নরসিংদীতে ফুলন রানী বর্মণ (২২) নামে এক কলেজছাত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে তার শরীরের ২০ ভাগ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। গুরুতর অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গত রাত ৯টায় নরসিংদী পৌর এলাকার বীরপুরে এ ঘটনা ঘটেছে। দগ্ধ ফুলন বর্মণ বীরপুরের যোগেন্দ্র বর্মণের মেয়ে। তিনি নরসিংদীর উদয়ন কলেজ থেকে গত বছর এইচএসসি উত্তীর্ণ হয়ে কোথাও ভর্তি হননি। পুলিশ ও দগ্ধ কলেজছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মামার সঙ্গে দোকানে কেক আনতে যান ফুলন। মামা কেক কিনে দিয়ে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। ফুলন বাড়ির আঙিনায় পৌঁছলে অজ্ঞাত দুই দুর্বৃত্ত তার হাত-মুখ চেপে ধরে পাশের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। পরে কেরোসিন ঢেলে শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। ফুলনের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন (বিপিএম) ও সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দুজ্জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তপন মল্লিক বলেন, হঠাৎ ডাকচিৎকার শুর হয়। ঘর থেকে বের হয়ে দেখি, একটা মেয়ের শরীরে আগুন জ্বলছে। পাশে মহিলারা দেখছে। পরে একটি ভেজা চট নিয়ে তার শরীরে চাপা দিয়ে আগুন নেভানো হয়। অন্য প্রত্যক্ষদর্শী সঞ্জিত বর্মণ বলেন, ‘আগুন লাগানোর পর ফুলন চিৎকার করছিলেন। তার মাথার সব চুল পুড়ে যায় এবং শরীরের পেছনের দিকে বেশি পুড়েছে।

আগুন নিভিয়ে তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে পাঠান। তার শরীরের ২০ শতাংশ পুড়েছে বলে চিকিৎসকরা আমাদের জানিয়েছেন।’

পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন বলেন, ‘মেয়েটি কেক নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে দাহ্য পদার্থ দিয়ে কে বা কারা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনাস্থল থেকে কেরোসিনের একটি বোতল, দিয়াশলাই বক্স, তার শরীরের ওড়না, চুলসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছি। একই সঙ্গে নেপথ্যের কারণ ও জড়িতদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।’ তিনি তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করার জন্য এলাকাবাসীকে অনুরোধ জানান।