শনিবার, ১৮ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা
বিশেষ সাক্ষাৎকারে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

দ্রুত বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করাই বড় চ্যালেঞ্জ

আরাফাত মুন্না

দ্রুত বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করাই বড় চ্যালেঞ্জ

সারা দেশে আদালতগুলোয় থাকা মামলাজট দূর করে বিচারপ্রার্থী জনগণের দ্রুত বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করাই এ সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, দেশের আদালতগুলোতে মামলাজট রয়েছে, এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। গত মেয়াদে (দশম সংসদে) যখন আইনমন্ত্রী ছিলাম তখন বিচারাধীন মামলা ছিল ২৮ লাখ। এখন সেই মামলা দাঁড়িয়েছে ৩৪ লাখে। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরে মামলা বেড়েছে ৬ লাখ। তাই মামলাজট নিরসনেই আমরা সবচেয়ে বেশি কাজ করছি। গত সোমবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারে আইনমন্ত্রী বিচারপতি নিয়োগ আইন, বিচারকদের প্রশিক্ষণ, স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস, ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্পসহ বিচার বিভাগের নানা দিক তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : আইনমন্ত্রী হিসেবে বর্তমানে আপনার বড় চ্যালেঞ্জ কী?

আনিসুল হক : দেশের আদালতগুলোর দিকে তাকালে এটা স্বীকার করতেই হবে, মামলার জট রয়েছে। এই জট কিন্তু নিয়মিতভাবেই বাড়ছে। গতবার (দশম সংসদ) যখন আইনমন্ত্রী ছিলাম তখন মামলা ছিল ২৮ লাখ। আর এখন বিচারাধীন মামলা দাঁড়িয়েছে ৩৪ লাখে, মানে গত পাঁচ বছরে ৬ লাখ মামলা বেড়েছে। আমরা যদি পরিসংখ্যান দেখি, সেখানে দেখা যাবে দেশে প্রতিদিন গড়ে ২৩০টি মামলা দায়ের হয়। নিষ্পত্তি হয় ১৩২ থেকে ১৫০ এর মতো। তার মানে গড়ে ৮২টি মামলা অনিষ্পন্ন অবস্থায় থাকছে। এ জন্যই এটা আমাদের দুশ্চিন্তার কারণ। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান, মানুষ দ্রুত বিচার পাক। তার পিতা-মাতাসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যার বিচার পেতে যেমন ২১ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে, অন্যদের যেন বিচার পেতে বিলম্ব না হয় তিনি সেটা চান। সে ক্ষেত্রে আমাদের মামলা জট কমিয়ে এনে মানুষের ত্বরিত বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : মামলাজটের কারণ হিসেবে প্রধান বিচারপতি বিচারক স্বল্পতার কথা বলে আসছেন। এ বিষয়ে কী বলবেন?

আনিসুল হক : আমার মনে হয় প্রধান বিচারপতি বিচারিক আদালতে বিচারক স্বল্পতার কথা বলেছেন। আমিও সেটা মনে করি। আমি আইনমন্ত্রী হওয়ার পর জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে ৭০০ জন নতুন সহকারী জজ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এক দিনে কিন্তু বিচারক তৈরি করা যায় না। একটা নিয়োগ প্রক্রিয়া আছে। আগে নিয়োগ পরীক্ষা একবার হতো। এখন বছরে দুই থেকে তিনবার বিচারক নিয়োগ পরীক্ষা হয়। আমরা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য চেষ্টা করছি।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : বিচারপতি নিয়োগে আইন প্রণয়ন করার জন্য দাবি উঠেছিল। এই আইন করার কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কিনা?

আনিসুল হক : এ আইনের বিষয়ে কাজ চলছে। আশা করছি চলতি বছরের শেষ নাগাদ আইনটি জাতীয় সংসদে পাস করার বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিতে পারব।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ ডিজিটাল করার লক্ষ্যে ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলে আমরা শুনেছি। কবে নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তব রূপ নেবে?

আনিসুল হক : ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্পটি এরই মধ্যে প্রি-একনেকে পাস হয়েছে। এটা দুই হাজার কোটি টাকারও বেশি টাকার প্রকল্প। ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দ্রুত বিচারের জন্য একটি সুষ্ঠু পরিস্থিতি আমরা তৈরি করতে পারব। এ প্রকল্পটির সুফল যেহেতু জনগণ সরাসরি ভোগ করবে, তাই জনগণকেও এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : নিম্ন আদালতের বিচারকদের মানোন্নয়নে কী ধরনের প্রশিক্ষণ নেওয়া হচ্ছে?

আনিসুল হক : আমাদের দেশে এর আগে কখনই বিচারিক আদালতের বিচারকদের বিদেশে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়নি। এই প্রথম গত বছর থেকে আমরা নিজস্ব অর্থায়নে ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটিতে ৫৪০ জন বিচারকের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। সহকারী জজ থেকে জেলা জজ পর্যন্ত বিচারকরা বিদেশে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। প্রশিক্ষণগুলো কী রকম আমি তাও বলে দিই, কিছু কিছু প্রশিক্ষণ ১৫ দিনের, কিছু এক মাসের, কিছু তিন মাসের। নয়টি এক বছরের মাস্টার্স কোর্স এবং ছয়টি তিন বছরের পিএইচডি কোর্স। আমরা এভাবে ৫৪০ জন বিচারককে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। তার মধ্যে ২৭৭ জনের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। জাপানের সঙ্গে আমরা একটি চুক্তি করেছি। জাপানেও বিচারকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন, জাপানের সঙ্গে আমাদের আইনের মিল রয়েছে কিনা, কেন জাপানে প্রশিক্ষণ? জাপানে প্রশিক্ষণটা এ জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে, এই যে আমরা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কথা বলি, সেটা জাপানে খুব কার্যকরী। সেই জিনিসটা তারা যদি দেখে আসেন, তাহলে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয়ে তারা অনেকটা প্রশিক্ষিত হবে। আর আমাদের বিচারকরা প্রশিক্ষিত হলে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। এ ছাড়া আমরা ভারতেও আমাদের বিচারকদের প্রশিক্ষণের জন্য পাঠাচ্ছি। যেহেতু চায়নার সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক অনেকটাই দৃঢ়, তাই আমরা চায়নাতেও প্রশিক্ষণের বিষয়ে ভাবছি। যাতে যখনই কোনো বাণিজ্যিক বিরোধ দেখা দিক, আমাদের বিচারকরা যেন তা সুন্দরভাবে নিষ্পত্তি করতে পারেন।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস গঠন আইনজীবীদের দীর্ঘদিনের দাবি। এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ রয়েছে কিনা?

আনিসুল হক : এক কথায় বলতে আমরা স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এখনকার যে প্রসিকিউশন সার্ভিস আছে, তাতে আমাদের পাবলিক প্রসিকিউটরের বেতন হচ্ছে ৩ হাজার টাকা। নিচের পদগুলোতে যারা রয়েছেন, তারা হয়তো মামলা করলে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পান। আর পাবলিক প্রসিকিউটররা যদি কোনো মামলা করেন তিনি ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা পান। এ অবস্থা তো চলতে দেওয়া যায় না। আপনি যে প্রশ্ন করছেন, স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস করতে গেলে এই বেতনে কেউ আসবে না। সে জন্য আমরা আগামী বাজেট থেকে একটা প্রস্তাব দিয়েছি, আমাদের প্রধানমন্ত্রী তাতে সম্মতি দিয়েছেন। আশা করছি জুলাই থেকেই তাদের বেতন কাঠামোর আওতায় আনতে পারব।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : দক্ষ আইন কর্মকর্তা নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছিলেন, এটা এখন কোন পর্যায়ে রয়েছে?

আনিসুল হক : কাজ চলছে, খুব শিগগিরই এটা আপনারা দেখতে পাবেন।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : বিচারাঙ্গনে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বার বার অভিযোগ তুলেছেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিও তাদের প্রতিবেদনে অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেছে। এ বিষয়ে কী বলবেন?

আনিসুল হক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। আমরা সেই অবস্থানেই আছি। দুর্নীতির ব্যাপারে যদি কোনো অভিযোগ ওঠে, সেখানে আমরা দ্রুত যেটা করি বিভাগীয় তদন্তে পাঠাই। দুদক আছে তারাও দেখে। এখানে যে অভিযোগ অ্যাটর্নি জেনারেল তুলেছেন, সেটা বিশেষভাবে সুপ্রিম কোর্টের দুর্নীতির কথা বলছেন। অধস্তন আদালতও যে দুর্নীতিমুক্ত আমি কিন্তু তাও বলি না, তবে যেখানে দুর্নীতি রয়েছে সেখানেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিচার বিভাগ স্বাধীন, আমি শুধু এটুকুই বলব, সুপ্রিম কোর্টের দুর্নীতির বিষয়ে প্রধান বিচারপতি অবগত হয়ে পদক্ষেপ নেবেন, এটাই আমার বিশ্বাস।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : দলগতভাবে জামায়াতের বিচার হবে কিনা? হলে কবে হবে?

আনিসুল হক : যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে জামায়াতের বিচার নিশ্চয়ই হবে। কেন হবে তার কারণটাও আমি বলছি। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল দুটি মামলার রায়ে বলেছে, জামায়াত দল হিসেবে যুদ্ধাপরাধী। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মতো একটি আদালত যদি এ কথা বলে থাকে, তাহলে ওই দলটির বিচার করা অত্যন্ত প্রণিধানযোগ্য। সেই কারণে আমি আগেও বলেছিলাম, যে আইনটা রয়েছে, সেই আইনের দ্বারা জামায়াতের বিচার করা যায় না। দেখেন আমরা ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর আমাদের সংবিধান পাস হয়েছিল। ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর এটা কার্যকর হয়েছিল। এই সংবিধানের কথা ছিল, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা যাবে না। তার মানে হচ্ছে, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা যে দলগুলো ছিল, তারা ওইদিনই কিন্তু বাতিল হয়ে গিয়েছিল। এরপর ১৯৭৩ সালের জুলাই মাসে করা হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন। ফলে যেই দলটা ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাতিল হয়ে গেছে, তার বিচারের জন্য তো ১৯৭৩ সালে আইন করা যায় না। এ আইনটার মধ্যে দলগতভাবে বিচারের কোনো বিধান ছিল না। সেই বিধান আমরা যোগ করে আইনটি সংশোধন করছি, আইনটি কেবিনেট ডিভিশনে আছে, আশা করছি শিগগিরই এটা মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : বিএনপি থেকে বারবার অভিযোগ করা হচ্ছে, সরকার বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে খালেদা জিয়াকে আটকে রেখেছে, সরকারের ইচ্ছা ছাড়া তার মুক্তি হবে না, বিষয়টি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?

আনিসুল হক : এ বিষয়ে কয়েকটা ফ্যাক্টরস আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। প্রথম কথা হচ্ছে, ২০০৭-২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে ছিল না। এ মামলাটা তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়ের করেছিল খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে। তদন্ত শেষে দুদক অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। অভিযোগপত্র দাখিলের পর এ পর্যন্ত আমার জানামতে ১৪ থেকে ২০ বার খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা হাই কোর্ট ও আপিল বিভাগে গেছেন। প্রত্যেকবার তারা হাই কোর্ট ও আপিল বিভাগে হেরেছেন। শুধু একবার তারা বিচারকের প্রতি অনাস্থা দিয়েছিলেন, সেই আবেদনটা গ্রহণ করেছিল হাই কোর্ট। এটা ছাড়া আর কোনো মামলায় তারা জিতেননি। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শেষ করে বিচারিক আদালতে বিচার শুরু হয়। এরপরও অনেকবার তারা উচ্চ আদালতে গেছেন। তার পরেও বিচারকাজ শেষ হয়েছে, একটি বিচারিক আদালত এতিমের টাকা চুরির দায়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর সাজা দিয়েছে। তারা আপিল করেছেন হাই কোর্টে, বিচার শেষে হাই কোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ দেখেছে, বিচারিক আদালত যে সাজা দিয়েছে, সেটা অপ্রতুল। তারা সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে দিয়েছে। আমার কথা হচ্ছে, বিচার বিভাগ স্বাধীন, সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে বিচারিক আদালত এবং হাই কোর্ট খালেদা জিয়াকে এতিমের টাকা চুরির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছে, এখানে সরকারের কিছুই করার নেই।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির কোনো সম্ভাবনা রয়েছে কিনা? বা তার মুক্তির পথ কী?

আনিসুল হক : প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে তিনি এখনো কোনো আবেদন করেননি। তাই এ বিষয়ে আলোচনায় যেতে চাই না। তবে আমার মনে হয়, হাই কোর্ট বিভাগ সাজা দিয়েছে, আপিল বিভাগ আছে, আদালতের মাধ্যমে তাদের যা বলার তারা বলবেন, আদালত যা করবে আমরা সেটা মেনে নেব।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : আপনার নির্বাচনী এলাকায় মাদক একটা সমস্যা, মাদক নির্মূলে কী ধরনের ভূমিকা রাখতে পেরেছেন?

আনিসুল হক : এলাকার মাদক সমস্যাটা আমার একটা বড় সমস্যা। এ সমস্যাটা আমরা দূর করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। মাদক সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে পেরেছি যদি বলি, তাহলে এটা মিথ্যা কথা হবে। এটা এমনই একটা জিনিস, সম্পূর্ণ নির্মূল করতে সময় লাগে। এ জায়গায়ই এখন আমি নজর বেশি দিয়েছি।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : ছিলেন আইনজীবী, এখন মন্ত্রী। কোন কাজটাকে বেশি উপভোগ করেন?

আনিসুল হক : আইনজীবী ও মন্ত্রীত্বÑ দুটি দুই রকমের কাজ। আমি আইনজীবী পরিবারের লোক। আমার পিতাও আইনজীবী ছিলেন। আমিও আইনজীবী। আইনজীবী পেশায় আমি অভ্যস্ত। ওটা আমার কাছ থেকে কোনো দিনও যাবে না। আজকে আমি এখান থেকে চলে গেলে পরের দিনই আবার আইন পেশা শুরু করতে পারব। আমার তেমন কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু দুটি কাজ দুই ধরনের। এনজয়মেন্টও আলাদা। আমি মনে করি দুটি কাজই আমি এনজয় করি।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : আপনি গত মেয়াদে আইনমন্ত্রী থাকার সময় নিবন্ধন পরিদফতরকে অধিদফতরে উন্নীত করেছেন। এর পরেও এই নিবন্ধন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির কথা শোনা যায়। এ বিষয়ে কী বলবেন?

আনিসুল হক : আমি বলব না, রেজিস্ট্রেশন বিভাগে আগে দুর্নীতি ছিল না। তবে তাদের আবার দোষারোপও বেশি করা হতো। সে ক্ষেত্রে তারা যেটা চাচ্ছিলেন, তাদের আরেকটু সম্মান দেওয়া হোক। জননেত্রী শেখ হাসিনা কিন্তু মানুষকে সম্মান দেন। সেই নীতি অনুসারে, তাদের দাবি অনুযায়ী পরিদফতর থেকে অধিদফতরে উন্নীত করেছি। এতে তাদের মর্যাদা বেড়েছে। আগে তাদের পদ ছিল তৃতীয় শ্রেণির। এখন প্রথম শ্রেণির। তাদের মর্যাদা যেমন বৃদ্ধি করা হয়েছে, তাদের দায়িত্বও কিন্তু বেড়ে গেছে। মর্যাদার সঙ্গে কিন্তু সম্মান রক্ষার দায়িত্বটাও বর্তায়। এগুলো করা হয়েছিল তারা যেন তাদের সম্মান এবং মর্যাদাটা রক্ষা করেন। আমি এটা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি, আগে যেমন দুর্নীতি সাব-রেজিস্ট্রারদের মধ্যে দেখা যেত, এখন কিন্তু সেই দুর্নীতি নেই। দুর্নীতি নির্মূল হয়েছে আমি সেটাও বলব না, তবে কিছুটা শৃঙ্খলা এসেছে।

সর্বশেষ খবর