বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

আলামত মিলল চলন্ত বাসে নার্স ধর্ষণের ক্ষোভ প্রতিবাদ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

আলামত মিলল চলন্ত বাসে নার্স ধর্ষণের ক্ষোভ প্রতিবাদ

কিশোরগঞ্জে নার্স তানিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যার প্রতিবাদে গতকাল নার্সদের মানববন্ধন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

আলামত মিলেছে কিশোরগঞ্জে চলন্ত বাসে নার্স শাহিনুর আক্তার তানিয়াকে (২৩) ধর্ষণের। এ ঘটনায় গ্রেফতার পাঁচজনকে আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। গতকাল কড়া পুলিশি প্রহরায় আসামিদের আদালতে তোলা হয়। অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল মামুনের আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সারোয়ার জাহান ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেক আসামির আট দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে। আসামিরা হলেন বাসের চালক গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সালুয়াটেকি গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে নূরুজ্জামান (৩৯), হেলপার একই উপজেলার বীর উজলি গ্রামের মৃত আবদুল হামিদের ছেলে লালন মিয়া (৩২), একই উপজেলার লোহাদি গ্রামের নজর আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম রফিক (৩০), কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার ভোগপাড়া গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া (৩৮) ও বাজিতপুর উপজেলার নীলক্ষ্মী গ্রামের মৃত আবদুস শহীদের ছেলে বকুল মিয়া ওরফে ল্যাংড়া বকুল (৫০)। এ ঘটনায় নিহতের বাবা গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে বাজিতপুর থানায় মামলা করেন। এ মামলায় বাসের চালক, হেলপারসহ চারজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার রাতেই তানিয়ার লাশ নিজ বাড়ি কটিয়াদী উপজেলার বাহেরচর গ্রামে মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়। তানিয়ার লাশের ময়নাতদন্তে ধর্ষণ ও নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে চলছে ক্ষোভ-প্রতিবাদ। মানববন্ধন করেছেন নার্সরা।

তানিয়াকে ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ভদ্র ও অমায়িক ব্যবহারের কারণে তানিয়াকে এলাকাবাসী একজন ভালো মেয়ে হিসেবেই জানতেন। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তানিয়া ছিলেন সবার ছোট। পরিবারের সদস্যরা জানান, মাত্র চার মাস আগে তানিয়ার মা মারা যান। বাবাকে সান্ত্বনা দিতেই ঢাকা থেকে বাড়িতে আসছিলেন তানিয়া। স্বজন ও এলাকাবাসী আসামিদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি বাস ঢাকার মহাখালী থেকে সোমবার সন্ধ্যার দিকে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুরের উদ্দেশে ছেড়ে আসার পথে এ ঘটনাটি ঘটে। ঢাকার বিমানবন্দর স্টেশন থেকে তানিয়া ওই বাসে ওঠেন। কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী পর্যন্ত বাসটিতে ১৯ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে ১৬ জন যাত্রী নেমে যান। এ সময় বাসটিতে তানিয়া ছাড়াও দুজন পুরুষ যাত্রী ছিলেন। বাসটি কটিয়াদী থেকে ছাড়ার পর অন্য দুটি স্টেশনে দুজন পুরুষ যাত্রীও নেমে যান। এর পরই ধর্ষণের পর তানিয়াকে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পরদিন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী পিরিজপুর বাজারে স্বর্ণলতা পরিবহনের টিকিট কাউন্টার ও স্বর্ণলতার কয়েকটি বাস ভাঙচুর করেন। পুলিশ রাতেই বাসটির চালক, হেলপারসহ পাঁচজনকে আটক করে।

এদিকে এ ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নির্দোষ ব্যক্তিদের জড়িয়ে সুবিধা হাসিলে মাঠে নেমেছে একটি প্রভাবশালী মহল। এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে মূল ঘটনাকে পাশ কাটানোরও চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সর্বশেষ খবর