শিরোনাম
শনিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

যুক্তরাষ্ট্রে ভাষা দিবস পালনে বিল ওঠাচ্ছেন গ্রেস মেং

প্রতিদিন ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রে ভাষা দিবস পালনে বিল ওঠাচ্ছেন গ্রেস মেং

মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশিদের বিশ্বস্ত বন্ধু এবং সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ‘হাউস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন কমিটির প্রভাবশালী সদস্য ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিষয়ক সাব-কমিটির সদস্য কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযথভাবে সারা আমেরিকায় উদযাপনের একটি বিল উঠাবেন ২১ ফেব্রুয়ারিতেই। এর আগেও একই আহ্বানে আরও তিনবার কংগ্রেসে বিল উঠিয়েছিলেন কিন্তু পাস হয়নি। তবে তিনি হাল ছাড়েননি। খবর এনআরবি নিউজের। নিউইয়র্ক সিটির বাংলাদেশি অধ্যুষিত কুইন্স নিয়ে গঠিত ‘কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট-৬ থেকে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এই কংগ্রেসওম্যান ইতিপূর্বের নির্বাচনে পার্টির জাতীয় কমিটির ভাইস চেয়ারপারসন হিসেবে জয়ী হয়েছেন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মায়ের ভাষার জন্য বাঙালিদের অকাতরে প্রাণ বিসর্জনের অবিস্মরণীয় ঘটনাকে সামনে রেখে বিশ্বে বিলুপ্তির পথে শত শত ভাষা রক্ষায় সংকল্প গ্রহণের অভিপ্রায়ে ইউনিসেফ দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’  ঘোষণা করেছে। এ বিল উত্থাপনের ঘোষণা দিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি গ্রেস মেং এক বিবৃতিতে এ সংবাদদাতাকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রেও ১৪৫টি ভাষা বিলুপ্তির মুখে। এগুলো আদি আমেরিকানদের  মোট ৩৮১ ভাষার অন্তর্ভুক্ত। ইউএস সেনসাস ব্যুরোর উদ্ধৃতি দিয়ে গ্রেস মেং বলেছেন, গত ৩ প্রজন্মে বিশ্বের ২০০ ভাষার বিলুপ্তি ঘটেছে। এই মুহূর্তে আরও ২২৭৯টি ভাষা বিলুপ্তির হুমকিতে রয়েছে। এ অবস্থায় গোটা বিশ্বের মতো আমেরিকাতেও ফেডারেল, অঙ্গরাজ্য এবং স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের গুরুত্ব অপরিসীম।

কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসের সদস্য গ্রেস মেং বলেছেন, ‘এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের রেজুলেশন উত্থাপনের সুযোগ পেয়ে আমি অত্যন্ত গৌরববোধ করছি। আমি কংগ্রেসে সব সহকর্মীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি এই রেজুলেশনে সমর্থন দেওয়ার জন্য। এটি পাস হলে বেশিসংখ্যক আমেরিকান দিবসটির তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য অনুধাবনে সক্ষম হবে। মাতৃভাষার ন্যূনতম অধিকারের জন্য বাঙালির রক্তদানের অবিস্মরণীয় ঘটনাবলির পথ বেয়েই এবারের মহান একুশে তথা ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’র স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘শান্তি বিনির্মাণ এবং সম্প্রীতির বন্ধন সুসংহত করাসহ সামগ্রিক উন্নয়ন-অভিযাত্রায় আদিবাসীদের ভাষার গুরুত্ব অপরিসীম’। ইউনিসেফ এই স্লোগানের ভিত্তিতে এবার দিবসটি উদযাপন করবে। মূল অনুষ্ঠান হবে প্যারিসের ফ্রাঞ্চ সিটিতে ইউনিসেফের সদর দফতরে। ২১ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত আলোচনা সভা হবে। এদিকে, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে ২০ ফেব্রুয়ারি বেলা ঠিক একটা ০১ মিনিটে (বাংলাদেশের সঙ্গে মিলিয়ে) অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করবে বাঙালি চেতনামঞ্চ এবং মুক্তধারা ফাউন্ডেশন। সেখানেও বিভিন্ন দেশের স্থায়ী প্রতিনিধি, ইউনিসেফের প্রতিনিধি এবং প্রবাসীরা শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদর্শন করবে। এদিন রাতে নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে ডাইভার্সিটি প্লাজা, ব্রুকলিনে নোয়াখালী ভবনের সামনে, চার্চ-ম্যাকডোনাল্ডে সড়কদ্বীপে, উডসাইডে কুইন্স প্যালেস এবং গুলশান টেরেসে, ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টারে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে। রাত ১২টা এক মিনিটে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদর্শনের আগে একুশের চেতনায় নানা অনুষ্ঠান হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে একুশ উপলক্ষে প্রবাস প্রজন্মের জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে জ্যাকসন হাইটসে পিএস-৬৯ এ ১৭ ফেব্রুয়ারি রবিবার বেলা ১১টা থেকে। এ উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে ঘরে ঘরে। জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনেও ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টা থেকে মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠান শুরু হবে। রাত ১২টা এক মিনিটে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হবে। এদিকে, মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে নিউইয়র্ক সিটির ফ্লাশিংয়ে কুইন্স লাইব্রেরির মিলনায়তনে আরেকটি অনুষ্ঠান হবে ২২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার অপরাহ্ণ ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশন এবং নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্স্যুলেট জেনারেলের যৌথ উদ্যোগের এ অনুষ্ঠানে সহায়তা দিচ্ছে কুইন্স লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন দেশের ভাষাপ্রেমীরা এতে অংশ নেবেন। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাঙালির রক্তদানের দিবসের সঙ্গে নিউইয়র্কের বহুজাতিক সমাজকে আরও ঘনিষ্ঠ করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আসন সীমিত বলে এ অনুষ্ঠানে যোগদানে আগ্রহীদের আগেই নিশ্চিত করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর