শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

বন্ড সুবিধার কাগজ খোলা বাজারে বিক্রয় কঠোর হাতে দমন

- এনবিআর চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক

বন্ড সুবিধার কাগজ খোলা বাজারে বিক্রয় কঠোর হাতে দমন

বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধার অপব্যবহারকারী ব্যবসায়ীদের দমন করার ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তিনি বলেছেন, ‘ইসলামপুর, নয়াবাজার, চকবাজারের মতো স্থানে শুল্কমুক্ত বন্ড সুবিধায় আমদানি হওয়া কাগজ, কাপড় ও প্লাস্টিক পণ্য খোলাবাজারে বিক্রি হয়। এর সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের তালিকা করছি। আমরা অসাধু ব্যবসায়ীদের দমন করার জন্য যা প্রয়োজন তা-ই করব।’ গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচার রাজস্ব ভবনে আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। আলোচনা সভায় বন্ড সুবিধা পাওয়া খাতগুলোর মধ্যে তৈরি পোশাক ও বস্ত্রশিল্প, টেক্সটাইল, প্লাস্টিক, প্যাকেজিং শিল্পের উদ্যোক্তাদের বাণিজ্য সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। বন্ডের অপব্যবহার বন্ধে ব্যবসায়ীদের সম্মতির কথা জানান এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএর সব সদস্য প্রতিষ্ঠান রপ্তানি করে। তাদের সবার বন্ড লাইসেন্স আছে। তাদের কিছু সদস্য প্রতিষ্ঠান এবং সদস্য নয় এমন কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ডের অপব্যবহার করে।

এনবিআরের অভিযানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা কিছু অভিযান পরিচালনা করছি। কারও কারও লাইসেন্স বাতিল করছি। কারণ তারা রপ্তানিকারক নয়, ফটকা ব্যবসায়ী। তারা বন্ডের সুযোগ নিয়ে কর ও শুল্ক না দিয়ে বাজারে পণ্য বিক্রি করছে। এতে টেক্সটাইল, উইভিং, কাগজশিল্প প্রত্যেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমনকি একটা দোষের ভাগীদারও হচ্ছে। বদনাম হচ্ছে। কিন্তু বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএর মতো কোনো ব্যবসায়ী সংগঠনেরই কোনো সমর্থন নেই বন্ডের অপব্যবহার নিয়ে।’

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘যারা এই অপব্যবহার করছে, আমরা তাদের ধরার চেষ্টা করছি। গণমাধ্যমকেও বলব, বন্ডের অপব্যবহার রোধে কোনো কিছুর সন্ধান পেলে আমাদের জানাবেন। এ ক্ষেত্রে নীতিমালায় পরিবর্তন আনব। রপ্তানি ছাড়া কোনো বন্ড সুবিধা হবে না। প্রাপ্যতা যাতে সঠিকভাবে দেওয়া হয়, সেটি দেখার অনুরোধ করছি বাণিজ্য সংগঠনগুলোকে।’ এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রীলঙ্কা, ভারত থেকে টেকনিশিয়ানরা বাংলাদেশে এসে কাজ করছেন। তারা বিপুল পরিমাণ ডলার নিয়ে যাচ্ছেন। ভারতের রেমিট্যান্সের বড় অংশ যায় বাংলাদেশ থেকে। অনেক ব্যবসায়ী বিদেশি কর্মীদের বেতন সঠিকভাবে ঘোষণা দেন না। তাই এ ধরনের বিদেশি কর্মীদের কাছ থেকে এনবিআর সঠিক কর আদায় করতে পারছে না। বাজেটে আগে অথবা পরে এ ধরনের বিদেশিদের কাছ থেকে কর আদায় করতে জরিপ চালানো হবে। এ জন্য ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা চান তিনি।

প্রাক-বাজেট আলোচনায় তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘যারা অন্যায়ভাবে ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তাদের ধরুন। আমরা কোনো সুপারিশ করব না। বরং আমরা সহযোগিতা করব।’ তিনি আগামী অর্থবছরের বাজেট সব রপ্তানি খাতের করপোরেট করহার কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণসহ সব ধরনের রপ্তানিতে সমান সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি করেন।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, অর্থনীতিতে বড় ধরনের অবদানের পরও টেক্সটাইল খাত করবৈষম্যের শিকার। করপোরেট ট্যাক্স ১৫ শতাংশ দিতে হচ্ছে। কিন্তু গার্মেন্টস খাত দিচ্ছে ১২ শতাংশ। তাই আগামী বাজেটে তৈরি পোশাক খাতের মতো করপোরেট কর নির্ধারণ করা হোক। সুতার ওপর ভ্যাট আরোপ করা হলে প্রান্তিক পর্যায়ের তাঁতিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বাংলাদেশ প্লাস্টিক রপ্তানিকারক সমিতি (বিপিজিএমইএ) সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, সরকার সব সময় বলে আসছে, রপ্তানি খাতকে বহুমুখী করা দরকার। কিন্তু কাজকর্মে এ খাতকে মূল্যায়ন করা হয় না। সব রপ্তানি খাতকে সমান সুবিধা দেওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর