মঙ্গলবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি

বিএনপি নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী

প্রতিদিন ডেস্ক

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে অংশ নিলেও প্রায় সব উপজেলাতেই চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি। দলের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড দুই ধাপে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা অনেকই বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ফলে দলের ভিতরের প্রার্থীর বিরুদ্ধেই এবার লড়াইয়ে নামতে হতে পারে নৌকার প্রার্থীদের। এদিকে বিএনপি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করলেও দলের স্থানীয় নেতারা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আমাদের হবিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গতকাল জেলার ৮ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ২৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বিভিন্ন উপজেলায় সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তারা মনোনয়নপত্র জমা দেন। সব উপজেলায়ই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে অংশ না নেওয়ায় এবারের নির্বাচনের আমেজ খুব একটা জমে উঠছে না। তবে কয়েকটি উপজেলায় বিএনপি নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। হবিগঞ্জ সদর : এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমদুল হক (স্বতন্ত্র), আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান শামীম, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোতাচ্ছিরুল ইসলাম (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী)। এখানে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির কোনো নেতা অংশ নিচ্ছেন না। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান আওয়াল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল আহাদ ফারুক, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবিদুর রহমান। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফৌরদৌসি আরা বেগম, আওয়ামী লীগ সমর্থক নূরুন্নাহার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী মশিউর রহমান শামীম জানান, আওয়ামী লীগের অনেকেই প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, তারা আমার চেয়ে কোনো অংশেই কম যোগ্য নন। কিন্তু দল যেহেতু একজনকেই মনোনয়ন দেবে সে বিবেচনা থেকেই আমি পেয়েছি। আমি বিশ^াস করি তারা যদি আওয়ামী লীগের আদর্শ বুকে লালন করেন তাহলে তারা নির্বাচন থেকে সম্মানজনকভাবে সরে যাবেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. মোতাচ্ছিরুল ইসলাম বলেন, পৌর আওয়ামী লীগসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। ব্যবসায়ী নেতারাও আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। আমি সর্বস্তরের মানুষের ইচ্ছাতেই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। আমার বিজয় সুনিশ্চিত। লাখাই : এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিউল আলম আজাদ (আওয়ামী লীগ), উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহফুজুল আলম মাহফুজ (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রফিক আহমেদ (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী)। এ উপজেলায় বিএনপির কোনো নেতা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেননি। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মুর্শেদ কামাল চৌধুরী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আমিরুল ইসলাম আলম, সাবেক সেনা সদস্য আশরাফুল ইসলাম শের আলম। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছা. ফয়েজুন্নেছা আক্তার, আলেয়া বেগম, আয়েশা সিদ্দীকা।

চুনারুঘাট : এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল কাদির লস্কর (আওয়ামী লীগ), বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ লিয়াকত হাসান (স্বতন্ত্র), খেলাফত মজলিশ নেতা প্রভাষক আবদুল করিম। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান মহলদার (স্বতন্ত্র), উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি জামাল হোসেন লিটন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবিদা খাতুন, বিএনপি সমর্থক কাজী সাফিয়া খাতুন।

বাহুবল : এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাই (আওয়ামী লীগ), জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আবদুল কাদির চৌধুরী (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লন্ডনপ্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আক্তারুজ্জামান নাছির (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), সৈয়দ খলিলুর রহমান (স্বতন্ত্র)। ভাইস চেয়ারম্যান পদে যুবলীগ আহ্বায়ক তারা মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল আহমেদ কুটি, ফিরোজ আলী মিয়া, মোহাম্মদ আলী, আওয়ামী লীগ সমর্থক শশাংক রঞ্জন, শফিকুল ইসলাম, নিহার রঞ্জন দেব, খন্দকার ইদ্রিছ, ইয়াকুত মিয়া এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ফারুকুর রশিদ ফারুক। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থক বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাদিরা খানম, আওয়ামী লীগ সমর্থক জ্যোৎ¯œা আক্তার, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নিলুফার ইয়াসমিন ও জাতীয় মহিলা পার্টির সভানেত্রী হাসিনা আক্তার (জাতীয় পার্টি)। নবীগঞ্জ : এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলমগীর চৌধুরী (আওয়ামী লীগ), স্বতন্ত্র উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), বিএনপি সমর্থক আবদুল হাই চৌধুরী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাদী গাজীর স্ত্রী গাজী খালেদা সারোয়ার, জাপা নেতা হায়দর মিয়া। ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ নেতা কাজী ওবায়দুল কাদের হেলাল, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মুকিত, পৌর জাপা সাধারণ সম্পাদক মুরাদ আহমদ। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেত্রী সইফা রহমান কাকলী ও দিলারা হোসেন, নাজমা আক্তার (স্বতন্ত্র)।

