শনিবার, ৮ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঈদের চাঁদ নিয়ে যত নাটক

নিজস্ব প্রতিবেদক

পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা নিয়ে তৈরি ফের এক বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েছিল দেশ। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর চাঁদ দেখা না যাওয়ার ঘোষণাটি পাল্টে যায় রাত এগারোটায়। প্রায় মধ্য রাতে দেশের মানুষকে জানানো হয় যে, চাঁদ দেখা গেছে। ঘোষণা আসে বুধবার ঈদ। এর মধ্যে দেশের বেশিরভাগ মসজিদে হয়ে গেছে তারাবি নামাজ। প্রস্তুতি নেওয়া হয় ত্রিশতম রোজা পালনের। কিন্তু চাঁদ দেখা যাওয়ার নতুন খবরে পাল্টে যায় চিত্র। প্রস্তুতি শুরু হয় ঈদুল ফিতর উদযাপনের। এর আগে বিশ বছর আগে ১৯৯৯ সালে একই ধরনের পরিস্থিতিতে পড়েছিল দেশ। জানা যায়, গত মঙ্গলবার মাগরিবের নামাজের পর পরই বৈঠকে বসে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি। পরে রাত ৮টা ৫০ মিনিটে চাঁদ দেখা কমিটির পক্ষ থেকে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আবদুল্লাহ দেশের আকাশে শাওয়ালের চাঁদ দেখা যায়নি বলে ঘোষণা দেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, আবহাওয়া অধিদফতর, মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দেশের কোথাও থেকে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। এসব প্রতিবেদন আমলে নেওয়ার পাশাপাশি হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ মোহাম্মদ শফীসহ বেশ কয়েকজন আলেম-ওলামার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বৃহস্পতিবার ঈদ উদযাপনের ঘোষণা দেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। তবে রাত ১১টায় ধর্মমন্ত্রীর নেতৃত্বে ফের বৈঠকে বসে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি। সেই বৈঠকে বৃহস্পতিবার নয় বুধবার পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। রাত ১১টা ১৫ মিনিটে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির দ্বিতীয় বৈঠক শেষে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন জায়গায় শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। বেশ কয়েকজনের চাঁদ দেখার সাক্ষ্য নিয়ে চাঁদ দেখা কমিটির নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার সারা দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের সব আলেম-ওলামার সঙ্গে যোগাযোগ করে আমরা জেনেছিলাম যে, দেশের কোথাও থেকে চাঁদ দেখা যায়নি। সেই কথার ভিত্তিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ঈদুল ফিতর পালিত হবে বৃহস্পতিবার। তবে রাতে জেলা প্রশাসক কুড়িগ্রাম ও পাটগ্রামের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আমাদের জানিয়েছেন, সেখানে কয়েকজন চাঁদ দেখেছেন। লালমনিরহাটের পাটগ্রামে ৭ জন সরাসরি চাঁদ দেখছেন এবং আরও ১১ জন দেখেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জেলা প্রশাসক। এ ছাড়াও বেশ কয়েকজন আলেম-ওলামা চাঁদ দেখার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এসব খবর জানার পর পর্যালোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বুধবার পবিত্র ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, প্রথম দিকে চাঁদ দেখার খবরটি পাওয়া যায়নি। পরে রাত ১০টা ১৫ মিনিটে বিভিন্ন জায়গা থেকে এ খবর আসা শুরু হয়। ইতোমধ্যে অনেক জায়গায় তারাবি হয়ে গেছে, আমরাও বায়তুল মোকাররম মসজিদে তারাবি পড়ার পরই চাঁদ দেখার খবর পেয়েছি। সারা দেশের সাধারণ মানুষ দুই ধরনের ঘোষণায় যে বিভ্রান্তিতে পড়ল, এর দায়ভার কে নেবে? এর জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখানে দায়ভারের কী আছে, আমি বুঝলাম না। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থে নয়, শরিয়ত মোতাবেক কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী যা উচিত, আমরা সেটাই আগে ঘোষণা দিয়েছিলাম। আর নতুন করে আমরা যে ঘোষণা দিচ্ছি, সেটাও শরিয়ত মোতাবেক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর