শনিবার, ২ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভোটার দিবস পালনের নামে তামাশা চলছে : মোশাররফ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় ভোটার দিবস পালনের নামে ‘ভোটাধিকার হরণকারী সরকার জনগণের সঙ্গে তামাশা করছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের পর বৃহস্পতিবার ঢাকা সিটি উত্তরের ভোট হলো। দেশের জনগণ একাদশ জাতীয় সংসদে এ সরকারের প্রশাসনের যে চেহারা দেখেছে তাতে ভোটের প্রতি তাদের আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। প্রতিবাদ স্বরূপ সিটির উপ-নির্বাচনে তারা ভোট কেন্দ্রে যায়নি। এতে প্রমাণিত হলো এ সরকার ও এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে আর কোনো নির্বাচনকে জনগণ বিশ্বাস করে না।’ গতকাল সকাল ১১টায় শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্থায়ী কমিটির সদস্য এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সেখানে বাংলাদেশ সরকার ‘ভোটার দিবস’ পালন করছে। ভোটার যেখানে ভোট দিতে পারে না সেখানে আজকে স্লোগান হচ্ছেÑ ভোটার হোন, ভোট দিন। এটা অত্যন্ত হাস্যপ্রদ। এ সরকারই জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে এই দিবস পালন করে আজকে এটাকে একটা হাস্যপ্রদ বিষয় করেছে, একটা তামাশা সৃষ্টি করেছে।’ এর আগে মৎস্যজীবী দলের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাব ও সদস্য সচিব আবদুর রহিমের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন ড. খন্দকার মোশাররফ। এ সময়ে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনসহ মৎস্যজীবী দলের নাদিম চৌধুরী, সেলিম মিয়া, জাকির হোসেনে খানসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপ-নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আমরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে উপ-নির্বাচনে দেখলাম ভোটাররা কেন্দ্রে যায়নি, কেউ ভোট দিতে দেখেনি। যারা এই ভোট নেওয়ার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন তারাও আশ্চর্যান্বিত হয়েছেন কেন ভোটার নেই। শুধু যেসব নতুন ওয়ার্ড সৃষ্টি হয়েছিল সেখানেই কিছু ভোটার ভোট দিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘এ উপনির্বাচনের ভোটের ফলাফলে দেখা গেল আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ৮ লাখ ৩৯ হাজার ভোট পেয়েছেন। এ ভোট কোথায় থেকে এলো? যেভাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের ভোট দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি, ভোট হয়েই গিয়েছিল এবং এভাবে ৯০ শতাংশের বেশি ভোট তারা (ক্ষমতাসীনরা) দিয়ে দিয়েছিল। ঠিক একই প্রক্রিয়ায় কালকেও এমনিভাবেই ভোট পড়েছে প্রায় ৩১ শতাংশ। তাও এই সরকার তাদের সিস্টেমের মাধ্যমে এটা সম্পন্ন করেছে।’ ড. মোশাররফ বলেন, ‘এটা পরিষ্কার যে. জনগণ এ ভোট প্রত্যাখ্যান করেছে। এ মেয়র উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টির যিনি প্রার্থী ছিলেন তিনিই বলেছেন, প্রায় ৪০টি কেন্দ্রে গেছেন কিন্তু তিনি কোনো ভোটার দেখেননি, শতকরা ৫ ভাগ ভোটও পড়েনি। এটাই সত্যি।’ এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দলের করণীয় কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, যারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে, ভোটের অধিকার হরণ করেছে তারা কখনো বাংলাদেশে জনগণকে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারে না। আমরা বলতে চাই, বিএনপির সামনে আজকে বিরাট চ্যালেঞ্জ, বিরাট সুযোগ। এই আওয়ামী লীগ আর বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে পারবে না। বিএনপিকেই এ দেশের মানুষের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে এবং ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

সর্বশেষ খবর