আজমিরীগঞ্জ : এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হচ্ছেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মর্তুজা হাসান (আওয়ামী লীগ), মো. আলাউদ্দিন (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), তার চাচাত ভাই স্বাধীন মিয়া (স্বতন্ত্র), উপজেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক খালেদুর রশিদ ঝলক (স্বতন্ত্র) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের হিরেন্দ্র পুরকায়স্থ, আওয়ামী লীগ সমর্থক মনিরুজ্জামান মনু, অসীম চৌধুরী সাগর, নাজমুল হাসান, আবদুল জলিল, মমিনুর রহমান সজীব, স্বতন্ত্র রথিন্দ্র দাশ, জামায়াত সমর্থক আবদুল হাই ও হিফজুর রহমান। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুখসানা আক্তার শিখা, আওয়ামী লীগ নেত্রী সুজলা আক্তার, স্বতন্ত্র মাহমুদা আক্তার রেফা হলিমা খাতুন ও সীমা রানী সরকার।

বানিয়াচং : এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন, যুবলীগ নেতা আবুল কাশেম চৌধুরী (আওয়ামী লীগ), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন খান (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী) ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মঞ্জুর উদ্দিন আহমেদ শাহীন (স্বতন্ত্র)। ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি স্মৃতি চ্যাটার্জি কাজল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফ বাবু, জামায়াত নেতা বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার খান, আওয়ামী লীগ নেতা আবিদুর রহমান ও ফারুক আমিন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মহিলা দল সভানেত্রী তানিয়া খানম (স্বতন্ত্র), মহিলা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বিউটি আক্তার, সাধারণ সম্পাদক হাসিনা আক্তার, ফেরদৌসী বেগম। মাধবপুর : এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক (আওয়ামী লীগ), প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা এহতেশামুল বার চৌধুরী লিপু (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এস এস এ এম শাহজাহান (স্বতন্ত্র)। ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি মুজিব উদ্দিন তালুকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য শ্রীধাম দাশ গুপ্ত, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল আজিজ (স্বতন্ত্র), শাহজাহানপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাবুল হোসেন খান (স্বতন্ত্র)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থক নাজমা পাঠান (স্বতন্ত্র), বিএনপি সমর্থক মরিয়ম রহমান বাবুনী (স্বতন্ত্র), বিএনপি নেত্রী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সুফিয়া আক্তার হেলেন (স্বতন্ত্র), মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছা. রোকেয়া আক্তার, আওয়ামী লীগ সমর্থক জাহানারা বেগম। আমাদের লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, লালমনিরহাট সদরসহ ৫  উপজেলার একটি বাদে বাকিগুলোয় আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন বিএনপি নেত্রী ছাড়া দলটি থেকে আর কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। জানা গেছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নজরুল হক পাটোয়ারী ভোলা, কামরুজ্জামান সুজন ( আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী)। জাতীয় পার্টি থেকে জাহিদ হাসান ডাবলু, এখানে ভাইস চেয়ারম্যান পদে পুরুষ ২ জন ও মহিলা ২ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আদিতমারী উপজেলা চেয়াম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রফিকুল আলম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত আলীর ভাতিজা ইমরুল কায়েস ফারুক (বিদ্রোহী)। এখানে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন নিগার সুলতানা রানী। আর ভাইস চেয়ারম্যান পদে পুরুষ ৬ জন ও মহিলা ৬ জন তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

কালীগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মাহাবুবুজ্জামান আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজু (বিদ্রোহী) ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তাহের তাহু (বিদ্রোহী)। এ ছাড়াও জাতীয় পার্টি থেকে নাহিদ হোসেন ও ইশলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের (ইশা) আশরাফ আলী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে পুরুষ ৭ জন ও মহিলা ৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। হাতীবান্ধা উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা সব থেকে বেশি। এখানে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী লিয়াকত হোসেন বাচ্চু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বদিউজ্জামান ভেলু, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সরওয়ার হায়াত খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর হোসেন রন্টু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান মামুন ও সদ্য আওয়ামী লীগে যোগদানকারী এম জি মোস্তফা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এখানে ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপির সহযোগী সংগঠন জেলা মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক মাকতুবা ওয়াসীম বেলীসহ ৪ জন, পুরষ ৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। পাটগ্রামে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রুহুল আমিন বাবুল মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এখানে আওয়ামী লীগের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলেও আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত ওয়াজেদুল ইসলাম শাহীন স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এতে ভাইস চেয়ারম্যান পদে পুরুষ ৪ জন ও এক বিএনপি নেত্রীসহ মহিলা ৩ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। 

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী জানান,     গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলা নিয়ে রাজশাহী-১ সংসদীয় আসন। এ আসনের এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী। এ দুই উপজেলাতেই এমপির ঘনিষ্ঠ দুই ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এরা হলেন- গোদাগাড়ীতে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম এবং তানোরে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফল হায়দার রশিদ ময়না। দলের মনোনয়নের বাইরে বিদ্রোহী হিসেবে এ আসনে নির্বাচন করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বদিউজ্জামান বদি। তানোরে দলীয় প্রার্থী লুৎফর রশিদ হায়দার ময়নার বিরুদ্ধে নির্বাচন করছেন উপজেলা যুবলীগ ও কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি শরিফুল ইসলাম। মোহনপুরে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সালাম। সালাম রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের এমপি আয়েন উদ্দিনের সম্পর্কে আপন দুলাভাই। এ উপজেলায় দলীয় প্রার্থীর বাইরে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা আফজাল হোসেন বকুল। তিনি উপজেলার ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। এ ছাড়া এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন।

বাগমারায় দলীয় মনোনয়ন পেয়েছে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের এমপি প্রকৌশলী এনামুল হকের ঘনিষ্ঠ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অনিল কুমার সরকার। এ ছাড়া এখানে নির্বাচন করছেন আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল হোসেন। আর মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু। দুর্গাপুরে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম। তিনি বর্তমানে উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। এ ছাড়া এ উপজেলায় বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল মজিদ সরদার ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল কাদের ম-ল। পুঠিয়ায় দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জিএম হীরা বাচ্চু। এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। পাশের উপজেলা চারঘাটে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম। এ ছাড়া এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি টিপু সুলতান। বাঘা উপজেলায় দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লায়েব উদ্দিন লাভলু। এ ছাড়া এখানে প্রার্থী হয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেরাজুল ইসলাম। এখানে স্বতন্ত্র হিসেবে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুন। আমাদের নাটোর প্রতিনিধি জানান, নাটোরের ৬ উপজেলা নির্বাচনে  চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীসহ মোট ১৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। প্রার্থীদের মধ্যে সিংড়া উপজেলায় ৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে একজন ওয়ার্কার্স পার্টি ও একজন জাকের পার্টির প্রার্থী রয়েছেন। নাটোর সদরে ৩ প্রার্থীর একজন বিএনপির। লালপুরে ২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর একজন জাসদ ইনু সমর্থক। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সদর উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শরিফুল ইসলাম রমজান, মোস্তারুল ইসলাম আলম (বিদ্রোহী) ও গোলাম সারোয়ার (বিএনপি)। সিংড়া উপজেলায় ৫ জন প্রার্থীর মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক (আওয়ামী লীগ), আদেশ আলী (বিদ্রোহী), গোলাম কবির (বিদ্রোহী), মিজানুর রহমান (ওয়ার্কার্স পার্টি), মাহফুজুর রহমান (জাকের পার্টি)। বাগাতিপাড়ায় সেকেন্দার রহমান (আওয়ামী লীগ), আনিসুর রহমান (বিদ্রোহী) ও ওহিদুল ইসলাম গকুল (বিদ্রোহী)। লালপুরে ইছাহাক আলী (আওয়ামী লীগ), বড়াইগ্রাম উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান ডা. সিদ্দিক পাটোয়ারী ও প্রভাষক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবলু (বিদ্রোহী)। গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জাহিদুল ইসলাম (আওয়ামী লীগ), সরকার এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী (বিদ্রোহী) ও মো. আনোয়ার হোসেন (বিদ্রোহী)। এ ছাড়া এই ছয় উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৮ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৭ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। আমাদের নীলফামারী প্রতিনিধি জানান, নীলফামারীর ছয় উপজেলায় ৭০ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২১ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৯ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২০ জন রয়েছেন। দাখিলকারীদের মধ্যে নীলফামারী সদরে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন রয়েছেন। ডোমার উপজেলায় তিন পদেই ৩ জন করে এবং ডিমলা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যানের দুই পদে ৩ জন করে রয়েছেন। 

প্রথম ধাপে মনোনয়নপত্র জমা ১ হাজার ৮৮টি : প্রথম ধাপের ৮৬ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে মোট ১ হাজার ৮৮টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে একজন করে মনোনয়নপত্র দাখিল হয়েছে চার উপজেলায়। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল গতকাল। গত রাতে এ তথ্য দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা।

সর্বশেষ খবর