শিরোনাম
শনিবার, ৩০ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

বনানীর সেই ভবন যেন ধ্বংসযজ্ঞ

উদ্ধার অভিযান শেষ, পুড়ে গেছে তিনটি তলার সব

নিজস্ব প্রতিবেদক

বনানীর সেই ভবন যেন ধ্বংসযজ্ঞ

ছুটির দিনের ভোরে বনানীর কামাল আতাতুর্ক সড়কের অগ্নিকা  সংঘটিত এফআর টাওয়ারে তখনো উদ্ধার কাজে ব্যস্ত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তবে বাতাসে ছিল পোড়া গন্ধ। ২৩ তলা ভবনটির আশপাশে ছোট ছোট জটলা। উৎসুক চোখে নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা। অগ্নিকাে  সেই ভবন এখন ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে। অনেক মানুষের মৃত্যু ও আহাজারির নির্মম সাক্ষী এটি। প্রতিটি তলায় অনুসন্ধান শেষে ঘটনার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করে ফায়ার সার্ভিস। ভবনের ৭ম থেকে ১১তম তলা পর্যন্ত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে পুড়ে গেছে ৭ম,    ৮ম ও ৯ম তলার সব কিছু। ধারণা করা হচ্ছে, ভবনের ৭ম তলা থেকেই আগুন লাগে। গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে ফায়ার সার্ভিস ভবনটিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কাছে হস্তান্তর করে। এরপর নিজেদের তত্ত্বাবধানে নেয় বনানী থানা পুলিশ। উদ্ধার অভিযান শেষে রাজধানীর বনানীতে এফআর টাওয়ারের আগুনে ২৫ জন নিহত এবং ৭৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। উদ্ধার ও অনুসন্ধান অভিযান শেষে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানালেন, ভবনের এক্সিটওয়ে ছিল। তবে প্রতিটি তলায় সেগুলো লক করা ছিল। যদি সেগুলো খোলা থাকত তাহলে প্রাণহানির সংখ্যা আরও কম হতে পারত।  ভবনটি বুঝে নেওয়ার পর বেলা ৩টার দিকে প্রতিটি তলায় একজন এসআই, ওই তলায় থাকা অফিসের দুজন করে প্রতিনিধি, ফায়ার সার্ভিসের দুজন এবং ডিএনসিসির দুজন করে কর্মী ভবনের ভিতরে প্রবেশ করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের সিদ্ধান্ত হয়। বিকাল পৌনে ৫টার দিকে মোট ২২ জন এসআই এবং এএসআই পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে ও ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় ভবনটিতে প্রবেশ করেন সেখানে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মোট ৫৮ জন প্রতিনিধি। এ সময় তাদের সেইফটি ভেস্ট পরানো হয়। তাদের প্রাথমিক নির্দেশনায় বলা হয়, অগ্নিকাে  ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটিতে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ভিতরে যাবেন। তারা গিয়ে নিজ নিজ অফিসের অবস্থা দেখে আসবেন। এ ছাড়া অফিসে যদি মূল্যবান কোনো জিনিসপত্র ও টাকা-পয়সা থাকে, তা সঙ্গে করে নিয়ে আসবেন। অথবা গুছিয়ে নিরাপদে রেখে আসবেন। নিজ নিজ ফ্লোর ঘুরে এসে রাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা জানান, ফ্লোরগুলো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যাওয়ায় ডাস্টে ভরে গেছে। খসে পড়েছে সিলিং। ছোট ছোট টুকরো হয়ে ভেঙে গেছে জানালার কাচ। যেন এক মৃত্যুপুরী । অথচ এক দিন আগে এখানেই ছিল ঝকঝকে করপোরেট অফিস। মুহূর্তেই পাল্টে গেছে সব চিত্র। সব ধুয়েমুছে পরিষ্কার ও সংস্কার করা ছাড়া ভবনের কোনো প্রতিষ্ঠানই সহসা তাদের কাজ শুরু করতে পারবে না। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের কেউ কেউ ভিতরে গিয়ে অক্ষত থাকা তাদের প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র নিয়ে আসেন। পুলিশের পক্ষ থেকে সেগুলো নথিভুক্ত করা হয়। এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাে র রেশ না কাটতেই দুপুরে বনানীর আরেকটি বাড়িতে অগ্নিকাণ্ড হয়। বনানীর ২৩ নম্বর রোডের ৪৩ নম্বর বাড়িতে আগুন লাগার পর স্বল্প সময়ের মধ্যে তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয় বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস সূত্র। এফআর টাওয়ারে বৃহস্পতিবার অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে মরার হাত থেকে বাঁচতে অনেকে লাফিয়ে পড়েন। কেউ কেউ বিভিন্ন তলার কাচ ভেঙে ভবন থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় বেশির ভাগই ভবনের ভিতরে আটকা পড়ে আগুনের কালো ধোঁয়ায় মারা যান। উদ্ধার অভিযান শেষে ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহজাহান সিকদার সাংবাদিকদের জানান, প্রথম দিন রাত ১২টা পর্যন্ত চলে তাদের উদ্ধার অভিযান। গতকাল ভোর ৬টা থেকে দ্বিতীয় দফার অভিযান শুরু হয়। ৮২ জন ফায়ার কর্মী ৯টি দলে ভাগ হয়ে বেজমেন্ট-২ ও ১ থেকে টপ ফ্লোর পর্যন্ত চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় আগুনকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে আহত কিংবা নিহত কাউকে পাওয়া যায়নি। ভবনটিতে অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা থাকলেও তা ব্যবহার উপযোগী ছিল না। আর যেটি এক্সিটওয়ে রাখা ছিল তাও আঁটোসাঁটো। পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোশতাক আহমেদ বলেন, ২৫ জনের লাশ আমরা শনাক্ত করেছি। এর মধ্যে ২৪ জনের লাশ তাদের স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহত শ্রীলঙ্কান নাগরিকের লাশটি সিএমএইচে রাখা হয়েছে। উদ্ধার ও অনুসন্ধান অভিযানে থাকা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, ভবনের তিনটি লিফট ছিল। অনুসন্ধানকালে দুটি খোলা ছিল, আর একটি বন্ধ ছিল। বন্ধ লিফটের দরজা ভেঙে দেখা যায় সেখানে কেউ আটকা পড়া ছিল না। আর উপরের ফ্লোরগুলো ছিল পুরো অন্ধকারাচ্ছন্ন। প্রতিটি ফ্লোরই বিভিন্ন ধরনের অফিসের। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, অফিসের অসংখ্য কাগজপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে, অনেক ল্যাপটপ যেখানে সেখানে খোলা অবস্থায় পড়ে আছে। কোথাও কোথাও টাকা-পয়সা এবং মানিব্যাগ পড়ে আছে। প্রায় সব ফ্লোরই ভুতুড়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়ে আছে। ‘সাফোকেশন’ অর্থাৎ দম বন্ধ হয়ে যাওয়া থেকে বাঁচতে উপরের দিকের ফ্লোরগুলোর গ্লাস ভেঙে ফেলা হয়েছে। ল ভ  হয়ে গেছে ফ্লোরগুলোর আসবাবপত্র ও সরঞ্জাম। মোস্তফা নামে এফআর টাওয়ারের এক সিকিউরিটি গার্ড এ প্রতিবেদককে জানান, আগুন লাগার খবর পেয়েই তিনি লিফটে উঠে ১৫ তলায় চলে যান। সেখানে যাওয়ার পরই তিনি আটক কয়েকজনকে ছাদে পাঠিয়ে দেন। যখন আগুনে পানি মারা হতো তখন ব্যাপক গতিতে ধোঁয়া ভিতরের দিকে প্রবেশ করে। কালো ধোঁয়ায় কাউকে দেখার কোনো উপায় ছিল না এবং বের হওয়ারও রাস্তা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে ভিতরে যারা আটকে ছিলেন তাদের মুখ আগুনের কালো ধোঁয়ায় সিদ্ধ হয়ে যায়। পরে তারা কয়েকজন ভবনটির ছাদে গিয়ে পাশের ভবনে এসে নিচে নামেন। ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, তারা মনে করছেন শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। তবে এটা তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। অভিযোগ পাওয়া যায়, বনানীর এফআর ভবনটি রাজউকের অনুমোদিত নকশা লঙ্ঘন করে তৈরি করা। আগুন লাগার পরই ওই ভবনের কাগজপত্র যাচাই করে দেখে রাজউক কর্তৃপক্ষ। এরপর সংস্থাটি জানায়, ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর এটিকে একটি ১৮ তলা ভবন হিসেবে নকশা অনুমোদন করা হয়। কিন্তু ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে ২৩ তলা। এফআর টাওয়ারের মালিকপক্ষ ২০০৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রাজউকের কাছে আরেকটি নকশা পেশ করে, যার সঙ্গে রাজউকে সংরক্ষিত নকশার কোনো মিল নেই। এসব বিষয়ে জানতে এফআর টাওয়ারের মালিক ইঞ্জিনিয়ার এস এম এইচ আই ফারুকের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তা ধরেননি। তবে তার ম্যানেজার কামাল হোসেন জানান, ইঞ্জিনিয়ার ফারুক জমিসহ ভবনের বেশিরভাগ অংশের মালিক হলেও মোট মালিকের সংখ্যা ২৪ জন। তারা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো ফ্লোরের মালিক। প্রতিটি ফ্লোর ৬ হাজার স্কয়ার ফুটের। আগুনে