সোমবার, ৬ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

চরম বিশৃঙ্খলা ঐক্যফ্রন্টে

অস্তিত্বহীন ২০ দল, নেতাদের নিয়ে কর্মীদের হতাশা, ক্ষুব্ধ খালেদা জিয়া

মাহমুদ আজহার

চরম বিশৃঙ্খলা ঐক্যফ্রন্টে

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক বিএনপিতে কয়েক দিন ধরেই চরম অস্থিরতা চলছে। দলের ভাঙন ঠেকাতে শেষ পর্যন্ত চার এমপিকে শপথ গ্রহণ করাতে বাধ্য হয় বিএনপির হাইকমান্ড। এরপরও কাটছে না দলটির ভিতরকার সংকট। দলীয় কোন্দল মাথাচাড়া দেওয়ায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বা ২০ দল নিয়ে আপাতত ভাবছে না বিএনপি। এমনই এক মুহূর্তে ঐক্যফ্রন্টের আরেক শরিক দল গণফোরামেও চলছে ভাঙা-গড়ার খেলা। কাউন্সিলের ১০ দিনের মাথায় সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু ও  প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিককে গণফোরাম থেকে ‘আউট’ করে দেওয়া হয়।

ড. কামাল স্বপদে বহাল থাকলেও সাধারণ সম্পাদক পদে চমক হিসেবে নিয়ে আসা হয় ড. রেজা কিবরিয়াকে। এ নিয়েও দলের ভিতরে আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। এদিকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খানের ‘শোকজ’ বিতর্কে মন্টু-পথিককে বাদ দেওয়া হয়। যদিও মন্টু-পথিক বলছেন, নিজের ইচ্ছায়ই তারা দল ছেড়েছেন। ফ্রন্টের শরিক দল জেএসডি, নাগরিক ঐক্য ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগও চলছে ঢিমেতালে। তারা নিজের আলোয় আলোকিত হতে পারছে না। অন্যদিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটও এখন প্রায় অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। ফ্রন্ট ও জোটের সার্বিক কর্মকা-ে ক্ষুব্ধ কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব কথা জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টে সমস্যা চলছে, এটা গোপন কিছু নয়। এটাকে বিশৃঙ্খলা বলাটা ঠিক হবে না। সরকার কোনো গণতান্ত্রিক কর্মকা- চালাতে না দিলে এ ধরনের সংকট হয়। তবে এটা থেকে ঐক্যফ্রন্টকে বেরিয়ে আসতে হবে। নইলে গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়বে।’ তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, বিএনপির নেতৃত্বকে গতিশীল করতে কাউন্সিল জরুরি। তাহলে বিএনপি চাঙ্গা হবে।’ তিনি বলেন, ‘গণফোরামে এর আগে কোনো রাজনীতিই ছিল না। ঐক্যফ্রন্টকে ঘিরে এ দলটি জীবিত হয়। তারপরও ভাঙ্গা-গড়া যাই হোক এখন কিছুটা হলেও রাজনীতি হচ্ছে। ফ্রন্টের অন্য দলগুলোও চলছে কোনোমতে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ঐক্যফ্রন্টের কার্যক্রমে বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়াও ক্ষুব্ধ এবং হতাশ। তবে ঐক্যফ্রন্ট ও ২০-দলীয় জোটকে যে কোনো মূল্যে টিকিয়ে রাখতে দলের দায়িত্বশীল নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। কিছু দিন আগে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল দেখা করতে গেলে তাদের এই নির্দেশ দেন বেগম জিয়া। জোট প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, কোনোভাবেই যেন জোটে ফাটল না ধরে। এ জন্য বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের তাদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করতে হবে।

জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর স্থবির হয়ে পড়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ফ্রন্টের প্রধান শরিক দল বিএনপির কাছে ঐক্যফ্রন্টও গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। ভোটের পর ফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির একাধিক বৈঠক হলেও তাতে যোগ দেননি বিএনপির প্রভাবশালী নেতারা। বরং নেতাদের বড় একটি অংশ ঐক্যফ্রন্টের সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠেন। কেউ কেউ ঐক্যফ্রন্ট ভেঙে দেওয়ার কথাও বলেন। দলের সিনিয়র পর্যায়ের নেতারা এমনও বলেন, তারা নির্বাচনে গেছেন বেগম খালেদা জিয়ার ‘মুক্তি’ আন্দোলনের অংশ হিসেবে। কিন্তু আন্দোলন থেকে দৃষ্টি সরিয়ে শুধু নির্বাচনেই ঐক্যফ্রন্ট ব্যস্ত থাকে। এ জন্য ড. কামাল হোসেনকে দায়ী করছেন বিএনপি নেতাদের একটি বড় অংশ। তারা এও বলছেন, সরকারের অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে ড. কামাল ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেন। এতে সরকার ও ড. কামাল সফল বলেও দাবি করেন নেতারা।

