শিরোনাম
রবিবার, ১৬ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা
কেমন হলো বাজেট

সবই ভালো দেখছে এফবিসিসিআই

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থায়নের ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাতের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে বৈদেশিক উৎস, অবকাঠামো তহবিল ও বন্ডসহ অন্যান্য উৎসের ওপর জোর দেওয়ার তাগিদ দিয়েছে এফবিসিসিআই। সংগঠনটি বলেছে, এই বাজেট জনমুখী ও ব্যবসাবান্ধব। নীতিমালায় হয়রানিমুক্ত ব্যবস্থাপনা ও সঠিক অটোমেশনের মাধ্যমে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের উদ্যোগ এবং সিঙ্গেল ডিজিট বা এক অঙ্কের সুদহার সিদ্ধান্ত, ব্যবসায়ীদের ঋণ গ্রহণের খরচ কমিয়ে আনবে।

গতকাল মতিঝিলের ফেডারেশন ভবনে আয়োজিত বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন ব্যবসায়ী- শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন-এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনটির সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। এতে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর সহসভাপতি হাসিনা নেওয়াজ, নিজাম উদ্দিন রাজেশ, মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ ও রেজাউল করিম রেজনু। সংবাদ সম্মেলনে অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, কালো টাকা মানে যারা বৈধ পথে আয় করেছে, কিন্তু কোনো কারণে কর পরিশোধ করেননি। ওইসব অর্থ বিনিয়োগের পক্ষে আমরা। এ ধরনের সুযোগ থাকলে বিনিয়োগ বাড়বে। কিন্তু অবৈধ পথে আয়ের টাকা বিনিয়োগের বিপক্ষে আমরা। আরেক প্রশ্নের জবাবে এফবিসিসিআই সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অতীতের বাজেটগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে এই বাজেটে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবসার সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে। কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা থাকলেও তা আলোচনার মাধ্যমে সংশোধনের সুযোগ এখনো আছে। এর আগে লিখিত বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম নিজেদের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নে শুরু থেকেই সুষ্ঠু মনিটরিং জোরদার করা হলে কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এমএসএমই) থেকে বৃহৎ সব পর্যায়ে ব্যবসার ক্ষেত্রে কোনো হয়রানি থাকবে না, ভোক্তা পর্যায়ে কোনো খরচ বৃদ্ধি পাবে না, ব্যবসা সহজীকরণের ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকবে না, ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত হবে এবং করের আওতা বৃদ্ধি পাবে। এজন্য এফবিসিসিআইসহ সব বাণিজ্য সংগঠন প্রয়োজনীয় সহায়তা করবে। তার মতে, প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কর অবকাশ সুবিধা শিল্প খাতের বিকাশকে উৎসাহিত করবে। তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে ১ শতাংশ প্রণোদনা প্রদান এবং হ্রাসকৃত করহার বহাল রাখার সিদ্ধান্ত রপ্তানি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিশেষ সহায়ক হবে।  তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বা এসএমই খাতকে ফরমাল ইকোনমিতে নিয়ে আসার লক্ষ্যে ভ্যাটের রেয়াতি সুবিধাসহ বহু স্তরহার করার আমরা প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু শুধু ১৫ শতাংশ হারের ক্ষেত্রেই রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হয়েছে। যদি সব হারের ক্ষেত্রে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হয়, তাহলে এসএমই খাত বিকাশে সহায়ক হবে। তিনি বলেন- তৃতীয় শিল্পবিপ্লব থেকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে উত্তরণের প্রস্তুতি হিসেবে প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থার কারিকুলামে কর ও ভ্যাট পরিশোধে নাগরিকের যে দায়িত্ববোধ, ভোকেশনাল ট্রেনিং, ইন্টারনেট অব থিংগস (আইওটি), কোডিংকে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানাচ্ছি। শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, এ বাজেট ব্যবসাবান্ধব এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে। এ ধরনের একটি জনমুখী ও ব্যবসা সহায়ক বাজেট দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, অবকাঠামো, আর্থ-সামাজিক, দারিদ্র্য বিমোচন, মানবসম্পদ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, খাতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ায় এ বাজেট যুগোপযোগী। তার মতে, গত দশ বছর বর্তমান সরকারের জনবান্ধব ও ব্যবসাবান্ধব বাজেটের কারণে বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতি একটি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ইতিমধ্যে পদার্পণ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভিশন-২০২১ ও ২০৪১ এর সুফল বাংলাদেশে দৃশ্যমান।

সর্বশেষ খবর