শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

৭ মার্চের ভাষণ ছিল গেরিলা যুদ্ধের রূপরেখা : প্রধানমন্ত্রী

পুরান ঢাকায় রাসায়নিক গুদাম থাকবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

৭ মার্চের ভাষণ ছিল গেরিলা যুদ্ধের রূপরেখা : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল ৭ মার্চ উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন -পিআইডি

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ শুধু বাংলাদেশি মুক্তিকামী জনগণ নয়, সারা বিশ্বের মুক্তিকামী জনগণের প্রেরণা হিসেবে যুগ যুগ ধরে টিকে রইবে। আর যারা ৭ মার্চের ভাষণকে নিষিদ্ধ করেছিল তারা ধীরে ধীরে আঁস্তাকুড়ের দিকে চলে যাবে, নিঃশেষ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ ছিল একটি গেরিলা যুদ্ধের রূপরেখা।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে গতকাল বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যুগের পর যুগ বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ পুরো জাতিকে এখনো নতুন করে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর দীর্ঘ ২১টি বছর এ ভাষণ বাজানো নিষিদ্ধ ছিল। যেহেতু পাকিস্তানি হানাদারদের এ ভাষণটি পছন্দ নয়, সেজন্য ক্ষমতা দখল করে এ ভাষণটি বাজানো নিষিদ্ধ করেছিল ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমানরা। পরবর্তী সামরিক স্বৈরাচাররাও একই পথ অনুসরণ করে। রণাঙ্গনের স্লোগান জয় বাংলাকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু সত্যকে কখনো অস্বীকার করে মুছে ফেলা যায় না। তিনি বলেন, জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণের প্রতিটি লাইন, প্রতিটি শব্দ একেকটি কোটেশন হয়। ভাষণের প্রতিটি লাইন, শব্দ বাঙালি জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ৪৮ বছর হয়ে গেল বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণের আবেদন এখনো এতটুকু কমে যায়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা  ’৪৮ থেকে ’৭১ পর্যন্ত পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা রিপোর্ট নিয়ে করা পাণ্ডুলিপিগুলো পড়লেই বুঝতে পারবেন একটি দেশের স্বাধীনতার জন্য জাতির পিতা কত ত্যাগ করেছেন। কত কষ্ট করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনায় অংশ নেন সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক কর্নেল (অব.) সাজ্জাদ জহির প্রমুখ। কবিতা আবৃত্তি করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। রাসায়নিক গুদাম সরিয়ে দেব : যত বাধাই আসুক পুরান ঢাকায় কোনো রাসায়নিকের গুদাম থাকবে না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সকালে তেজগাঁও নিজ কার্যালয়ে ঢাকা উত্তর সিটির নবনির্বাচিত মেয়র ও দুই সিটির নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের শপথ শেষে বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় নতুন প্রতিনিধিদের শপথের মর্যাদা রক্ষা করে জনকল্যাণে কাজ করার নির্দেশনা দেন তিনি। স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে নিজস্ব আয় বাড়ানোরও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। সত্য কেউ মুছে ফেলতে পারে  না : প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা ৭ মার্চ ভাষণ বাজানো নিষিদ্ধ করেছিল, তারা কত অন্ধকার যুগে বাস করত তা আজ প্রমাণ হয়েছে। তারা এ ভাষণের মূল্য বুঝতে পারেনি, এটা যে দেশের জন্য কত মূল্যবান সম্পদ তা বুঝতে পারেনি। কিন্তু ইতিহাসকে কেউ মুছে ফেলতে পারে না। সত্যকে  বেশি দিন ঢেকে রাখা যায় না, সেটিও আজ প্রমাণিত হয়েছে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল সংসদের বৈঠকে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে এক অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

সর্বশেষ খবর