সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সভাপতি ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান বলেছেন, সরকার বাজেট প্রণয়ন করে। নানা বিষয় নিয়ে আলোচন করে বাজেট প্রণয়ন করা হয়।
অন্যদিকে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, বাজেটে সুশাসন ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করা দরকার। দরকার মানুষের অবস্থান ও অবস্থানের জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো। বিশেষ করে দরকার দরিদ্র মানুষের জন্য মানসম্মত শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ বাড়ানো। গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বাজেট ২০১৯-২০২০ ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তারা। গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে সুজন। বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ রাশেদ আল তিতুমীর। সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সচিব ও গবেষক আবদুল লতিফ ম ল, বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো নাজনীন আহমেদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. আনু মুহম্মদ প্রমুখ।
হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, বাজেট আলোচনায় প্রান্তিক মানুষের সমস্যা নিয়ে খুব বেশি আলোচনা হয় না। বাজেটে কৃষকের সমস্যা দেখা হয়নি। ধানের উৎপাদন মূল্য কম হওয়ার জন্য ভর্তুকি দেওয়ার দরকার ছিল, সে বিষয়ে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ বাজেটে নেওয়া হয়নি। হলফনামার তথ্যানুযায়ী, আমাদের অর্থমন্ত্রী দেশের শীর্ষ ধনীদের একজন। তিনি আমাদের মতো দরিদ্রদের জীবন নিয়ে কতটা ভাববেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। তিনি গরিব মানুষের দুঃখ কি বুঝবেন? মাথাপিছু আয়ের হিসাব করার সময় উনি তো আমার আয় আর তার আয়কে দুই দিয়ে ভাগ করবেন। তখন দেখা যাবে, আমি অনেক আয় করি! এই হলো আমাদের সার্বিক মাথাপিছু আয়ের অবস্থা। তিনি বলেন, আমার এত বছর বয়স হয়েছে। আমি চাকরি জীবনে বহু বছরই বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। কোনো সময় দেখি নাই, সাধারণ মানুষের কথা, তাদের সমস্যা আর যারা প্রতিষ্ঠিত অর্থনীতিবিদ আছেন, তাদের কথা কানে নেওয়া হয়েছে, এমন নজির নেই।বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আয়-ব্যয়ের হিসাব পেলেও বাজেটে স্বচ্ছতার প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। বাজেট এখন ছকবাঁধা বাজেটে পরিণত হয়েছে। কাঠামোগত সংস্কারের পাশাপাশি মানুষের কল্যাণে বাজেট নতুন করে সাজানো দরকার। বাজেট শুধু দিলেই হবে না, সেই বাজেটে সাধারণ জনগণের জন্য কী আছে সেটা নিশ্চিত করা দরকার। যাদের টাকায় সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন হয়ে থাকে, দেশের উন্নয়নের জন্য বাজেট দেওয়া হবে আর সেই বাজেটে সাধারণ জনগণের জন্য কিছু থাকবে না এটা হতে পারে না। তিনি বলেন, বাজেটে সুশাসন ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করা দরকার। দরকার মানুষের অবস্থান ও অবস্থানের জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো। বিশেষ করে দরকার দরিদ্র মানুষের জন্য মানসম্মত শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ বাড়ানো। বর্তমানে আমাদের বাজেট হয়ে গেছে অনেকটা ছকবাঁধা, তাই বাজেটের কাঠামোগত সংস্কার দরকার।
