শনিবার, ২ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভোটার যত সচেতন নির্বাচন তত সুষ্ঠু : রাষ্ট্রপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোটার যত সচেতন নির্বাচন তত সুষ্ঠু : রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের হলেও নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে হলে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে ভোটারদের। ভোটার যত বেশি সচেতন হবে নির্বাচনও তত সুষ্ঠু হবে। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে নির্বাচন কমিশনের আয়োজনে ভোটার দিবসের অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থায় আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ভোটার তালিকাভুক্তকরণে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছে। তালিকাভুক্তকরণের সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কেও সচেতন করে তুলতে হবে। এ প্রেক্ষাপটে জাতীয় ভোটার দিবস পালন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ দিবসটিকে আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে তৃণমূল পর্যায়ে যথাযথভাবে পালন করা হলে দেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক সাড়া পড়বে। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করব, দেশের সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এ লক্ষ্যে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। তাহলেই দেশে দোষারোপের রাজনীতির পরিবর্তে শান্তি, সৌহার্দ্য, সহমর্মিতা ও পরমতসহিষ্ণুতার রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে উঠবে। গণতন্ত্র ও উন্নয়ন এগিয়ে যাবে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে। উন্নয়নের জন্য দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্বের বিকল্প নেই মন্তব্য করে আবদুল হামিদ বলেন, তৃণমূল থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচিত করতে হবে। আর নেতৃত্ব নির্বাচনের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি হচ্ছে ভোট। বিদেশে কর্মরত বা বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটার করে নিয়ে সংশ্লিষ্ট দেশেই ভোটদানের সক্রিয় ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) তাগাদা দিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি লোক প্রবাসে অবস্থান করে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। কিন্তু এদের অনেকেরই জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই। প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশিরা যাতে এনআইডি পেতে পারেন, এ জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। এটি সম্ভব হলে প্রবাসীদের নাগরিকত্বসহ তাদের রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা পেতে সহজ হবে। এ ছাড়া প্রবাসীদের ভোটাধিকারের দাবিও ক্রমে জোরালো হচ্ছে। প্রবাসে অবস্থান করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনসহ পৃথিবীর প্রায় ১২০টি দেশের প্রবাসী নাগরিকরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। প্রবাসী বাংলাদেশিরা যাতে এনআইডিসহ ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পান, সে বিষয়টিও সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করতে হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে সভায় প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মো. সাদিক, সাবেক সিইসি রকিবউদ্দীন আহমদ, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, বর্তমান চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রি. জে. সাইদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কে এম নূরুল হুদা তার বক্তব্যে প্রবাসীদের ভোটার করার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, প্রবাসীদের বিদেশে ভোটার করে নিয়ে সেখানেই জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে কী করে তাদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায়, সে উদ্যোগও নেওয়া হবে। বিকাল ৪টায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সভা শুরু হয়। এরপর পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলো থেকে পাঠ করা হয়। সভায় রাষ্ট্রপতির হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন সিইসি। তারপর সিইকেও সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন রাষ্ট্রপতি। মাঝে ছয়জন নাগরিকের হাতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ স্মার্টকার্ড তুলে দেন।

সর্বশেষ খবর