বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন নিরুদ্দেশ করা হয়েছে। এখানে চলছে গণতন্ত্রের এক অন্ধকারময় পর্ব, এখানে মানুষের বাকস্বাধীনতা নেই। দেশে হত্যা, ধর্ষণ ও বিচারবহির্ভূত হত্যার হিড়িক চলছে। প্রতিদিন গড়ে পাঁচজন করে মানুষ এই বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হচ্ছে দেশে। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এবং তার আগে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আহমেদ এসব কথা বলেন। বিএনপির এই মুখপাত্র দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বলেন, শুধু মে মাসের প্রথম আট দিনেই ৪১ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে পাঁচজন মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হচ্ছে। হত্যা, ধর্ষণের এহেন গুরুতর অপরাধের ঘটনাগুলো সমাজে, গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড়ের সৃষ্টি হলেও সরকারের টনক নড়ে না। ‘পেট্রলবোমা কালচার আওয়ামী লীগের আবিষ্কৃত’ আখ্যা দিয়ে রিজভী আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেরা অপকর্ম করে অন্যের ওপর দায় চাপায়। বিএসএমএমইউতে পেট্রলবোমা সদৃশ্য বোতলও ক্ষমতাসীন মহলের ষড়যন্ত্রের অংশ এবং এটা কী উদ্দেশ্যে করা হয়েছে এটাও দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার। সুতরাং জনগণের ওপর জবরদস্তি করে মিথ্যা কথার মায়াজাল বিস্তার করা যায় না।

মিডনাইট নির্বাচন, নাগরিক স্বাধীনতা হরণ, রক্তপাতের সংস্কৃতি চালু রেখে আওয়ামী নেতাদের প্রাত্যহিক জীবন থেকে সৌজন্যবোধ ও হিতাহিত জ্ঞান লোপ পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, ফেনীর নুসরাত জাহানকে হাত-পা বেঁধে পুড়িয়ে মারার সঙ্গে যারা প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে জড়িত তাদের একজন ফেনীর সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন। পরোয়ানা থাকার পরও ওই ওসি এখন ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। এ ঘটনার জন্য তিনি সরকারকে দায়ী করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) বোমাসদৃশ বস্তু পাওয়া নিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের বক্তব্যের সমালোচনা করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, তথ্যমন্ত্রী অবিরল মিথ্যাচার করছেন। তথ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে আহমেদ বলেন, বিএসএমএমইউ একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ওই এলাকায় তো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ গোয়েন্দাদের সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকার কথা। যেখানে সরকারি অনুমোদন ছাড়া কাকপক্ষীও ঢুকতে পারে না, সেই বিএসএমএমইউতে বোমাসদৃশ বোতল উদ্ধারের ঘটনায় তথ্যমন্ত্রী এখন বিএনপির যোগসূত্র খুঁজছেন। এ জন্যই বলেছি যে, আওয়ামী নেতারা চরম মিথ্যাচার দিয়ে নিজেদের ষড়যন্ত্র ঢাকতে পারঙ্গম।