যাদের প্রাণহানি : নিহত ২৫ জনের নাম-ঠিকানাসহ একটি তালিকা প্রকাশ করেছে বনানী থানা পুলিশ। এর মধ্যে ঢামেক মর্গ থেকে ১০ জনের, কুর্মিটোলা হাসপাতাল থেকে ৬ জনের, সিএমএইচ থেকে ৪ জনের, ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে ৩ জনের এবং অ্যাপোলো হসপিটাল এবং বনানী ক্লিনিক থেকে একজনের লাশ হস্তান্তর করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহতরা হলেনÑ সৈয়দা আমিনা ইয়াসমিন, মনির হোসেন সর্দার, মাকসুদুর রহমান, তার স্ত্রী রুমকি আক্তার, আবদুল্লাহ আল মামুন, মোস্তাফিজুর রহমান, মিজানুর রহমান, ফ্লোরিডা খানম পলি, আতাউর রহমান, রেজাউল করিম রাজু, আহম্মদ জাফর, জেবুন্নেছা, সালাউদ্দিন মিঠু, নাহিদুল ইসলাম তুষার, তানজিলা মৌলি, পারভেজ সাজ্জাদ, শ্রীলঙ্কান নাগরিক নিরস ভিগনারাজা, ইফতিয়ার হোসেন মিঠু, শেখ জারিন তাসনিম বৃষ্টি, ফজলে রাব্বী, আতিকুর রহমান, আনজিব সিদ্দিকী আবির, আবদুল্লাহ আল ফারুক, মঞ্জুর হাসান ও আমির হোসেন রাব্বী। আহত ৪ ফায়ার কর্মী : এফআর টাওয়ারে অগ্নিকান্ডে উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়ে আহত হয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের ৪ কর্মী। এদের দুজনকে ঢামেক হাসপাতাল এবং অপর দুজনকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভবনে আটকে পড়াদের উদ্ধার করতে গিয়ে ক্রেন থেকে পড়ে পা হারিয়েছেন সোহেল রানা। তিনি সিএমএইচের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। আহত আবদুস শহীদ একই হাসপাতাল থেকে গতকাল ভোরে ছাড়পত্র পেয়েছেন। কালো ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টে অসুস্থ হওয়ার পর ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উদ্দীপন ভক্ত ও হাবিবুল্লাহ খান। এফআর টাওয়ারে যেসব অফিস ছিল : এফআর টাওয়ারের মালিক ইঞ্জিনিয়ার এস এম এইচ আই ফারুক। এর ২২টি ফ্লোরে মোট ২৯টি প্রতিষ্ঠান ছিল। ভবনের ১ম ফ্লোরে ছিল প্রিতম নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ২য়, ১২, ১৩, ১৬ এবং ১৯তম ফ্লোরে ডার্ড গ্রুপের অফিস। ৩য় ফ্লোরে ছিল বুস্টার জুস এবং রোজ ডেল, ৪র্থ ফ্লোরে ছিল ভিভিড গ্লোবাল ও ডেনটোটাল, ৫ম ফ্লোরে কিনড্রেড ক্যাফে ও আমরা নেটওয়ার্কস লিঃ, ৭ম তলায় ছিল এম্পয়ার গ্রুপের অফিস। ১৭ ও ১৮তম ফ্লোরেও ছিল আমরা নেটওয়ার্কসের অফিস। তবে ১৮তম ফ্লোরে একটি অংশ অফিস স্পেস ভাড়া দেওয়ার জন্য ফাঁকা ছিল, আরেকটি অংশে ছিল এভার বেস্টের অফিস। ৯ এবং ১০ম ফ্লোরে বাটার দি অফেল ক্যাফে, ১১তম ফ্লোরে ইইউআর সার্ভিস লিঃ, ১২ এবং ১৩তম ফ্লোরে ছিল বোমা বার্গার, ১৪তম ফ্লোরে এফআর প্রোপার্টিজ ও চোরি কোম্পানির লিঃ এবং ১৯তম ফ্লোরে ছিল এ জেড বিজনেস লিমিটেডের অফিস। কেউ ব্যস্ত ছিলেন জীবন বাঁচাতে, কেউ চুরি করতে : আগুনের ঘটনায় জীবন বাঁচাতে ছোটাছুটি করতে থাকেন এফআর টাওয়ারসহ আশপাশের ভবনের ভিতরে থাকা মানুষগুলো। এরই মধ্যে তাদের উদ্ধারের নাম করে চুরি করতে ব্যস্ত ছিল কিছু দুর্বৃত্ত। এরই মধ্যে কিছু মানুষ আমাদের উদ্ধারের কথা বলে আমাদের অফিসে থাকা টাকা-পয়সা, মোবাইল ও ল্যাপটপসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। আমাদের সামনে দিয়ে নিয়ে যায় অথচ আমরা প্রাণ শঙ্কায় থাকায় কিছুই করতে পারিনি।

ভবনটি নির্মাণে নকশা মানা হয়নি : বনানীর এফআর টাওয়ার ভবনটি রাজউকের অনুমোদিত নকশা লঙ্ঘন করে নির্মিত বলে জানিয়েছেন রাজউকের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান। গতকাল তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, আগুন লাগার পর আমরা যখন তথ্য ঘাঁটতে গেছি, তখন আমরা এটা পেয়েছি। যে ভবনটিতে আগুন লাগে, সেটির ফাইল আমি যতটুকু দেখেছি, ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর এটিকে একটি ১৮তলা ভবন হিসেবে করার জন্য নকশা অনুমোদন করা হয়। কিন্তু এই ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে ২৩ তলা। শুধু তাই নয়, রাউজকের অনুমোদিত নকশা থেকে এই ভবনের নকশায় আরও অনেক বিচ্যুতি রয়েছে।

সর্বশেষ খবর