রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগ নেতারা সাংগঠনিক সফরে যাচ্ছেন

রফিকুল ইসলাম রনি

আগামী সপ্তাহ থেকে সাংগঠনিক সফরে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। আট বিভাগে পৃথক আটটি টিমে ভাগ হয়ে একযোগে সারা দেশ চষে বেড়াবেন তারা। এ সফরে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের অভ্যন্তরে দ্বন্দ্ব মেটানো, নৌকার বিরোধিতাকারী দলীয় এমপি-মন্ত্রী ও নেতাদের তালিকা তৈরি করা, অক্টোবরে কেন্দ্রীয় সম্মেলনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সেপ্টেম্বরের আগে জেলা-উপজেলার সম্মেলন সম্পন্ন করা এবং সরকারের উন্নয়ন জনগণের সামনে তুলে ধরতেই এ সফর। এ জন্য তারা জেলা-উপজেলায় বর্ধিত সভা করবেন। আগামী শুক্রবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সফরসূচি চূড়ান্ত করা হবে। দলের একাধিক নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

জানা গেছে, গত শুক্রবার আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে সারা দেশে সাংগঠনিক কর্মকা  জোরদার করার জন্য আটটি টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। দলের উপদেষ্টা পরিষদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে এ টিম গঠন করা হবে। বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা টিমের মূল সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন। এ জন্য দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের একটি গাইড লাইন দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকরা গতকাল থেকে কাজ শুরু করেছেন। গতকাল বিকালে দলীয় সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয় থেকে জেলা নেতাদের ফোন করে বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থার বিস্তারিত জানাতে নির্দেশনা দেন সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। এ সময় দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য এস এম কামাল হোসেন ও আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। জেলা নেতাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, জেলা এবং উপজেলায় সর্বশেষ সম্মেলন কবে হয়েছে, বর্তমান সাংগঠনিক বাস্তব অবস্থা কী। আগামী বৃহস্পতিবারের আগেই দলীয় সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয়ে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও দলের খুলনা ও বরিশাল বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক পৃথকভাবে ফোন করে জেলা নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আগামী শুক্রবার দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সফরসূচি চূড়ান্ত করা হবে। দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রথমে জেলায় জেলায় বর্ধিত সভা করব। এরপর মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলা ও সাংগঠনিক ইউনিটগুলোতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্মেলন করা হবে। যেসব সমস্যা আছে, সেগুলো সমাধানের জন্য অ্যাকশনে যাব। এ ছাড়াও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যারা দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করেছেন এমন এমপি-মন্ত্রী ও নেতার নাম শনাক্ত করে লিখিতভাবে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কাছে রিপোর্ট করব।’ দলের একাধিক প্রেসিডিয়াম সদস্যের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, শুক্রবারের বৈঠকে আগামী অক্টোবরে জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন শেখ হাসিনা। সে কারণেই মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলার সম্মেলনে জোর দিয়েছেন তিনি। এ জন্য আটটি টিম গঠন করার নির্দেশনা দিয়েছেন। একই সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেসব এমপি-মন্ত্রী ও দলীয় নেতারা নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করছেন, তাদের বিরুদ্ধে লিখিত রিপোর্ট চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নেতাদের জানিয়েছেন, কোন কোন এমপি-মন্ত্রী ও নেতা নৌকার বিরোধিতা করেছেন, আমার কাছে গোয়েন্দা রিপোর্ট আছে। নৌকার বিরুদ্ধে যারা কাজ করছেন, আগামীতে তাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে বিদ্রোহীদের নিয়েই ভাবব। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘দলীয় সভানেত্রী দলের জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে তৃণমূলকে ঢেলে সাজানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। এ জন্য আগামী সপ্তাহেই সফর শুরু হবে।

সর্বশেষ খবর