শনিবার, ১৫ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা
কেমন হলো বাজেট : বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়ন

মধ্যবিত্তের জন্য কিছু নেই

-সালেহ উদ্দিন আহমেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

মধ্যবিত্তের জন্য কিছু নেই

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ মধ্যবিত্তদের জন্য কিছুই রাখা হয়নি। বাজেটে মনে হয়েছে গ্রোথ ফার্স্ট, ডিস্ট্রিবিউশন লেটার। অর্থাৎ আগে প্রবৃদ্ধি পরে বণ্টন। কিন্তু সুষ্ঠু বণ্টনের ব্যবস্থা না থাকলে প্রবৃদ্ধি যতই হোক তা সাধারণ মানুষের কাছে যাবে না। এই বাজেটের প্রভাবে সব কিছুরই দাম বাড়বে। তাই দরিদ্র, মধ্যবিত্তদের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। গতকাল রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বাজেট পর্যালোচনার অংশ হিসেবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট ধারাবাহিক। এডিপি বাস্তবায়ন, রাজস্ব আহরণের দিকনির্দেশনা এই বাজেটে নেই। বলা হলো রাজস্ব আদায় করা হবে। কিন্তু কীভাবে এত টাকা আদায় করা সম্ভব হবে। আর যে রাজস্ব আদায়ের কথা বলা হয়েছে পরোক্ষ করের পরিমাণ বেশি। ফলে মধ্যবিত্তদের কাছ থেকেই আদায় করা হবে। তিনি বলেন, বাজেটে কিছু পণ্যের দাম বাড়ে, কিছু পণ্যের দাম কমে। বাস্তবতা একটি পণ্যের দাম বাড়লে অন্যসব পণ্যের দাম বেড়ে যায়। এবারও তাই হবে। দাম বাড়বে না বলা হচ্ছে কিন্তু বাস্তবে একাধিক পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এডিপি বাস্তবায়নের জন্য নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা থাকা দরকার। মন্ত্রণালয়গুলোতে কাজের নির্দেশনা থাকা, প্রকল্প কী হবে, কীভাবে হবে এসব নিয়েও নির্দেশনা থাকা উচিত। কিন্তু দেখা যায় অর্থ ব্যয় করার জন্য অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্প পরিচালক ঢাকা থাকেন। এসব নিয়ে নানা ধরনের অনিয়ম হয়। সেটা কীভাবে বন্ধ করা যাবে এর দিকনির্দেশনা থাকা উচিত ছিল বাজেটে। তিনি আরও বলেন, বাজেটে গার্মেন্ট খাতের জন্য প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এটা ভালো। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খাতের জন্য সে অর্থে কিছু করা হয়নি। পাট শিল্প, চামড়া শিল্প অন্যতম। এই দুটি খাতের পুরো উৎপাদন প্রক্রিয়াটি বাংলাদেশের। কিন্তু কিছুটা অবজ্ঞা করা হয়েছে এ দুটি খাতে। এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে হলে বিশেষ সুবিধা দেওয়া উচিত। স্বাস্থ্য খাতের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়নি। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য সাধারণ রোগের চিকিৎসাই দেওয়া হবে। আর কিডনি, ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য দরিদ্র মানুষ সেবা পাবে না। তাহলে কি তাদের এই রোগ হয় না। দেশের বিপুল পরিমাণ মানুষ চিকিৎসা নিতে গিয়ে দরিদ্র হয়ে যাচ্ছেন। এসব রোগের জন্য বিনা চিকিৎসায় মারা যান। এই বাজেটে বিশেষ কোনো বরাদ্দ নেই। তিনি বলেন, কৃষি খাতে শস্য বীমার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেটা খুবই জটিল। কৃষকরা প্রিমিয়াম দিতে পারবে না। সেটা কীভাবে পরিশোধ করা হবে সে সম্পর্কে কোনো নির্দেশনা নেই। এ ছাড়া শস্য বীমার চেয়ে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার কোনো প্রস্তাব বাজেটে নেই।

সর্বশেষ খবর