রবিবার, ৫ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

রেকর্ড সংখ্যক মানুষকে নেওয়া হয় আশ্রয় কেন্দ্রে

নিজস্ব প্রতিবেদক

উপকূলীয় অঞ্চলে ১০ বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বেশি মানুষ ঘূর্র্ণিঝড় ফণীর সময় আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করেছে। তবে সাইক্লোন শেল্টারের সংখ্যা অপর্যাপ্ত। বেশির ভাগ শেল্টারে নেই আধুনিকায়নের ছোঁয়া। উদ্বেগ উৎকণ্ঠার রাত কেটেছে আশ্রয় নেওয়া হতভাগ্য মানুষের। সরকার ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের তৎপরতায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে যথাসময়ে দুর্গত মানুষদের নেওয়ার কারণে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি অন্যান্য সময়ের চেয়ে কম হয়েছে। দুর্যোগ ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, দেশের ১৯ জেলার ১৪৭টি উপজেলার ১৩ হাজার ৫০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা উপকূলীয় এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। এই ১৯ জেলায় ৪ হাজার ৭১টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এবার এর বেশির ভাগই প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে শনিবার সকাল পর্যন্ত দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের ১৬ লাখ ৪০  হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুতে আক্রান্ত ১৫ জেলায় আশ্রয়কেন্দ্র ছিল ৩ হাজার ৪৯৪টি। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে তখন ৫ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৩ জনকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব হয়েছিল। পরিস্থিতি উন্নত হলেও পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ সমুদ্র উপকূলভাগে, চর ও দ্বীপাঞ্চলের মানুষের জীবন সুরক্ষায় যথাযথ মানসম্মত এবং বহুমুখী ব্যবহারের সুবিধাসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রয়োজন কমপক্ষে ৮ হাজার। তাছাড়া অধিকাংশ আশ্রয়কেন্দ্রই ভাঙাচোরা, পুরনো ও জরাজীর্ণ। গত ১৯৭০, ১৯৮৫ এবং ১৯৯১ সালের ভয়াল ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের পর নির্মিত হয়। এর মধ্যে কিছু কিছু সাইক্লোন শেল্টার কাম স্কুল এবং বহুমুখী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে নির্মিত হয়। তবে অনেকগুলো গতানুগতিক আদলে  যেনতেন প্রকারে তৈরি করা হয়। জরাজীর্ণ অনেক আশ্রয়কেন্দ্র মানুষের পক্ষে আশ্রয় নেওয়ারও উপযোগী নয়। বরং ঝুঁকিপূর্ণ। প্রায় সারাবছর  সেগুলো প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকছে।

অনেক স্থানেই ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর নিয়মিত সংস্কার, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। এতে করে নাজুক দশায় গিয়ে ঠেকেছে।

ব্যাপক সংখ্যক লোক আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেওয়ার বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মোহসীন গত রাতে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণীর ব্যাপকতা ছিল ব্যাপক। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ফণী আঘাত হানায় দেশের উপকূলীয় প্রায় সব জেলার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসতে পেরেছিলাম। এতে মানুষের সহযোগিতাও ছিল। তিনি বলেন, অন্যান্য সময় ঘূর্ণিঝড়ের আকার বা পরিধি ছোট থাকে। কিন্তু সব সময়ই ঘূর্ণিঝড়ের আভাস পাওয়ার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাই একেক সময় একেক রকম পরিস্থিতি হয়।

সর্বশেষ খবর