সূত্রে জানা যায়, ভোটের আগে ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে নিয়মিত অংশ নিতেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। ঐক্যফ্রন্টের মধ্যম পর্যায়ের নেতাদের নেতৃত্বে আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, মো. শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব ও আবদুস সালাম। কিন্তু ভোটের পর বিএনপির দুই কমিটির কোনো নেতাই ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে অংশ নেননি। ঐক্যফ্রন্টের মহানগর পর্যায়ের বৈঠকে আবদুস সালাম মাঝে-মধ্যে অংশ নিলেও বর্তমানে তিনি কারাবন্দী। এরপর বিএনপি থেকে স্টিয়ারিং কমিটিতে দুজনের নাম প্রস্তাব করা হয়। তারা হলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ড. আবদুল মঈন খান। মাঝে-মধ্যে ড. মইন খানকে স্টিয়ারিং কমিটির মিটিংয়ে দেখা গেলেও যান না গয়েশ্বর রায়।  জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলের এক নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘বিএনপির কারণেই ঐক্যফ্রন্টের কার্যক্রমে ভাটা পড়েছে। প্রধান শরিক দলই যদি বৈঠকে অংশ না নেয়, তাহলে ওই ফ্রন্টের মিটিং অর্থবহ হতে পারে না। তাছাড়া ভোটের পর বিএনপি নিজেদের নিয়েই বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ কারণে স্টিয়ারিং কমিটির মিটিংও আপাতত ডাকা হচ্ছে না।’

তবে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিএনপি ও গণফোরামের বর্তমান পরিস্থিরির কারণে ঐক্যফ্রন্টের সামনে চলার পথ মসৃণ হবে না। এক্ষেত্রে দুই দলকেই নিজেদের সংকট মিটিয়ে ঐক্যফ্রন্টকে কার্যকর করতে হবে। চার এমপির শপথ নিয়ে বিএনপিতে যে সংকট দেখা দিয়েছে, তা খুব একটা কঠিন কিছু নয়। কিন্তু ভিতরে অন্য কোনো সংকট আছে কিনা জানি না। তবে আমরা আশা করছি, তারা এ সংকট কাটিয়ে উঠবেন।’

জানা যায়, ঐক্যফ্রন্ট ও ২০-দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের কর্মকাে  হতাশ মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরাও। বিশেষ করে বিএনপি ও গণফোরামের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে ভালো চোখে দেখছেন না তারা। বিএনপির চার নেতার শপথকে ঘিরে দলের ভিতর ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এমন এক পরিস্থিতিতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চার এমপির শপথে রাজি হন। তাৎক্ষণিক এ সিদ্ধান্ত নিতে তিনি অনেকটা বাধ্য হন। এ কারণে দলের স্থায়ী কমিটির বিষয়টি সম্পর্কে ‘অজানা’ ছিল। পরে অবশ্য তারেক রহমান সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গেই এ নিয়ে কথা বলেন। কিন্তু এরপরও সংকট কাটেনি। তৃণমূল পর্যায় এ নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ হয়। তাছাড়া দলের ভিতরে ছোট একটি গ্রুপ জিয়া পরিবারের এক সদস্যকে নিয়ে পৃথক নেতৃত্বের বলয় সৃষ্টি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বেশ কিছু দিন ধরেই তারা এ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। ওই গ্রুপের নেতারা চান, বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের অনুপস্থিতিতে জিয়া পরিবারের ওই সদস্য দলের হাল ধরুক। কিন্তু এতে রাজি নন বেগম জিয়া, তারেক রহমানসহ বিএনপির নেতা-কর্মীদের বড় অংশই। এ নিয়েও দলের ভিতরে-বাইরে ‘স্নায়ুযুদ্ধ’ চলছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিএনপিতে কোনো সংকট নেই। চার নেতা সম্প্রতি শপথ নিয়েছেন। এতে নেতা-কর্মীদের মধ্যে কিছুটা বিস্ময়ের সৃষ্টি হলেও পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। সবকিছুই ঠিক হয়ে যাবে।’

