিভাবকদের ভুল ধারণা থাকে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়লেই ভালো হবে। কিন্তু উচ্চশিক্ষায় সমস্যা থেকে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়ে অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা যদি যথার্থ এবং নির্ভরযোগ্য হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার দরকার পড়ে না। দুই পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা যেত। এ বিষয়ে যদি প্রশ্ন থাকে তাহলে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে হবে। মেডিকেলে যদি গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া যায়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্যা কোথায়। লাখ লাখ শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকের প্রয়োজনে এই সিদ্ধান্ত নিতে জাতীয় সংসদে প্রয়োজনে আইন পাস করা যেতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর