শনিবার, ২৫ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে

সরকার ‘ছলচাতুরী করে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক রেখে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। গতকাল সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুটি মামলায় কীভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে, সবাই জানে। সঙ্গে সঙ্গেই জামিন হওয়ার কথা ছিল। অ্যাটর্নি জেনারেল অসুস্থ বলে প্রথমে বললেন, উনি অসুস্থ। পরে বললেন, উনি আরেকটা কাজে ব্যস্ত। সরকার ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়ে বেগম জিয়ার আইনগত সুযোগের প্রাপ্যতা উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিলম্বিত করছে। আদালতের ওপর হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে। দ্যাট ইজ ইনটেনশনাল, পলিটিক্যাল  মোটিভেটেড। আজ সরকার জনগণের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এভাবে আটক রেখে তাকে চিকিৎসা না দিয়ে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’ সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, আমীর খসরু মাহমুদ  চৌধুরী,  ভাইস  চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী ও আবদুল কাইয়ুম উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যে কারণে বিএনপি চেয়ারপারসনকে সাজা দেওয়া হয়েছে সেই মামলায় তো তিনি জামিনযোগ্য। জামিন পেতে পারেন এবং সবাই পেয়েছেন। এই ব্যতিক্রম। আমাদের প্রশ্নটা ওই জায়গায়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘সরকার কী দেশনেত্রীকে এভাবে বিনা চিকিৎসায় কারাগারে মেরে ফেলতে চায়, তাকে হত্যা করতে চায়। আমাদের একটাই চাওয়া-তার (খালেদা জিয়া) যেটা প্রাপ্য জামিন, সেটা আমরা চাই। আমরা উচ্চ আদালতের কাছে এটা প্রত্যাশা করি। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।’ অন্যথায় বেগম জিয়ার স্বাস্থ্যগত কোনো অবনতি হলে এর দায়-দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি  দেন তিনি। বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আারও খারাপ হয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আগে ছিল ম্যাডামের বাম সোল্ডার  ফ্রোজেন এখন তার ডান সোল্ডার  ফ্রোজেন হতে যাচ্ছে।

একুয়েট পেইন হচ্ছে তার। তার হাতগুলো নাড়াতে পারছেন না। পা তিনি সোজা থাকলে বাঁকা করতে পারছেন না। তিনি এখন কারও সাহায্য ছাড়া বিছানা  থেকে উঠতে পারছেন না। তাকে টয়লেটে যেতে হলে সাহায্য নিতে হয়। পিজিতে  যেখানে তাকে রাখা হয়েছে সেখানেও কিন্তু মুভমেন্ট খুবই সীমিত। অর্থাৎ ঘর-টয়লেট ও  ছোট্ট  স্পেস আছে। তার এখন দরকার মুভমেন্ট। তার হাঁটা দরকার, সেগুলো তিনি করতে পারছেন না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যতটুকু জেনেছি, বেগম জিয়ার মাসেলসগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। ক্রমেই অকেজো হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সরকারকে বার বার বলছি, তাকে উন্নত চিকিৎসা দিতে হবে। আমরা পিজিতে আনার ব্যাপারেও বলেছিলাম, তিনি সেখানে আসতে চাচ্ছেন না। তিনি বাইরে থেকে চিকিৎসা করতে চান সেই সুযোগটাও তাকে দেওয়া হচ্ছে না।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেগম জিয়া অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিকসে ভুগছেন। আমার কাছে যে তথ্য আছে, এখন তিনি ইনসুলিন নিচ্ছেন। ইনসুলিন নেওয়ার পরেও তার ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এখন ফাস্টিং সুগার ১০/১১ এর উপরে থাকে, ১৫/১৬ থাকে এবং আরও বেশিও থাকে। এই অবস্থার ক্ষেত্রে একজন বয়স্ক মহিলা কারাগারে বন্দী তাকে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিকসে তার পরিণতি কী হতে পারে সেটা আমরা সবাই কমবেশি বুঝি। একই সঙ্গে তার যে রিউমেটিকস আর্থ্যারাইটিস যেটা আছে সেটাও অনেক বেড়ে গেছে।’

সর্বশেষ খবর