রবিবার, ১৬ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা
কেমন হলো বাজেট

গুটিকয় স্বার্থান্বেষীর স্বার্থ হাসিলের ব্যবস্থা

------- ড. কামাল হোসেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রস্তাবিত বাজেটকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করেছে গণফোরাম। গণফোরাম মনে করে, জনগণের স্বার্থহানি ঘটিয়ে গুটিকয়েক ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির স্বার্থ হাসিলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে দলটির পক্ষ থেকে এ কথা বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া। গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন গণফোরাম নেতা আবদুল্লাহ আবু সাঈদ, নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমসা-আ আমীন, ভাইস প্রেসিডেন্ট মহসিন রশিদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

কামাল হোসেন বলেন, বাজেটের মধ্যে কী ভালো-মন্দ আছে তা জনগণকে জানানো খুবই দরকার। জনগণ হলো ক্ষমতার মালিক। বাজেট দিয়ে জনগণ সরকারের কাজকর্মকে মূল্যায়ন করতে পারে। তারা অর্থনীতিকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারছে কিনা, জনগণের স্বার্থকে বিবেচনা করা হয়েছে কিনা, অথবা উপেক্ষা করা হয়েছে কিনা তা জানতে পারে। তিনি বলেন, আমরা চাই, জনগণ সরকারের দুর্নীতির ব্যাপারে সক্রিয়ভাবে সোচ্চার হবে এবং সরকার পরিবর্তনের জন্য গণতান্ত্রিক উপায়ে যা কিছু করার আছে সবকিছু করবে। লিখিত বক্তব্যে রেজা কিবরিয়া বলেন, এই বাজেটকে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করছি। কারণ এটি জনগণের বাজেট নয়। কয়েকটি শক্তিশালী ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর জন্য এই বাজেট দেওয়া হয়েছে। যারা বাজেটটি প্রণয়ন করেছে তাদের দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা নেই। পাকিস্তান আমলে বলা হতো ২২টি পরিবার। এখন কতগুলো পরিবার আছে জানি না। কিন্তু আমরা যদি ঋণখেলাপিদের হিসাব দেখি, বিদ্যুৎ সেক্টরের কোনো হিসাবে বোঝা যাবে। সরকার থেকে এগুলোর কৈফিয়ত একদিন জনগণকে দিতে হবে। অনেকগুলো পরিবার এখানে জড়িত থাকতে পারে। তিনি আরও বলেন, বাজেটে অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় কমাতে হবে। ক্ষমতাধর গোষ্ঠীসমূহকে অসন্তুষ্ট করে হলেও কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বর্তমানে  দেশকে যারা লুটেপুটে খাচ্ছে এবং অবৈধভাবে অর্থ বিদেশে পাচার করছে বাজেটটি তাদের সুবিধার জন্য তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে  দেশে ১ কোটি ৮০ লাখ কৃষক সংকট মোকাবিলা করছে। তার মূল কারণ সরকারের অব্যবস্থাপনা ও অদক্ষতা। বাজেটে তার সমাধানে  কোনো প্রস্তাবনা নেই। এই বাজেটে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বৈষম্য, দারিদ্র্য ও বেকারত্বের মতো গুরুতর সমস্যা মোকাবিলার কোনো উদ্যোগ নেই। তিনি বলেন, অর্থনীতির সব সূচকই নির্দেশ করছে যে, অর্থনীতিতে শিগগিরই নিকট অতীতের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার  নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন। এ বাজেটে অর্থনীতি এখন সত্যিকারের  যে বিপদের সম্মুখীন সে সম্পর্কে অজ্ঞতা প্রকাশ পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই প্রতিনিধিত্বহীন ও অনির্বাচিত সরকারের বাজেট নাগরিকদের ইচ্ছার প্রতিফলন নয়। প্রতিনিধিত্বশীল সরকার গঠনের লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে দেশে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সর্বশেষ খবর