সোমবার, ২৪ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

আফগান স্পিনই চ্যালেঞ্জ

আফগান স্পিনই চ্যালেঞ্জ

গতকাল অনুশীলনে সাকিব

হোটেল হিলটনের লবিতেই দেখা আফগান দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে। মোহাম্মদ নবী, রশিদ খান, মুজিবুর রহমান ও রহমত শাহরা একে অপরের সঙ্গে রসিকতা করছেন। সাউদাম্পটনের রোজ বোল স্টেডিয়ামের গ্যালারির এক পাশটাই হোটেল হিলটন। বাংলাদেশের স্টেডিয়ামে যেমন দোকান এখানে স্টেডিয়ামে পাঁচতারকা। এই হোটেলেই থাকেন আফগান ক্রিকেটাররা। শনিবার ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ শেষেই দেখা হয়েছিল রশিদ খানদের সঙ্গে। ক্রিকেটারদের মুখচ্ছবি দেখে বোঝার উপায় ছিল না যে একটু আগে তারা শেষ ওভারে গিয়ে ম্যাচ হেরেছেন। বরং ভারতকে যে বিপদে ফেলতে পেরেছিলেন এতেই ভীষণ খুশি আফগানরা। লিফটে নামার সময় মোহাম্মদ নবীকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেই বললেন, ‘আমরাই জিতব ইনশাল্লাহ!’ নবীকে দেখে আত্মবিশ্বাসী মনে হলো। অবশ্য পুরো আফগানিস্তান টিমকেই বেশ প্রাণোচ্ছল মনে হয়েছে। ভারতের বিরুদ্ধে আগের তিন ম্যাচে পাত্তাই পায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তান। কোহলিদের বিরুদ্ধে খেলা সেই আত্মবিশ্বাসী আফগানিস্তান আজ বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ। একই মাঠ, সাউদাম্পটনের রোজ বোল। উইকেটও একই! বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত তিন স্পিনার রশিদ, নবী ও মুজিব। আফগানরা এখন টাইগারদের সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বী! সর্বশেষ ২০১৮ সালে এশিয়া কাপে দুবারের দেখায় একবার হেরেছে একবার জিতেছে বাংলাদেশ। তবে আজ সতর্ক হয়েই মাঠে নামছেন মাশরাফিরা। কাল টাইগার কোচ স্টিভ রোডস বলেন, ‘আফগানিস্তান খুবই ভালো দল। ওদের স্পিন খুবই বিপজ্জনক। আমাদের ভালো করতে হলে সেরাটাই দিতে হবে। ম্যাচ জয়ের সক্ষমতা আমাদের আছে।’ এই রোজ বোলে যে উইকেটে তারা স্পিন বিষে ভারতীয় দলের বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনআপকে আটকে দিয়েছিল মাত্র ২২৪ রানে, সেখানে বাংলাদেশকে পেলে যে তারা আরও উজ্জীবিত হবেন এটাই স্বাভাবিক। আফগান অধিনায়ক গুলবদিন নায়েবের ভরসা স্পিনারদের ওপরই, ‘আমাদের স্পিন আক্রমণ বিশ্বের অন্যতম সেরা। ভারতের মতো বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনআপও সুবিধা করতে পারেনি। শুধু বাংলাদেশ নয়, যে কোনো দলকে আমরা চ্যালেঞ্জ জানাতে পারি, যদি উইকেট থেকে সুবিধা পাই।’ এবারের বিশ্বকাপের উইকেট তো ব্যাটসম্যানদের জন্য স্বর্গ। কন্ডিশনের কারণে পেস বোলাররাও ভালো করছেন। স্পিনাররা এক কথায় ‘বলির পাঁঠা’! তবে এই রোজ বোলের উইকেট সম্পূর্ণ আলাদা। আফগানরা ভারতকে ধসিয়ে দিয়েছিলেন তো স্পিন আক্রমণ দিয়েই। তাদের চার স্পিনার মিলেই করেছেন মোট ৩৪ ওভার বল। যে রশিদ খান আগের ম্যাচে ৯ ওভারে ১১০ রান দিয়ে সমালোচিত হয়েছিলেন তিনিই কিনা এ ম্যাচে দারুণ বোলিং করলেন। তরুণ মুজিবুর রহমানের তুলনা নেই। মোহাম্মদ নবীও দারুণ। ভালো করেছেন পার্ট টাইমার স্পিনার রহমত শাহও। রোজ বোলের উইকেট খুবই ধীরগতির। বল পিচে পড়ার পর গতি কমে যায়। যুক্তরাজ্যের অন্য ভেন্যুর উইকেটের চেয়ে এটি সম্পূর্ণ আলাদা। অবশ্য বাংলাদেশও দেশের মাটিতে এমন উইকেটে খেলে অভ্যস্ত। সাকিব আল হাসানের জন্যও আদর্শ উইকেট। দারুণ কাজে দেবে মেহেদী হাসান মিরাজ ও মোসাদ্দেক হোসেনের বলও। তবে বাড়তি সুবিধা পাবেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। বল দারুণ ‘কাট’ করবে! মাশরাফির জন্য উইকেটই কাটার মাস্টারের জন্য আদর্শ। বাংলাদেশে তো আর নিয়মিত ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করার মতো পেসার নেই। তাই এমন উইকেট থেকে বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন মিডিয়াম পেসাররা। সে কারণেই আগের ম্যাচে ভারতের মোহাম্মদ সামি হ্যাটট্রিকসহ ৪ উইকেট নেন। তবে আজ দুই দলের মধ্যে বড় ব্যবধান গড়ে দিতে পারেন এক সাকিব আল হাসান। এই টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচে ৪২৫ রানের পাশাপাশি ৫ উইকেট নিয়েছেন। কিন্তু সাকিবকে কি আফগান স্পিনে আটকে রাখা সম্ভব!

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর