মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

হত্যাকারীরা রেহাই পাবে না : প্রধানমন্ত্রী

সাক্ষাৎ করলেন নুসরাতের বাবা-মা

নিজস্ব প্রতিবেদক

হত্যাকারীরা রেহাই পাবে না : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী গতকাল সান্ত্বনা দেন নুসরাতের মাকে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন ফেনীর সোনাগাজীতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির বাবা এ কে এম মুসা ও মা শিরিনা আক্তার। এ সময় প্রধানমন্ত্রী নুসরাতের পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নুসরাতের পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন নুসরাতের মা ও অন্যরা। নুসরাতের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দুষ্কৃতকারীরা কেউই আইনের হাত থেকে কোনোভাবেই রেহাই পাবে না। তিনি বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিবাদ করে নুসরাত এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এ সময় নুসরাতের বাবা-মা এই দুঃসময়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। গত ৬ এপ্রিল সকালে নুসরাত আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় গেলে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়। গত ২৭ মার্চ নুসরাতকে মাদ্রাসার নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নুসরাত হত্যাকান্ডে  তার মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তিনি কারাগারে বসে নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার নির্দেশ দিয়েছেন।

নববর্ষে গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় : গত রবিবার পয়লা বৈশাখ সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বাংলা নববর্ষ ১৪২৬-এর শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি দেশবাসীকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ১৪২৬ সালে সবার জীবন সুখময়, সুন্দর ও সমৃদ্ধ হোক। আমাদের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক। তিনি বলেন, বিশ্ব দরবারে বাঙালি জাতি সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে চলবে। বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। সকাল ৯টার আগেই আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মীরা গণভবনে আসতে শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবনের ব্যাঙ্কোয়েট হলে পৌঁছালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘এসো এসো হে বৈশাখ’, ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’, ‘আলো আমার আলো’সহ বেশ কয়েকটি গান পরিবেশন করা হয় সমবেত কণ্ঠে। আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে গানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীও কণ্ঠ মেলান। এরপর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। পরে দলের বিভিন্ন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারাও প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া উপহার দেন। এ সময় দলের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এই অনুষ্ঠানে অতিথিদের খই, মুড়কি, পিঠা, বাতাসা, কদমা, জিলাপি ও মোয়া প্রভৃতি ঐতিহ্যবাহী খাদ্য দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের সব কর্মের মধ্য দিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণ করে যাব। বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দেখেছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। আজকে আমাদের লক্ষ্য জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। আমরা তা করতে পারব। নতুন বছর জাতির জন্য নতুন বার্তা বয়ে আনুক, এ আশা ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন বছরে আমরা জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন করব, আমরা আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। প্রধানমন্ত্রী এ সময় গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করায় দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীসহ সমগ্র দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

নববর্ষে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে শুভেচ্ছা : অন্যান্য উৎসবের মতো বাংলা নববর্ষ পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে শুভেচ্ছার নিদর্শনস্বরূপ প্রধানমন্ত্রী রাজধানী মোহাম্মদপুরের গজনবী রোডে অবস্থিত শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন কেন্দ্র (মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ার-১)-এ যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্য উপহার হিসেবে ফুল, ফল ও মিষ্টি পাঠান। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা উপহার পেয়ে কৃতজ্ঞতা জানান এবং প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

সর্বশেষ খবর