মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভারত-পাকিস্তান এখন কূটনৈতিক লড়াইয়ে

যুদ্ধবিমান ব্যবহারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশ্ন

প্রতিদিন ডেস্ক

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ-উত্তেজনা কমে এলেও দুই দেশই এখন কূটনৈতিক লড়াইয়ে ব্যস্ত। আন্তর্জাতিক মহলে নিজেদের অবস্থানকে সঠিক প্রমাণ করতে চলছে নানামুখী তৎপরতা। ওআইসিতে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছে দুই দেশ। আগামীতে ভারত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে পাকিস্তানের কর্মকাণ্ড নিয়ে আরও সোচ্চার  হবে বলে দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে। পরিস্থিতির দিকে দৃষ্টি রাখছে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া চীনসহ পরাশক্তি দেশগুলোও। নিয়ম ভেঙে পাকিস্তান এফ-১৬ যুদ্ধ বিমান ব্যবহার করেছে কি না জানতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

পাকিস্তান এফ-১৬ ব্যবহার করলে তা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির করা চুক্তির লংঘন হতে পারে বলে রবিবার মন্তব্য করেছে ইসলামাবাদের মার্কিন দূতাবাস। গত সপ্তাহে পাকিস্তান ও ভারত উভয় দেশ পরস্পরের ভূখণ্ডে বিমান থেকে বোমাবর্ষণ করে। এ সময় কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা এলাকার আকাশে পরস্পরের মধ্যে খ  বিমানযুদ্ধের ঘটনাও ঘটে। ওই যুদ্ধে কাশ্মীরের পাকিস্তানি নিয়ন্ত্রিত অংশে ভারতের একটি জঙ্গি বিমান ভূপাতিত হয় এবং বিমানটির পাইলট পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে বন্দী হন। ওই ঘটনায় পাকিস্তান এফ-১৬ জঙ্গি বিমান ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ করে ভারত। বুধবার পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র ভারতীয় অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে। ‘শান্তির বার্তা দিতে’ শুক্রবার আটক ভারতীয় পাইলটকে মুক্তি দিয়ে ভারতের কাছে হস্তান্তর করে পাকিস্তান। এরপর থেকে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা হ্রাস পায়, কিন্তু সীমান্তে গোলাবিনিময় অব্যাহত থাকায় উভয়পক্ষই উচ্চ সতর্কাবস্থা বজায় রাখে। এর মধ্যেই রবিবার ইসলামাবাদের মার্কিন দূতাবাস বলেছে, ভারতীয় পাইলটকে নামাতে পাকিস্তান এফ-১৬ জঙ্গি বিমান ব্যবহার করেছে বলে যেসব প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে সেগুলো খতিয়ে দেখছে তারা, এসব প্রতিবেদন সত্যি হলে ওয়াশিংটনের সঙ্গে ইসলামাবাদের করা সামরিক ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তির লংঘন হতে পারে যেখানে পাকিস্তান কোন কোন ক্ষেত্রে এসব বিমান ব্যবহার করতে পারবে তার নির্দেশনা দেওয়া আছে। মার্কিন দূতাবাসের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘এসব প্রতিবেদন দেখেছি এবং এ সংক্রান্ত আরও তথ্য চেয়েছি আমরা। প্রতিরক্ষা চুক্তির ধারাগুলোর অপব্যবহার সংক্রান্ত সব অভিযোগ আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি।’ পাকিস্তান এফ-১৬ ব্যবহারের কথা অস্বীকার করলেও ভারতীয় মিগ-২১ যুদ্ধ বিমান ভূপাতিত করতে তারা কী ধরনের জঙ্গি বিমান ব্যবহার করেছে তা নিশ্চিত করেনি। তবে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী তাদের দেশে সংযোজন করা চীনা নকশার জেএফ-১৭ ফাইটার জঙ্গি বিমানও ব্যবহার করে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাকিস্তানের সামরিক রসদ কেনার ইতিহাস দীর্ঘ। আর ২০০১ সালের পর ইসলামাবাদ যখন ওয়াশিংটনের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের অংশীদার হয়ে ওঠে তখন তাদের জন্য কেনার প্রক্রিয়া অনেক সহজ হয়ে যায়।

ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠার আগ পর্যন্ত পাকিস্তান কয়েক ধাপে মার্কিন লকহিড মার্টিন করপোরেশনের তৈরি অনেকগুলো এফ-১৬ জঙ্গি বিমান কেনে। কিন্তু সম্পর্ক তিক্ত হওয়ার পর ২০১৬ সালে পাকিস্তানের কাছে সমরাস্ত্র বিক্রির পরিমাণ হ্রাস করে যুক্তরাষ্ট্র। এফ-১৬ জঙ্গি বিমান ব্যবহার সংক্রান্ত কী ধরনের বিধিনিষেধ পাকিস্তানের ওপর আরোপ করা আছে তা পরিষ্কার নয় বলে জানিয়েছে রয়টার্স। এদিকে মার্কিন নিউজ চ্যানেল সিএনএন জানিয়েছে, পাকিস্তান এফ-১৬ নয়, চীনা নকশায় এবং পাকিস্তান-চীন যৌথভাবে জেএফ-১৭ বিমান দিয়ে ভারতের বিমান ধ্বংস করেছে।

সর্বশেষ খবর