বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা
অভিনব প্রতিবাদ

ওয়াসার পানি এমডিকে খাওয়াতে চায় নগরবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ওয়াসার পানি এমডিকে খাওয়াতে চায় নগরবাসী

ওয়াসার পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে এমডিকে খাওয়ানোর জন্য গতকাল তার কার্যালয়ে হাজির হয় দুর্ভোগের শিকার মানুষ। এ সময় এক কর্মকর্তার সঙ্গে তাদের বাকবিত-া হয় ছবি : সংগৃহীত

পানি ওয়াসার। সেই পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কর্মকর্তাদের পান করাতে চান জুরাইন ও রামপুরাবাসী। জগভর্তি পানি, লেবু, চিনি নিয়ে গতকাল তারা হাজিরও হয়েছিলেন রাজধানীতে পানি সরবরাহকারী এ প্রতিষ্ঠানটির সামনে। কিন্তু শরবত পান করাতে পারেননি ওয়াসার কোনো কর্মকর্তাকে। সম্প্রতি ওয়াসার পানিকে শতভাগ সুপেয় দাবি করে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিন এ খানের দেওয়া বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অভিনব এই প্রতিবাদের আয়োজন করে জুরাইন ও রামপুরার কয়েকজন বাসিন্দা।

গতকাল জুরাইন ও পূর্ব রামপুরার কয়েকজন বাসিন্দা রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনের সামনে আসেন। তাদের হাতে ছিল কাচের জগ ও বোতলে ভরা ওয়াসার পানি, গ্লাস, লেবু ও চিনির প্যাকেট। উদ্দেশ্য ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে শরবত বানিয়ে আপ্যায়িত করা। তারা প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করেন। তবে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দেখা পাননি। তার অনুপস্থিতিতে ওয়াসার পরিচালক (কারিগরি) এ  কে এম সহিদ উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করেন প্রতিবাদকারীরা। তাকে শরবত পানের আহ্বান জানালে তিনি অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, ওয়াসার পানি বিশুদ্ধ, পানিতে কোনো সমস্যা নেই।  কোথাও যদি ময়লা পানি আসে, তা পাইপলাইনের জন্য। আজ শরবত খাব না। ওই এলাকার পানির সমস্যার সমাধান করে  সেই পানি দিয়ে শরবত খাব। প্রসঙ্গত, গত ১৭ এপ্রিল ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে জানায়, ঢাকা ওয়াসার পানির নিম্নমানের কারণে ৯৩ শতাংশ গ্রাহক বিভিন্ন পদ্ধতিতে পানি পানের উপযোগী করেন। এর মধ্যে ৯১ শতাংশ গ্রাহকই পানি ফুটিয়ে পান করেন। আর বাসাবাড়িতে এই পানি ফোটাতে বছওে পোড়াতে হয় ৩৩২ কোটি ৩৭ লাখ টাকার গ্যাস। তবে পরের দিন টিআইবির এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান বলেন, ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়। গতকাল তার এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানায় রাজধানীর কয়েকটি এলাকার বাসিন্দা। শরবত নিয়ে ওয়াসার এমডির অপেক্ষায় থাকা মিজানুর সাংবাদিকদের বলেন, ‘জুরাইন এলাকায় ওয়াসার পাইপ ৪০ বছর আগের। খাওয়া তো দূরের কথা, এই পানি দিয়ে রান্না করতেও খারাপ লাগে। বাধ্য হয়ে করতে হয়। তিনি হাতে থাকা জগের ময়লা পানি দেখিয়ে বলেন, অনেক সময় এর চেয়েও খারাপ পানি আসে। এ সমস্যা জানিয়ে ২০১২ সালে সাড়ে তিন হাজার মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে ওয়াসার এমডিকে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। এ বক্তব্যে আমরা ক্ষুব্ধ। তাই ওয়াসার পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে ওয়াসার এমডিকে পান করাতে এসেছি।

সর্বশেষ খবর