বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

ব্যাংক ধ্বংসের জন্য অব্যবস্থাপনা দায়ী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্যাংক ধ্বংসের জন্য অব্যবস্থাপনা দায়ী

আ হ ম মুস্তফা কামাল

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান চালাতে গেলে টাকার প্রয়োজন হয়। কিন্তু টাকার অভাবে কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয় না। প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয় তার ম্যানেজমেন্টের কারণে। বাংলাদেশে ব্যাংকিং সংকটের পেছনে দায়ী সঠিক ব্যবস্থপনার অভাব। গতকাল রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে পদ্মা ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান পাটোয়ারী, র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ, পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. এহসান খসরু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকিং খাত সংস্কারে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। খারাপ ব্যবস্থাপনার কারণে ব্যাংকিং খাতের বর্তমান দুরবস্থা। আমরা একটি শক্তিশালী ব্যাংকিং খাত গড়তে চাই। একটি দেশের উন্নয়নের জন্য খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন নেই। যারা ব্যাংকের টাকা নিয়ে ফেরত দেন না তাদের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নিয়েছি। কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। অন্যায় করলে পার পাওয়ার সুযোগ নেই। খারাপ ম্যানেজারদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। মনে রাখতে হবে, টাকার সংকটে বাংলাদেশে কোনো প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়নি। শুধু মন্দ ব্যবস্থাপনাই এর জন্য দায়ী। তাই আমরা কোনো খারাপ ব্যবস্থাপকদের রাখতে চাই না।’ এদিকে গতকাল বিকালে এনইসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বলেন, নতুন ব্যাংক অনুমোদন পেতে হলে এক হাজার কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধনের প্রয়োজন হবে। ব্যাংক বন্ধ হলেও গ্রাহকেরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে জন্য এক হাজার কোটি টাকা লাগবে নতুন ব্যাংক অনুমোদন নিতে। এ টাকা সরকারের কাছে থাকবে। ব্যাংক বন্ধ হলেও যেন গ্রাহকরা ক্ষতিতে না পড়েন। তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজার অর্থনীতির আয় না। এটাকে শক্তিশালী করতে পারলে দেশের অর্থনীতি আরও এগিয়ে যাবে। কিন্তু আমরা পুঁজিবাজারকে সেই মাত্রায় এগিয়ে নিতে পারিনি। এ ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত খেলাপি গ্রাহকরা ৯ শতাংশ সুদে ঋণ পরিশোধের সুযোগ পাবেন।’ সরকার মুদ্রানীতি ও ফিসক্যাল পলিসির মাধ্যমে নানা ধরনের সহায়তা পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করতে উদ্যোগ নেবে। ব্যবসায়ীরা যাতে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহে আগ্রহী হন, সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা করা হবে। পুঁজিবাজারের সার্বিক বিষয় জানতে এবং পর্যবেক্ষণে রাখতে প্রতি মাসে কমপক্ষে একবার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। তিনি বলেন, রাজস্ব আহরণ সক্ষমতা বাড়াতে এনবিআরে ব্যাপক সংস্কার আনা হবে। নতুন ভ্যাট আইন চালু হলে বিভিন্ন ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠানে ইসিআর মেশিন বসানো হবে। এগুলো তদারক করতে নতুন জনবল লাগবে। আগামী ১৮ মাসে কেবল এনবিআরেই ৭০ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

সর্বশেষ খবর