সোমবার, ৩ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

জঙ্গিদের আইনি সহায়তা না দেওয়ার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক

জঙ্গিদের আইনি সহায়তা না দেওয়ার আহ্বান

গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর গত তিন বছরে গ্রেফতার হওয়া পাঁচ শতাধিক জঙ্গির অর্ধেকের বেশি জামিনে বেরিয়ে গেছে। জঙ্গিবাদকে অন্যান্য অপরাধের মতো আইনি সহায়তা দিলে তা হবে আত্মঘাতী। জঙ্গিদের কোনো আইনি সহায়তা না দিতে আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গৃহীত নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। আইনজীবীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে র‌্যাব ডিজি বলেন, ‘টাকা দিলেই জঙ্গিদের পক্ষে আদালতে দাঁড়াবেন না। চুরি-ডাকাতি, ছিনতাইয়ের মতো অন্য ৮-১০টি অপরাধ আর জঙ্গিবাদকে এক করে দেখবেন না, দেখলে তা হবে আত্মঘাতী। জঙ্গিরা আদালতেও হামলা করেছে। কেউ তাদের আওতার বাইরে নয়। আপনারা যাদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে জামিনের ব্যবস্থা করেছেন, তাদের আবার কোর্টে হাজির করুন, সমস্যা নেই। কিন্তু তারা প্রায় সবাই পলাতক। তাই আপনাদের প্রতি অনুরোধ, জঙ্গিদের বিষয়টাকে আপনারা ভিন্নভাবে দেখবেন।’ আইনের ফাঁক গলে জঙ্গিরা বের হয়ে যাচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আইনের কোনো সমস্যা নেই, আইন প্রয়োগে সমস্যা থাকতে পারে। বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও জাতীয় তিন পর্যায়েই জঙ্গি হামলার ঝুঁকি রয়েছে। তবে নিজস্ব গোয়েন্দাদের পাশাপাশি অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। অপতৎপরতা বা যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগে আমরা প্রস্তুত আছি।’ তিনি বলেন, ‘জামিন পেয়ে পলাতক থাকা জঙ্গিরা আবারও সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। তবে সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, তারা বেশি দিন এ তৎপরতা চালাতে পারবে না। ২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫১২ জন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৩০০ জন জামিনে আছে, যাদের অধিকাংশই পলাতক।’ র‌্যাবপ্রধান বলেন, রমজানের শুরু থেকেই দেশের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলো ঘিরে আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বাস, ট্রেন ও লঞ্চ টার্মিনালে র?্যাবের ১৫টি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। সড়কে যানজট ও দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে দেশজুড়ে ৪২টি স্থানে র‌্যাবের নজরদারি রয়েছে। এবার সড়ক ও নৌপথে ঈদযাত্রা স্বাভাবিক থাকলেও রেলপথে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ঈদে বাড়িতে যাত্রা এখনো স্বস্তিদায়ক রয়েছে। আশা করছি ফেরার যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হবে। আমরা চাই না সড়কে কোনো প্রাণহানি ঘটুক। সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে ঈদ উৎসবটি নিরাপদ করার ব্যবস্থা করা হবে। দেশজুড়ে র‌্যাবের সর্বোচ্চ উপস্থিতি প্রদর্শনের চেষ্টা করা হচ্ছে। ঈদে ফাঁকা শহরগুলোতে যে কোনো অপরাধ রুখতে আমাদের আলাদা পরিকল্পনা রয়েছে। অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে দেশবাসীর জন্য ঈদ উদ্্যাপন নিরাপদ করতে পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছে র‌্যাব।’

সর্বশেষ খবর