বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
আইনশৃঙ্খলা মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক

রোহিঙ্গা বরাদ্দের ১৫০ কোটি এনজিওদের হোটেল ভাড়ায় খরচ

নিজস্ব প্রতিবেদক

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বিদেশি এনজিওগুলোর বরাদ্দের চার ভাগের তিন ভাগই বাংলাদেশে আসা তাদের কর্মীদের জন্য ব্যয় করা হচ্ছে। গত সেপ্টেম্বর থেকে এই ছয় মাসেই এনজিওগুলোর কর্মকর্তাদের হোটেল বিল বাবদ খরচ করা হয়েছে ১৫০ কোটি টাকা। আর তাদের জন্য ফ্ল্যাট ভাড়ায় ব্যয় হয়েছে আট কোটি টাকা। গতকাল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আইন-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান কমিটির সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হক। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে আমরা লক্ষ করেছি, সেখানে কিছু এনজিও আছে, যারা ‘‘ইল মোটিভ’’ নিয়ে কাজ করে। ধারণা করা হচ্ছে অনেক এনজিওই এই কাজ করছে। আমাদের গোয়েন্দা রিপোর্টেও সেগুলো লক্ষ করছি।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা শুনলে অবাক হবেন, এনজিগুলো সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত হোটেল বিল দিয়েছে দেড়শ কোটি টাকার বেশি, আর ফ্ল্যাট বাড়ির ভাড়া দিয়েছে আট কোটি টাকার বেশি।’ এসব এনজিওর অনেকগুলোর কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি।

তিনি বলেন, এনজিওগুলো বিদেশ থেকে যে টাকা আনে এর ২৫ শতাংশও ভুক্তভোগী রোহিঙ্গাদের জন্য খরচ হয় না। ৭৫ শতাংশ খরচ করা হয় দেখাশোনা করার জন্য যারা আসে তাদের জন্য। এ বিষয়টি খুব দুঃখজনক। তিনি বলেন, ‘এটি আরও খতিয়ে দেখার জন্য গোয়েন্দা বাহিনীকে বলেছি। বাস্তব অবস্থা কী তা বের করতে বলেছি। যে অভিযোগ পেয়েছি তা যথাযথ নিরূপণের জন্য তাদের অনুরোধ করা হয়েছে।’ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গাদের দ্রুত ভাসানচরে স্থানান্তরে সরকারের সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে। ওই চরে রোহিঙ্গাদের নেওয়া নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকারের দায়িত্ব কী? সরকারের দায়িত্ব তাদের (রোহিঙ্গা) আশ্রয় দেওয়া, তাদের নিরাপত্তা দেওয়া, খাবার দেওয়া, অন্য মানবিক দিকগুলো দেওয়া। তাদের কোথায় রাখব এটা বিদেশের ‘‘কনসার্নড’’ হওয়ার কথা নয়। তাদের কনসার্নড হওয়ার বিষয় রোহিঙ্গারা যেন মানবেতর জীবনযাপন না করে, লেখাপড়ার, চিকিৎসার সুযোগ পায়। এ বিষয়ে তারা কনসার্নড থাকলে সরকার বিবেচনায় নেবে। কিন্তু রোহিঙ্গারা কোথায় থাকবে সেটি বাংলাদেশের নিজস্ব ব্যাপার।’

কবে নাগাদ রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর শুরু হচ্ছে জানতে চাইলে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমাদের সরকার সাধ্যমতো চেষ্টা করছে। সেখানে আমাদের প্রস্তুতিও সম্পন্ন। নেওয়ার মতো উপযোগী ব্যবস্থা সম্পন্ন হয়েছে। কাজেই যে কোনো সময় আমরা নিতে পারি।’ আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা।

সর্বশেষ খবর