গণফোরাম সূত্রে জানা গেছে, দলটির ভিতরে সংকট সৃষ্টি হয় দুই নেতার শপথকে ঘিরে। একপর্যায়ে নেতা-কর্মীদের চাপে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদকে বহিষ্কার করে গণফোরাম। এরপর মোকাব্বির খান শপথ নিলে তাকে নিয়ে শুরু হয় নতুন রাজনীতি। শপথ নেওয়ার পর মতিঝিলের চেম্বারে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাকে ‘গেট আউট’ বলে বের করে দেওয়া হয়। কিন্তু তাকে বহিষ্কার বা কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয় গণফোরামের নেতা-কর্মীদের একটি অংশ। দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু এই অংশের নেতৃত্ব দেন। এরপর গণফোরামের কাউন্সিলে মোকাব্বির খান যোগ দেন। এ কারণে অনেকটা রাগে-ক্ষোভে কাউন্সিলে যাননি মোস্তফা মহসীন মন্টু। কাউন্সিলে গেলেও প্রকাশ্যেই গণমাধ্যমে ড. কামালের সমালোচনা করেন দলটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ড. কামাল দ্বিমুখী আচরণ করছেন। মোকাব্বির খান বাসায় গেলে বলেন, সংসদে যাও। অফিসে গেলে বলেন, গেট আউট। ড. কামালের অরাজনৈতিক আচরণের কারণে গণফোরামই করব না।’ এই বলে কাউন্সিল অধিবেশন থেকে বেরিয়ে যান পথিক। হৈচৈ শুরু হয় কাউন্সিল অধিবেশনে। এ সময় দলের আরও কিছু নেতা-কর্মী হতাশ হয়ে কাউন্সিল অধিবেশন ত্যাগ করেন।

পরে মোস্তফা মহসীন মন্টু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এমন কোনো দিন যায়নি, আমি দলের কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিইনি। দলের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়, মোকাব্বির খানকে শোকজ করা হবে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তা করা হয়নি। যেখানে দলের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয় না, সেই দলে থেকেই লাভ কী? তাই আমি নিজে থেকেই দলে থাকব না বলে ড. কামাল হোসেনকে জানিয়ে দিয়েছি।’ নতুন কোনো দল করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা সময়ই বলে দেবে।’

অস্তিত্বহীন ২০ দল : বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটও এখন অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জোটের দুই একটি ‘নামমাত্র’ বৈঠক হয়। এরপর আর জোটের কোনো কার্যক্রম নেই। এ নিয়ে বিএনপির ওপর ক্ষুব্ধ শরিক দলের নেতারা। জোটকে না জানিয়ে বিএনপি নেতাদের শপথ গ্রহণও ভালো চোখে দেখছেন না শরিক দলের নেতারা।

জানা যায়, জোটের শরিক দল জামায়াতকে নিয়ে ২০ দলের ভিতরে নানা প্রশ্ন ওঠে। জোটের প্রধান শরিক দল বিএনপির কোনো কোনো নেতা বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে জামায়াতকে জোটে রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এদিকে জামায়াতের ভিতরেও সংস্কারপন্থি একটি গ্রুপের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে তারাও ব্যাপক সংকটে পড়ে। সব কিছু মিলে জোটের ভিতরে-বাইরেও অস্থিরতা বিরাজ করছে। দলের ভিতরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে বিএনপি এখন জোট নিয়ে কিছুই ভাবছে না।

এ প্রসঙ্গে ২০-দলীয় জোটের শরিক দল বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘জোটের বর্তমান অবস্থা অগোছালো। কল্যাণ পার্টিসহ দু-একটি দল এখন দল গোছানোয় ব্যস্ত। ২০ দলের প্রধান শরিক দল বিএনপির ওপর দিয়ে এখন ঝড়-ঝাপ্টা বয়ে যাচ্ছে। সে জন্য তারা উত্তাল পরিস্থিতি সামাল দিতেই হিমশিম খাচ্ছে। আশা করি, তিন-চার মাসের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। জোটের কার্যক্রম নির্ভর করবে প্রধান শরিক দল বিএনপির ওপর। তবে যে কোনো পরিস্থিতিই হোক না কেন, আমরা বিএনপির কোটি কোটি কর্মী-সমর্থকের অনুভূতির সঙ্গে একমত।’

জোটের আরেক শরিক দলের নেতা বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ২০-দলীয় জোটের বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের কার্যক্রমকে ‘সহমত’ ও ‘সংহতি’ দেওয়া ছাড়া কোনো কাজ নেই। তাছাড়া ভোটের পর দুই দফা বৈঠক হয়। সেখানে ভোট প্রত্যাখ্যান করে সরকার ও সংসদকে অবৈধ ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু হয়েছে উল্টোটা। তাই জোট নিয়ে আর কী বলার আছে।

সর্বশেষ খবর