শনিবার, ১৫ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা
কেমন হলো বাজেট : বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়ন

বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির নির্দেশনা নেই

-মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির নির্দেশনা নেই

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরেই আয় বৈষম্য বাড়ছে। সরকারি হিসেবেই ২২ শতাংশের বেশি দারিদ্র্য সীমার নিচে। ১০ বছর ধরে দারিদ্র্য বিমোচনের হার কমছে। বেসরকারি বিনিয়োগ কীভাবে বাড়বে তার নির্দেশনা নেই। বাজেটে ব্যাংকিং খাতে নতুন লুটপাটের সুবিধা দেবে। গতকাল রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বাজেট পর্যালোচনার অংশ হিসেবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। মির্জ্জা আজিজ বলেন, বাজেটে কৃষি বীমা এবং তরুণদের জন্য বিশেষ ফান্ড গঠন করার সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। তবে এ দুটি সিদ্ধান্ত ছাড়া সবই গড়পড়তা আলোচনা এবং সেকেলে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বাজেটের ত্রুটি হচ্ছে, যা লক্ষ্যমাত্রা থাকে, তা বাস্তবায়ন না হওয়া। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে বিশেষ কোনো বার্তা নেই। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগে যে স্থবিরতা, তা দূরীকরণে সুস্পষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা নেই। ঠিক আগেও ছিল না। অথচ এ খাতের বিনিয়োগ বাড়ানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। ব্যাংকিং খাতের সমস্যা দীর্ঘদিনের। হাজার হাজার কোটি টাকা উধাও হয়েছে ব্যাংক থেকে। মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলছে। এ খাতের সমস্যা দূরীকরণে কোনো নির্দেশনা রাখা হয়নি এবারের বাজেটে। তার মানে সমস্যা জিইয়েই থাকছে। অনিচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।

কিন্তু ইচ্ছাকৃত আর অনিচ্ছাকৃত খেলাপি পার্থক্য কীভাবে করবে। এটা ব্যাংক খাতে নতুন লুটপাটের সুবিধা দেবে। আদালতে রিটের কারণে যে টাকা আটকে আছে তা কীভাবে আদায় হবে। ব্যাংকিং কমিশন করার দরকার নেই। দৃঢ়ভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক পদক্ষেপ নিলেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। সাবেক উপদেষ্টা বলেন, ক্রমবর্ধমান আয় বৈষম্য কমিয়ে আনা এবং দারিদ্র্য বিমোচনে সুস্পষ্ট কোনো বার্তা নেই। অথচ টেকসই অর্থনীতি গড়ে তুলতে হলে আয় বৈষম্য নিয়ে এখনই উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা। তাছাড়া বাংলাদেশ এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ এবং দরিদ্রই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ ও আওতা বাড়ানো হয়েছে। এটা ভালো দিক। কিন্তু এ খাতে অনেক অনিয়ম হয় এটা সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত। তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য ১০০ কোটি টাকার বরাদ্দ কীভাবে ব্যয় হবে তার দিকনির্দেশনা নেই। কৃষি বীমা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি করা হয়েছে। কে প্রিমিয়াম দেবে। কীভাবে চলবে সে সম্পর্কে স্পষ্ট পরিকল্পনা থাকতে হবে।

সর্বশেষ খবর