সোমবার, ৩ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিস্ময়কর রেকর্ড সাকিবের

আসিফ ইকবাল

বিস্ময়কর রেকর্ড সাকিবের

মাশরাফি, তামিম, মুশফিকরা জানেন, মাঠের চৌহদ্দিতে সাকিব আল হাসান এক এবং অদ্বিতীয়। মাঠের বাইরের আর মাঠের ভিতরের সাকিবের পার্থক্য আকাশ-পাতাল। অতুলনীয় সাকিব চাইলেই ভোল পাল্টে দিতে পারেন ম্যাচের। চাইলেই ব্যাটকে খাপ খোলা তলোয়ার বানিয়ে কিংবা বল হাতে মায়াবী বিভ্রম ছড়িয়ে পাল্টে দিতে পারেন ম্যাচের চিত্র। এতসব গুণ যে ক্রিকেটারের, নিশ্চিত করেই তিনি অতিমানব। অবশ্যই বাংলাদেশ ক্রিকেটের ‘অতিমানব’ সাকিব আল হাসান। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হিসেবে বিশ্বকাপ খেলতে নেমেই প্রমাণ করেছেন কেন তাকে বলা হয় ১৮ কোটি ক্রিকেটপাগল বাংলাদেশির ‘প্রাণভোমরা’। আগের পাঁচ আসরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাফল্য কোয়ার্টার ফাইনাল। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের মতো ক্রিকেট পরাশক্তিকে পেছনে ফেলে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছিল। চার বছরের ব্যবধানে টাইগাররা এখন অনেক পরিণত। তাই এবারের স্বপ্ন আকাশছোঁয়া। বিশ্বজয়ের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে গতকাল ওভালে নেমেছিলেন সাকিবরা। লাল-সবুজ পতাকায় ঘেরা ওভালে প্রোটিয়াদের হারিয়ে স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে গেছে আরও এক ধাপ। ‘দ্য চোকার্স’ খ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছে টাইগাররা। কিন্তু সবাইকে আড়ালে ফেলেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে দুর্দান্ত, নজরকাড়া ও চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্সে গড়েছেন বিরল রেকর্ড। ক্রিকেট বিশ্বের একমাত্র ক্রিকেটার সাকিব যিনি টানা চার বিশ্বকাপের নিজ দেশের সূচনা ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করে ইতিহাসের পাতায় চিরস্থায়ী হয়েছেন। শুধু তাই নয়, নিজের করে নেওয়া ম্যাচটিতে আবার ২৫০ উইকেট নেওয়ার মাইলফলক গড়েছেন। মাশরাফির উইকেট ২৬৫টি। একমাত্র টাইগার ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ৫ হাজার রান ও ২৫০ উইকেট নিয়ে পেছনে ফেলেছেন জ্যাক ক্যালিসের মতো ক্রিকেটারকে। ১৩ বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করা সাকিব এখন বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার। প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন ২০০৭ সালে। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ। ঐতিহাসিক জয়ের ম্যাচে খেলেছিলেন ৮৬ বলে ৫৩ রানের ইনিংস। চার বছর পর ২০১১ সালে ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে সূচনা ম্যাচে ফের হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ৫৫ বলে ৫০ রানের প্রত্যয়ী ইনিংস খেললেও হেরেছিল টাইগাররা। ২০১৫ সালে ক্যানবেরায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ী ম্যাচে সহায়তা করেছিল তার ৫১ বলে ৬৩ রানের ঝড়ো ইনিংসটি। চার বছর পর একই ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন সাকিব। ইংল্যান্ডের ওভালে গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৭৫ রানের ইনিংসটি খেলেন ৮০ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায়। ব্যাট ও বল হাতে উজ্জ্বল পারফরম্যান্সই বারবার বলে দেয়, কেন সাকিব বিশ্বসেরা। কেন তিনি দলের অন্য ক্রিকেটারদের চেয়ে আলাদা এবং কেন তিনি অতিমানব। কাল ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইতিহাস গড়া জয়ে ব্যাটিংয়ে ৭৫, বোলিংয়ে ১ উইকেট এবং ফিল্ডিংয়ে এক ক্যাচ নিয়ে ফের প্রমাণ করেছেন, চাইলেই তিনি পারেন ম্যাচের ভোল পাল্টে দিতে।

সর্বশেষ খবর