শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

ফের বিস্ফোরণ ঘরছাড়া মুসলিমরা

নিহতের সংখ্যা কমিয়ে ২৫৩ হামলার নেপথ্যে সপরিবারে কোটিপতি ব্যবসায়ী, গ্রেফতার হয়ে ছাড়া পেয়েছিলেন এক আত্মঘাতী

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

আবারও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে শ্রীলঙ্কায়। গতকাল রাজধানী কলম্বো থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে পুগোদা শহরে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেছনের খোলা মাঠে বিস্ফোরণের ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে এ বিস্ফোরণ আরও আতঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ গত রবিবার শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর তিনটি চার্চ, তিনটি অভিজাত হোটেল ও শহরের পার্শ্ববর্তী দুই স্থানে সিরিজ বোমা হামলার পর থেকেই আতঙ্ক বিরাজ করছে দেশজুড়ে। এর মধ্যেই বুধবার রাজধানী কলম্বোর স্যাভয় নামের জনপ্রিয় একটি সিনেমা হলের পাশে বিস্ফোরণ হয়।  শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে গতকাল দেশবাশীকে জঙ্গিদের ‘স্লিপার সেল’ নিয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

গত রবিবার ইস্টার সানডে উপলক্ষে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনার সময় শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর তিনটি গির্জা, তিনটি অভিজাত হোটেল ও শহরের পার্শ্ববর্তী দুই স্থানে সিরিজ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ৩৬৯ জন নিহতের কথা জানানো হয়েছিল। তবে গতকাল তা কমিয়ে জানানো হয় নিহতের সংখ্যা ২৫৩ জন। শ্রীলঙ্কান কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বিবিসি এ তথ্য জানায়। হামলার পর দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠন আইএস।

আরও হামলার আশঙ্কায় শ্রীলঙ্কায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে গির্জাগুলো। নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত গির্জাগুলোকে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। একজন যাজক বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর পরামর্শক্রমে আমরা সব গির্জা বন্ধ রেখেছি। বন্ধ করা হয়েছে বিমানবন্দর ও কেন্দ্র্রীয় ব্যাংক সংলগ্ন রাস্তাগুলো। রাজধানী কলম্বোর বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কার্যালয়ের বাইরের রাস্তা নিরাপত্তার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কলম্বোর বিমানবন্দরের মূল সড়কেও যান চলাচল বন্ধ। পার্কিং এলাকায় সন্দেহজনক একটি গাড়ি পাওয়া যাওয়ার খবর এসেছিল। সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে আরও ১৬ জনকে আটক করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ৭৬ জনকে আটক করা হলো। যার মধ্যে একজন সিরিয়ান নাগরিকও রয়েছেন। গণমাধ্যমের তথ্যানুসারে, ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলার পেছনে মোহাম্মদ ইউসুফ ইব্রাহিম নামের এক কোটিপতি ব্যবসায়ীর পরিবারের সদস্যরা জড়িত। দেশের ওই শীর্ষ মসলা ব্যবসায়ীর স্ত্রী এবং দুই ছেলে এ হামলার সঙ্গে জড়িত। ইউসুফ ইব্রাহিমের ছেলে ইনসাফ ইব্রাহিমের তামার কারখানায় এ হামলায় ব্যবহৃত বোমাগুলো তৈরি করা হয়। এমনকি ইনসাফ ইব্রাহিম নিজেই পাঁচতারকা শাংরি-লা হোটেলে হামলা চালান। হামলার পর ইনসাফের বাড়িতে স্থানীয় পুলিশ অভিযান চালালে সেখানে তার ছোট ভাই ইলহাম ইব্রাহিম আত্মঘাতী হন। তার তিন সন্তান ও স্ত্রী সেখানে মারা যায়। ইতিমধ্যে দেশটির সংবাদ মাধ্যমগুলোতে হামলাকারী হিসেবে এই দুই ভাইয়ের নাম প্রচার করা হলেও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি দেশটির সরকার। তবে অভিযুক্ত মসলা ব্যবসায়ী ইউসুফ ইব্রাহিমকে ইতিমধ্যে আটক করেছে পুলিশ। অবশ্য মার্কিন বার্তা সংস্থা সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, ইনসাফ ইব্রাহিম এর আগেই উগ্রপন্থার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন। কিন্তু পরে তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

সর্বশেষ খবর