মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

শেয়ারবাজারে দরপতন, রাস্তায় বিনিয়োগকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেয়ারবাজারে টানা দরপতনের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় বিনিয়োগকারীরা বাজার স্থিতিশীলতায় ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে ইব্রাহীম খালেদের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী দোষীদের শাস্তির দাবি। এ ছাড়া জেড ক্যাটাগরি এবং ওটিসি মার্কেটের বিষয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ ও ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদানে বাধ্য করা।

জানা গেছে, লেনদেনের শুরু থেকেই সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যায়। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে  বাড়তে থাকে পতনের মাত্রা। সকালে লেনদেনের মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে ডিএসইর সূচক প্রায় ৫০ পয়েন্ট কমে যায়। এরপরই মতিঝিলের বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস থেকে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। দিন বাড়ার সঙ্গে সূচক পতনের পরিমাণও বাড়ে। পতনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি ডিএসইর বাছাই করা ৩০টি কোম্পানিও। ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকটি আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯২৪ পয়েন্টে দাঁড়ায়। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৪০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ধারাবাহিক দরপতনের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ডিএসইর কর্মকর্তাদের দায়ী করেন। তারা বলেন, কারসাজি চক্রের খপ্পরে পড়ে  শেয়ারবাজারে টানা দরপতন হচ্ছে। এতে একটু একটু করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পুঁজি শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পতন ঠেকাতে বিএসইসি বা ডিএসই কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সবাই যার বার সুবিধা আদায়ের চেষ্টা চালাচ্ছে।

মানববন্ধনে বিনিয়োগকারী মিজান-উর-রশিদ চৌধুরী বলেন,  শেয়ারবাজারে দরপতন হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। পাতানো খেলার মাধ্যমে বাজারে কৃত্রিম প্রভাব ফেলানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে ২০১০ সালের রাঘববোয়ালরা জড়িত। যাদের নাম ইব্রাহীম খালেদের তদন্তে উঠে এসেছিল, তাদের আইনের আওতায় আনতে পারলেই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। আরেক বিনিয়োগকারী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘শেয়ারবাজারের বর্তমান মন্দাবস্থায়ও আইসিবি শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয় রয়েছে। বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত হওয়া উচিত।’ বাজার লেনদেনে দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩৭২ পয়েন্টে। যা ৩ মাস ১১ দিন বা ৬৬ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর আজকের চেয়ে কমে অবস্থান করছিল ডিএসইএক্স। ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ৩৪৯ পয়েন্টে। ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৪১৮ কোটি টাকার। এদিন ডিএসইতে ৩৪৬টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৪৫টির, কমেছে ২৭৩টি ও অপরিবর্তিত থাকে ২৮টি প্রতিষ্ঠানের। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৮৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৪৭৮ পয়েন্টে। সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৪১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৪২টির, কমেছে ১৮০টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির দর। সিএসইতে ১৫  কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

সর্বশেষ খবর