রবিবার, ৩ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

কাউকে দুর্নীতি করতে দেব না

রুহুল আমিন রাসেল

কাউকে দুর্নীতি করতে দেব না

আতিকুল ইসলাম

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন-ডিএনসিসির নবনির্বাচিত মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, কাউকে দুর্নীতি করতে দেব না। কেউ দুর্নীতির সুযোগ না পেলে নগরবাসী প্রত্যাশিত সেবা পাবেন।

গত শুক্রবার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে টেলিফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। আতিকুল ইসলাম বলেন, ডিএনসিসির সব পর্যায়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতি বহাল থাকবে। ঢাকাকে ঢেলে সাজাতে নিজের স্বপ্নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই নগরকে একটি সুস্থ, সচল ও আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এ জন্য প্রয়োজন নির্মল বাতাস ফিরিয়ে আনা। খেলাধুলা ও বিনোদনের জন্য খেলার মাঠ ও পার্ক তৈরি, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বহুতল ও ভূগর্ভস্থ পার্কিং কমপ্লেক্স নির্মাণ, জলাশয়-জলপথ দখলমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখা, ভেজালমুক্ত কাঁচাবাজারের জন্য প্রতিটি এলাকায় ফার্মার্স মার্কেট গঠন ও পরিচালনা, টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা হবে আমার প্রধান কাজ। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের চলমান কাজগুলো সম্পন্ন করাসহ বিশদ কিছু নতুন পরিকল্পনা গুরুত্ব পাবে আমার নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী। আতিকুল ইসলাম বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তিতে ট্রাফিক সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ, অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিক সমস্যা সরাসরি প্রেরণ ও সমাধান, সব নগর পরিবহন ব্যবস্থার জন্য একটি ডিজিটাল-সমন্বিত ই-টিকিটিং সেবা চালু করা হবে। নাগরিক সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি ডিজিটাল আরও নানা পদক্ষেপ থাকবে। এ ছাড়া আধুনিক ঢাকা গড়ার জন্য নগরীর বর্ষাকালীন জলাবদ্ধতা নিরসন, পরিবেশবান্ধব সড়কবাতি স্থাপন, ডিজিটাল ই-সার্ভিস চালু, দুর্নীতি রোধে অ্যাপভিত্তিক তথ্য প্রদান, সীমিত আয়ের মানুষের জন্য আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, রাস্তাঘাটের আধুনিকায়ন, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম উৎসাহিত করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে নবনির্বাচিত মেয়র : এদিকে নবনির্বাচিত এই মেয়র গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে আগামী এক বছরের জন্য নিজের কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। উত্তরায় নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ডিএনসিসিকে আলোকিত ঢাকায় পরিণত করব। পরিবেশ দূষণ রোধ করব। সব ধরনের কর ও লেনদেন ডিজিটালাইজড ও অটোমেশন করা হবে। বৃক্ষ রোপণ, নগর বনায়ন, নগর কৃষির বিস্তার ও বিকাশ ঘটানো হবে। প্রতিটি মহল্লায় উন্মুক্ত পার্ক ও খেলার মাঠ তৈরি করা হবে। ফুটপাথ নাগরিকদের কাছে ফিরিয়ে দেব। সড়ক নিরাপত্তা ও পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবই। তিনি বলেন, নতুন অন্তর্ভুক্ত এলাকায় উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের শুরু করা কাজগুলোকে সম্পন্ন করতে সর্বাত্মক কার্যক্রম গ্রহণ করব। আতিকুল ইসলাম বলেন, সিটি নির্বাচনে এই বিজয় শুধু আমার নয়, নগরবাসীরও। এই জয় ঢাকার নতুন দিনের পথচলার প্রথম পদক্ষেপ। আমাদের গন্তব্য একটাই, একটি সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়া। এক্ষেত্রে আমার প্রথম শর্ত আধুনিক ঢাকা গড়তে সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে যেতে হবে। দ্বিতীয় শর্ত, নাগরিক হিসেবে সবার যেমন অধিকার রয়েছে, তেমনি দায়বদ্ধতাও রয়েছে। এই দায়বদ্ধতাকে ভালোবাসায় রূপান্তর করতে হবে। তৃতীয় শর্ত, উন্নয়নের যাত্রায় উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও দায়িত্বশীলদের সমন্বয় প্রয়োজন। দল মত নির্বিশেষে সব রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সমাজের সবাইকে পাশে দরকার। নগরবাসীর উদ্দেশে মেয়র বলেন, ছোট ছোট লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে না পারলে বড় বিজয়গুলো আমাদের হাতের নাগালের বাইরে রয়ে যাবে। আমাদের সবার সামান্য সচেতনতা ও সহযোগিতা নগরীর উন্নয়নের জন্য দরকার। যে যার জায়গা থেকে ন্যূনতম সহযোগিতা করলেই ঢাকাকে সুন্দর, সচল ও আধুনিক শহরে পরিণত করতে পারব। তিনি বলেন, আপনারা প্লাস্টিকের পানির বোতল রাস্তায় ছুড়ে না ফেলে ময়লার ঝুড়িতে ফেলুন। আমাদের একটু সচেতনতায় অনেকখানি বদলে যাবে বর্ষাকালীন জলাবদ্ধতার সমস্যা। ছোট ছোট নাগরিক দায়বদ্ধতার পরিচয় দিয়ে আমরা বড় বড় অর্জন ছিনিয়ে আনতে পারি। তার মতে, সিটি করপোরেশনের নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে রাস্তাঘাট খুব সরু। আপনারা কিছু কিছু জায়গা ছাড়লে সেখানেও প্রশস্ত রাস্তা করা সম্ভব। আমরা একটি পরিকল্পনার মধ্যেই উন্নয়ন করতে চাই। তিনি বলেন, আমি রাজনৈতিক প্রভাবের বাইরে থেকে নগরীর উন্নয়নমূলক কাজ করব। মশা নিধনের জন্য কার্যক্রম শুরু হবে।

সর্বশেষ খবর