রবিবার, ২৩ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা
খালেদা জিয়ার মুক্তি

বিভাগে হবে কর্মসূচি ধরন ঠিক হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় পর্যায়ে কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। আগামী এক মাসের মধ্যে এ কর্মসূচি পালন করা হবে। তবে কী কর্মসূচি তা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। গতকাল রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত ১৫ জুন অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকটি মুলতবি রেখে  শেষ হয়। মুলতবি হওয়া বৈঠকটি গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে শুরু হয়ে তা শেষ হয় সাড়ে ৭টায়। শুরুতেই নতুন দুই স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমানকে শুভেচ্ছা জানান বিএনপি মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যরা। বৈঠকে লন্ডন থেকে স্কাইপে যুক্ত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে বিভাগীয় পর্যায়ে কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কী ধরনের কর্মসূচি পালন করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিছিল-সমাবেশ জাতীয় কর্মসূচি পালন করা হবে। বয়সসীমা প্রত্যাহার করে ধারাবাহিক কমিটি গঠনের দাবিতে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা যে আন্দোলন করছে সেটাকে অযৌক্তিক মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তাদের উচিত হবে অযৌক্তিক দাবির আন্দোলন বাদ দিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে চলে আসা। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর ওপর বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের হামলার ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিচালক মাসুদুর রহমান বুয়েটের ছাত্রদলের ভিপি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেন বিএনপির মহাসচিব।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য সঠিক নয়। আমরা তার সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছি। তিনি বুয়েটের ছাত্র ছিলেন না, কুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র ছিলেন। ছাত্রজীবনে সম্ভবত তিনি একটি বাম সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সঙ্গে জড়িত। পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রীর এমন অসত্য বক্তব্য নিন্দনীয় বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের নাতি নিখোঁজ হওয়ার পর সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ স্টেটমেন্ট দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে ফিরে পাওয়ার খবর নিঃসন্দেহে তার পরিবারের জন্য স্বস্তিদায়ক। কিন্তু এম ইলিয়াস আলীসহ বিএনপির পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী নিখোঁজ রয়েছেন, তাদের এখনো ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সভা নিয়মিত চলবে। আগামী শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা আবারও বসবে। এ ছাড়াও দলের নেতা ব্যারিস্টার আমিনুল ইসলামের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়েছে বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ  হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার,  লে.  জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমান।

এর আগে ১৫ জুন বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেতাদের মধ্যে বাদানুবাদ হয়। দেড় মাস পর অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে দলের নির্বাচিত এমপিদের শপথ ইস্যুতে দুই নেতা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে আরেক নেতার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং দ্বন্দ্বের নিরসন হয়। পরে জোট সম্প্রসারণ, দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ে কিছুক্ষণ আলোচনা করে বৈঠক মুলতবি রেখে শেষ করা হয়।

সর্বশেষ খবর