রাজধানীর প্রগতি সরণিতে সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাসের চাপায় নিহত হন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী। এ ঘটনায় ঘাতক বাস কোম্পানি সুপ্রভাত এবং জাবালে নূরের ঢাকায় চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু তাতে তোয়াক্কা করেননি মালিক পক্ষ। তারা এ বাসের রং বদলে ফেলে নতুন নাম দিয়েছেন আকাশ এন্টারপ্রাইজ। এটি চলাচল করছে গাজীপুরা থেকে ঢাকার সদরঘাট পর্যন্ত। গতকাল ঢাকা ডেমরার আমুলিয়া মডেল টাউনে সরেজমিন সুপ্রভাত পরিবহনের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি দেখা যায়। মডেল টাউনের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করে ৫০ গজ দূরে হাতের বামে অন্তত ৭০টি বাস পার্কিং করে রাখা ছিল। সেখানে কিছু বাসের পুরনো রং তুলে ফেলার কাজ চলছিল এবং বাসের নতুন নাম আকাশ এন্টারপ্রাইজ লেখা হচ্ছিল। মডেল টাউনের ভিতরের এক মুড়ি বিক্রেতা এ প্রতিবেদককে জানান, দুই সপ্তাহ ধরে এখানে বাসগুলোর রঙের কাজ চলছে। সারা দিন সুপ্রভাত পরিবহনের বাসগুলো মডেল টাউনের ভিতরে পার্কিং করা থাকে। প্রথমদিকে অন্তত ২০০ বাস ভিতরে নিতে দেখা গেছে। রং করে নিয়ে যাওয়াতে এখন হয়তো কমে গেছে। আর মডেল টাউনের ভিতরেই রাতভর চলে রঙের কাজ। সকালে আবার কিছু বাস বের করে অন্যখানে নিয়ে যাওয়া হয়। বাস মালিকদেরও তাদের বাসের নাম মুছে ফেলতে দেখা গেছে। তবে কী কারণে বাসের নাম পাল্টানো হচ্ছেÑ এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি। মমিন নামে সেখানকার এক দোকানদার অভিযোগ করেন, যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে সুপ্রভাত বাসের চাপায় বিইউপি ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরী নিহত হন। তাই বাস মালিক কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের ভাঙচুরের হাত থেকে বাঁচতে এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করার জন্য এ কৌশল অবলম্বন করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাসচালক ও তাদের সহকারীরা জানান, সুপ্রভাত বাস সার্ভিসটি সদরঘাট থেকে উত্তরা পর্যন্ত চলাচলের অনুমতি ছিল। পরিবহন শ্রমিক নেতারা প্রভাব খাটিয়ে গাজীপুর মহানগরের গাজীপুরা পর্যন্ত নিয়মিত চলাচল করাচ্ছিল। এ পরিবহনের ৫০ থেকে ৬০টি বাসের অনুমতি থাকলেও দুই থেকে আড়াইশ বাস প্রতিদিন ঢাকা থেকে গাজীপুরা চলাচল করেছে। এসব বাস নিষিদ্ধ হলেও চালানো যাবে। কারণ যে কোনো পরিবহন কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে অন্য পরিবহন প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করতে পারে। তবে যে প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করবে সেই প্রতিষ্ঠানটির বৈধ লাইসেন্স থাকতে হয়। তাছাড়া আকাশ এন্টারপ্রাইজের বৈধ কাগজপত্র আছে তাই তার নাম লেখা হচ্ছে। জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের নলেজে কিছু নেই। এখন আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’