শুক্রবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিক্ষিপ্ত সহিংসতায় ভারতে প্রথম ধাপের ভোট

নিহত ২, তৃণমূল নেতার ওপর বোমা, বুথ ভাঙচুর

নয়াদিল্লি ও কলকাতা প্রতিনিধি

বিক্ষিপ্ত সহিংসতায় ভারতে প্রথম ধাপের ভোট

বিক্ষিপ্ত কিছু সহিংস ঘটনার মধ্য দিয়ে গতকাল ভারতের লোকসভা (সংসদ) নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৯১টি আসনের ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। ভোট গ্রহণের সময় অন্ধ্রপ্রদেশের ভীরামপুরমে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষে দুজন নিহত হন এবং পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারের তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতার ওপর বোমা ছোড়া হয়েছে। একটি এলাকায় বুথ ভাঙচুর করারও খবর এসেছে। ভারতে এবার মোট ৭ দফায় (১১, ১৮, ২৩, ২৯ এপ্রিল এবং ৬, ১২, ১৯ মে) ৫৪৩টি আসনের জন্য ভোট নেওয়া হবে। এবারের লোকসভা নির্বাচনে গোটা দেশে মোট ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৯০ কোটির মতো। নতুন ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১.৬০ কোটি। গণনা আগামী ২৩ মে। গতকাল লোকসভার প্রথম দফার নির্বাচনে যে ২০টি রাজ্যের ৯১টি আসনে ভোট গ্রহণ করা হয় সেগুলো হচ্ছে : পশ্চিমবঙ্গ (২), অরুণাচল প্রদেশ (২), আসাম (৫), বিহার (৪), ছত্তিশগড় (১), জম্মু-কাশ্মীর (২), মহারাষ্ট্র (৭), মনিপুর (১), মেঘালয় (২), মিজোরাম (১), নাগাল্যান্ড (১), উড়িষ্যা (৪), সিকিম (১), অন্ধ্রপ্রদেশ (২৫), তেলেঙ্গানা (১৭), ত্রিপুরা (১), উত্তরপ্রদেশ (৮), উত্তরাখ  (৫), লাক্ষাদ্বীপ (১) ও আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ (১)। গতকাল অনুষ্ঠিত হয় অন্ধ্রপ্রদেশ, সিকিম, অরুণাচল এবং উড়িষ্যা- এই চারটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনও। ভোট শুরু হয় সকাল ৭টায়, চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। তবে, নকসাল অধ্যুষিত এলাকা ও উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে নিরাপত্তার কারণে কোথাও কোথাও সকাল ৭টা-বিকাল ৫টা, সকাল ৭টা-বিকাল ৪টা, বা কোথাও ৭টা-বিকাল ৩টা পর্যন্ত ভোট নেওয়া হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ : প্রথম দফায় কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার-এই দুই আসনে নির্বাচন হয়েছে। দুটি কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ৩৪ লাখ ৫৪ হাজার ২৭৬ জন। দুটি আসনে প্রার্থী ছিলেন ১৮ জন। ভোট কেন্দ্র ছিল ৩৮৪৪টি। দুটি আসনেই চতুর্মুখী লড়াই হয়। কোচবিহারে প্রধান লড়াই হবে তৃণমূলের প্রার্থী পরেশচন্দ্র অধিকারী ও বিজেপির নিশীথ প্রামাণিকের মধ্যে। এ ছাড়াও বিপক্ষদের শক্ত লড়াই দিতে পারেন কংগ্রেসের পিয়া রায় চৌধুরী ও বাম প্রার্থী গোবিন্দ রায়। অন্যদিকে আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের টিকিটে লড়ছেন দশরথ তিরকে, বিজেপির প্রার্থী জন বালা, কংগ্রেসের মোহনলাল বসুমাতা, বামদের প্রার্থী মিলি ওরাও। ভোট শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে অশান্তির খবর পাওয়া যায়। কোচবিহারে তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ার অভিযোগ রয়েছে। আলিপুরদুয়ারের চিলাপাতায় বুথ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। কয়েকটি বুথে ইভিএম বিভ্রাটের খবরও পাওয়া গেছে।

অন্ধ্রপ্রদেশে নিহত ২ : শাসক দল তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ও বিরোধী দল ওয়াই.এস.আর কংগ্রেসের মধ্যে সংঘর্ষে গতকাল দুজনের মৃত্যু হয়। রাজ্যটির অনন্তপুর জেলার তাড়িপত্রি লোকসভা আসন এলাকার ভীরাপুরমের এলাকায় একটি ভোট কেন্দ্রের বাইরে দুই দলের মধ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল। নিহতদের মধ্যে একজন হলেন টিডিপি কর্মী সিদ্ধা ভাস্কর রেড্ডি। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয়। অন্যজন বিরোধী দলের কর্মী বলে জানা গেছে।

রাজ্যজুড়ে এই সহিংসতার জন্য বিরোধী দলকেই ‘দোষী; বলছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ও টিডিপি প্রধান এন চন্দ্রবাবু নাইডু। সহিংসতার পর বিরোধী দলের তরফেও নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। সকাল থেকেই একাধিক জায়গায় ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধীদের মধ্যে বিবাদ বাধে। ইভিএম যন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ায় রাজ্যের প্রায় শতাধিকের বেশি ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে ভোট প্রক্রিয়া চালু করতে দেরি হয়ে যায়। অনন্তপুর জেলার গুন্টাকল এলাকায় জন সেনা পার্টির প্রার্থী মধুসুধন গুপ্তার বিরুদ্ধে ইভিএম যন্ত্র ছুড়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরে ওই প্রার্থীকে গ্রেফতার করা হয়।

বান্দারপাল্লি জেলার পুথালাপাট্টু লোকসভা কেন্দ্রে দুই দলের মধ্যে বিক্ষোভ চলাকালীন বিক্ষোভকারীদের হটাতে লাঠিপেটা করতে হয় পুলিশকে। নারাসারাওপেট-এর বর্তমান বিধায়ক ও ওয়াইএসআর কংগ্রেসের প্রার্থী জি শ্রীনিবাস রেড্ডির গাড়িবহরে টিডিপির সমর্থকরা হামলা চালালে তিনি গুরুতর আহত হন। অন্যদিকে গুন্টুর জেলার সাট্টেনাপালিতে রাজ্য বিধানসভার স্পিকার কোডেলা শিবপ্রসাদ রাও-এর ওপর ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সমর্থকরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ইনুমেল্টা গ্রামে ভোটারদের কাছে টিডিপি দলের পক্ষে ভোট দেওয়ার আর্জি জানানোর সময় কোডেলার ওপর হামলা করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর