বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

সঞ্চয়পত্রে সুদ বেশি থাকায় মানুষ শেয়ারবাজারবিমুখ

আলী রিয়াজ

সঞ্চয়পত্রে সুদ বেশি থাকায় মানুষ শেয়ারবাজারবিমুখ

অধ্যাপক আবু আহমেদ

শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেছেন, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার বেশি থাকায় সবাই শেয়ারবাজারবিমুখ হয়ে পড়ছে। অনেকে টাকা তুলে সঞ্চয়পত্র কিনছে। ভালো কোম্পানি না আসায় দুর্বল কোম্পানির সংখ্যা বেশি হয়েছে। চাহিদার তুলনায় শেয়ার সরবরাহ বেশি হয়েছে। এতে বাজারে ক্রেতার তুলনায় বিক্রেতা বেড়েছে। তারল্য সংকটে টানা দরপতনের মুখে পড়েছে শেয়ারবাজার। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।

আবু আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গত পাঁচ বছরে অনুমতি পাওয়া দুই-একটি বাদে ভালো কোনো কোম্পানি বাজারে আনতে পারেনি। ফলে যেসব কোম্পানি আইপিওর মাধ্যমে বাজারে আসছে, প্রিমিয়ামে টাকা নিয়েছে, সেসব কোম্পানির শেয়ারের মূল্য তিন ভাগের এক ভাগ হয়ে গেছে। আস্থার সংকটে বিনিয়োগকারীদের একটি বড় অংশ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেছে। তিনি বলেন, বাজারে তারল্য সংকটের আরেকটি বড় কারণে প্লেসমেন্ট বাণিজ্যে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বাজার থেকে বের হয়ে গেছে। আবার অনেক কোম্পানি অযথা বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিচ্ছে। এসব কারণে বাজারে দুর্বল শেয়ারের সরবরাহ বাড়ছে। এসব শেয়ার কিনে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, গ্রামীণফোন টেলিকম খাতের একমাত্র কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত। সরকারসহ প্রায় ৪০ হাজার বিনিয়োগকারীর কাছে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার রয়েছে। অথচ বিটিআরসি গ্রামীণফোনের ব্যবসা ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধানিষেধ আরোপ করেছে। যা প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ইউনাইটেড পাওয়ারের শেয়ার নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে। শেয়ার কারসাজিতে জড়িতরা এই গুজব তৈরি করছে। বাজারের মোট শেয়ারের একটা বড় অংশ হচ্ছে গ্রামীণফোন, ইউনাইটেড পাওয়ার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর শেয়ার। এ কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর কমে যাওয়ায় বড় ধরনের সংকটে পড়েছে শেয়ারবাজার। তিনি আরও বলেন, এক মাস ধরে সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবি শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রি বেশি করেছে। বিষয়টি কোনোভাবেই কাম্য নয়। প্রতিষ্ঠানটি তাদের হাতে থাকা শেয়ার কেনাবেচার ক্ষেত্রে বাজার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করবে। কিন্তু এক্ষেত্রে তারা সেটা করেনি।

আবু আহমেদ বলেন, অনেক কোম্পানি শেয়ারবাজার থেকে উচ্চ প্রিমিয়াম নিয়ে স্পন্সর শেয়ার বিক্রি করেছে কিন্তু এখন তাদের কারখানা বন্ধ। বিএসইসি কোনো পদক্ষেপ নেয়নি এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার কথা জানিয়েছে। তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বিএসইসির কথা বলা উচিত। কী ধরনের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তা খতিয়ে দেখে শেয়ারবাজারে বিদেশি বড় কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত করতে হবে।

সর্বশেষ খবর