মঙ্গলবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

দুর্নীতি দমনে রাজনৈতিক কমিটমেন্ট জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতি দমনে রাজনৈতিক কমিটমেন্ট জরুরি

দুর্নীতি দমনে রাজনৈতিক কমিটমেন্ট জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘গত তিন বছর কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি আমার অফিসে এসে দম্ভ দেখাননি, এটা ভালো দিক।’ তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি দমনে সরকারপ্রধান জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরার ঘোষণা দিয়েছেন। আমরাও শিগগিরই নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করব।’ গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে সুশীল সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমরা লাখ লাখ অভিযোগ পাই ১০৬ নম্বরে। এর মাত্র ২ ভাগ আমার আওতায়। বাকি ৯৮ ভাগ আমরা সংশ্লিষ্ট অফিসে পাঠাই। মানি লন্ডারিংয়ের কথা বলা হয়। দুদকের দিকে আঙ্গুল তোলা হয়। কিন্তু আইন করে এটা আমাদের কাছ থেকে নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনআরবি), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও সিআইডিকে দেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে আছে কেবল সরকারি কর্মকর্তার ঘুষের টাকার মানি লন্ডারিং, যা বলতে গেলে কিছুই না।’

মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাস উদ্দিন, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সিপিডির সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, প্রধান তথ্য কমিশনার মো. জমির, সাবেক মন্ত্রী মীজানুর রহমান শেলী, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার প্রমুখ। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, বাংলাদেশের প্রধান দুঃখ দুর্নীতি। দুর্নীতির বিষয়ে হতাশা বিশাল। আর দুদকের কাছে মানুষের গগনচুম্বী প্রত্যাশা। দুদক কাজ করছে। রাষ্ট্র ধীরে ধীরে সব বিষয়ে তৈরি হচ্ছে। আস্তে আস্তে রাষ্ট্র শক্ত অবস্থানে আসছে। তবে রাতারাতি সব হয় না। এক দিনে করা কঠিন। ফরাস উদ্দিন বলেন, কমিশনের মিশনে ‘দুর্নীতির গতিপ্রকৃতি নির্ণয়’ থাকা উচিত। কাজের মধ্যে স্বচ্ছতার দৃশ্যমান মানদ  থাকবে। স্বচ্ছতা আপেক্ষিক। তাই এর একটি মানদ  থাকা উচিত। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, রাজনীতিতে দুর্নীতিবাজদের ক্ষমতায়ন দৃশ্যমান থাকলে দুর্নীতি দমন সম্ভব নয়। রাজনৈতিক পর্যায়ে আলোচিত দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তিরা মুক্ত থাকলে দুর্নীতি দমন হবে অবাস্তব চেষ্টা। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দুর্নীতি দমনকে আইনি প্রক্রিয়ায় না দেখে এটিকে উন্নয়নের প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। দুর্নীতি দমন করা না গেলে ২০৪১ সালের উন্নত দেশ বিনির্মাণ কঠিন হবে। রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকারের পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতে দুদকের তৎপরতা আরও বাড়াতে হবে। ব্যাংকিং খাত নিয়ে দুদকের তৎপরতা নিয়ে এরই মধ্যে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে।

মো. জমির বলেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে সততা ও নিষ্ঠার পরিবেশ তৈরি হবে। কোচিং বাণিজ্যের মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্র এখন পয়সা উপার্জনের ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। শিক্ষার মানের চরম অবনতি ঘটছে।

সর্বশেষ খবর