মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

৫ মার্চও ছিল ঢাকার রাজপথ রক্তে রঞ্জিত

তানিয়া তুষ্টি

৫ মার্চও ছিল ঢাকার রাজপথ রক্তে রঞ্জিত

কদিন ধরেই পরিস্থিতি জটিল থেকে আরও জটিল হচ্ছে। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি। সংকট সমাধানের পথ সংকুচিত হচ্ছে, বাঙালির পিঠ তখন দেয়ালে ঠেকে যাওয়া অবস্থা। পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর লে. জে. সাহেবজাদা ইয়াকুব খান ঢাকায় আর সৈন্য না পাঠানোর অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে বলেন, ইয়াহিয়াকে ঢাকায় এসে আলোচনার ব্যবস্থা করতে। ইয়াহিয়া প্রথমত রাজি হলেও পরে ১৯৭১ সালের ৫ মার্চ ঢাকায় আসতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষুব্ধ, বিরক্ত সাহেবজাদা ইয়াকুব দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দিয়ে পদত্যাগপত্র পাঠান। অথচ তার পদত্যাগ বার্তা পাঠানোর আগেই সেনাবাহিনীতে ‘কসাই’ নামে পরিচিত জেনারেল টিক্কা খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।

বিগত কয়েকদিনের মতোই ৫ মার্চ রাজপথ একইভাবে রক্তে রঞ্জিত ছিল। এইদিনে শুধু চট্টগ্রামেই নিহত হয় ২৩৮ জন। টঙ্গীতে সেনাবাহিনীর গুলিতে শ্রমিক নিহত হয়। এই ঘটনায় শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে একটি কাঠের ব্রিজ পুড়িয়ে দেয়। বড় বড় গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করে। টঙ্গীতে নিহত শ্রমিকদের লাশ নিয়ে রাজধানীতে ছাত্রলীগ বিশাল মিছিল করে। এদিন দেশের বিভিন্ন জেলায় স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। সামরিক কর্মকর্তা আসগর খান করাচী থেকে ঢাকায় এসে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করেন। তিনি ভবিষ্যতে কী হতে পারে বা কী হতে যাচ্ছে জানতে চান বঙ্গবন্ধুর কাছে। বঙ্গবন্ধুর পরিষ্কার জবাব, ‘ইয়াহিয়া ও ভুট্টোর নির্দেশে সামরিক অভিযান চালানো হবে, আমাকে গ্রেফতার অথবা হত্যা করা হবে এবং পাকিস্তান টিকবে না।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দিন আহমদ তার বিবৃতিতে দ্রুত এই ঘৃণ্য গণহত্যা বন্ধের দাবি জানান। ঢাকার লেখক-বুদ্ধিজীবীরা শহীদ মিনারে ড. আহমদ শরীফের নেতৃত্বে স্বাধীনতার শপথ গ্রহণ করেন। ছাত্রলীগ নেতারা লাঠিমিছিল বের করেন ঢাকার রাজপথে।

সর্বশেষ খবর