মঙ্গলবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

হজে সরকারিভাবে খরচ ৪ লাখ

নিজস্ব প্রতিবেদক

মন্ত্রিসভা ২০১৯ সালের হজ প্যাকেজের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে। অনুমোদিত হজ প্যাকেজ অনুযায়ী ১৪৪০ হিজরি সালে বাংলাদেশ থেকে সরকারি-বেসরকারিভাবে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ ব্যক্তি হজ পালনে সৌদি আরব যেতে পারবেন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে প্যাকেজ-১ এর আওতায় মোট চার লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা লাগবে। আর প্যাকেজ-২ এর আওতায় বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে খরচ পড়বে তিন লাখ ৪৪ হাজার টাকা। গতকাল তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে হজ প্যাকেজের অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতি ১৪৪০ হিজরি/২০১৯ এর খসড়াও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিনটি আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

বৈঠক শেষে বিকালে সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এসব তথ্য জানান। এ সময় ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আনিছুর রহমান এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রইস-উল আলম ম ল উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এবারের হজে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ ব্যক্তি যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যেতে পারবেন সাত হাজার ১৯৮ জন। বাকি এক লাখ ২০ হাজার ব্যক্তি যাবেন বেসরকারিভাবে। 

তিনি জানান, এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ-১ এর আওতায় মোট চার লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা এবং বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে প্যাকেজ-২ এর আওতায় তিন লাখ ৪৪ হাজার টাকা খরচ পড়বে। তবে এবার হজে যেতে বিমান ভাড়া কমলেও বেড়েছে প্যাকেজ মূল্য। ট্রেন ও বাড়িভাড়া বাড়ার কারণে প্যাকেজ-১ এ খরচ বেড়েছে ২০ হাজার ৫৭১ টাকা।  আর প্যাকেজ-২ এ বেড়েছে ১২ হাজার ৬৪১ টাকা। তিনি আরও জানান, এবারের হজে একটি হজ এজেন্সি সর্বোচ্চ ৩০০ জন এবং সর্বনিম্ন ১৫০ জন হজযাত্রী পাঠাতে পারবে। প্রতি ফ্লাইটে তিনজন মোয়াল্লেম থাকবেন।

মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন,  কাবা শরিফ থেকে ৫০০ মিটারের মধ্যে যাদের ভাড়া বাড়িতে রাখা হবে,  তারা প্যাকেজ-১ এর আওতায় থাকবেন। বাসা থেকে তারা কাবা শরিফ যাতায়াত করবেন ট্রেনে। প্যাকেজ-২ এর আওতায় যারা থাকবেন, তারা কাবা শরিফ থেকে দুই কিলোমিটার দূরে থাকবেন। তাদের যাতায়াত করতে হবে বাসে। তিনি জানান, দুই প্যাকেজেই বিমান ভাড়া এক লাখ ২৮ হাজার টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ১০ হাজার ১৯১ টাকা কম। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে পবিত্র হজের সম্ভাব্য তারিখ আগামী ১০ আগস্ট। যারা এ বছর হজে যাবেন, তাদের এমআরপির মেয়াদ ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত  থাকতে হবে। প্রতি হজ যাত্রীকে ৬৮ রিয়াল ব্যাংক গ্যারান্টি বাবদ জমা রাখতে হবে। তিনি আরও জানান, এর আগে দুইবার বা তার বেশি যারা হজ পালন করেছেন, তাদের অতিরিক্ত দুই হাজার ১০০ রিয়াল দিতে হবে। আর পশু কোরবানি বাবদ পাঁচ হাজার ৫২৫ সৌদি রিয়াল ইসলামি ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে জমা দিতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব নতুন জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, প্রচারের জন্য আগে শুধু ওয়েবসাইটে দেওয়া হতো। এখন একই সঙ্গে বিজ্ঞপ্তি আকারে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশসহ বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসনের কার্যালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও সরকারের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মাধ্যমে বহুল প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, আগে নিয়ম ছিল ৪৫ জন হজযাত্রীর জন্য একজন গাইড। সৌদি আরবের বাসে সাকুল্যে ৪৫ জন ধরে। একজনও বেশি নেওয়া যায় না। তাই এখন ৪৪ জনের জন্য একজন গাইড নির্ধারণ করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নতুন নীতিমালা অনুযায়ী প্রাক-নিবন্ধিত হজযাত্রীর সম্মতি ছাড়া তার স্থানে অন্য কাউকে প্রতিস্থাপন করা যাবে না। মৃত্যু ও গুরুতর অসুস্থতা ছাড়া রিপ্লেসমেন্ট হবে না, রিপ্লেসমেন্ট করতে হলে জীবিত থাকতে সম্মতি লাগবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সৌদি আরবে বাংলাদেশ হজ অফিসে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের জন্য নতুন নীতিতে বিধান রাখা হয়েছে। এখানে অনেক লোক লাগে কিন্তু লোক নেই। এজন্য সেখানে সর্বোচ্চ ষষ্ঠ গ্রেডে দুইজন এবং ১৩ থেকে ২০তম গ্রেডে ৫ জন কর্মচারী সাময়িকভাবে সংযুক্ত করার বিধান রাখা হয়েছে।। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বৈঠকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অ্যাক্ট-২০১৯ এর খসড়া, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১৯ এর খসড়া, প্রাণিকল্যাণ আইন-২০১৯ এর খসড়া এবং বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল ২০১৮ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর