শিরোনাম
বুধবার, ২৬ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঋণখেলাপিদের রেহাই দেওয়া যাবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঋণখেলাপিদের রেহাই দেওয়া যাবে না

মোহাম্মদ নাসিম

আওয়ামী লীগের সভাপতিম লীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়ে গেল। এদের ছাড় দেওয়া যাবে না। ঋণখেলাপিদের রেহাই দেওয়া যাবে না। টাকা আদায় করতে না পারলে এদের সম্পদ বিক্রি করে গ্যাস, বিদ্যুতে ভর্তুকি দেন। এদের প্রতি জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের গতকালের বৈঠকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছেন বলে দাবি করেন ১৪ দলের সমন্বয়কারী মোহাম্মদ নাসিম। সাবেক এই মন্ত্রী সরকারি আমলাদের কাজের সমালোচনা করে বলেন, আমলাতন্ত্রের ওপর নির্ভর করে সব সিদ্ধান্ত নিলে ঠিক হবে না। এমপিদের প্রাধান্য দিয়ে করতে হবে। নাসিম বলেন, যে যত বড় আমলা সে তত ফাইল আটকে রাখে। আমলাতন্ত্রের মধ্যে কিছু আছে তারা দীর্ঘদিন সরকারকে বিব্রত করার জন্য সরকারকে ব্যর্থ করার জন্য কাজ করছে। সারা দেশে ব্যাংকিং সেক্টর, সচিবালয় সর্বত্রই জামায়াত-শিবির শিকড় গেড়ে বসে আছে। ব্যাংকিং খাতের অস্থিরতা নিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমরা সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু কষ্ট পাই আমাদের সরকারের আমলে ব্যাংক সেক্টর নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অর্থমন্ত্রী মুহিত সাহেবের সময় থেকে বলা হচ্ছে, হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়ে গেল। ঋণখেলাপিরা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেল। তাদের কেন ছাড় দেওয়া হলো। এই ঋণখেলাপিদের ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি বলেন, একজন কৃষকের ১ হাজার ২ হাজার টাকার জন্য মামলা হয়। আর ঋণখেলাপিরা দিনের পর দিন শিডিউল বদলাবে হাই কোর্টে স্থগিতাদেশ নেবে। কোর্ট এত কথা বলে তারা কেন স্থগিতাদেশ দেয়।

এই টাকা আদায় করতে না পারলে সম্পদ বিক্রি করে ভর্তুকি দেন গ্যাসের জন্য, বিদ্যুতের জন্য। কিন্তু কেন ঋণখেলাপিদের  ছাড় দেব? এটা হতে পারে না।

মোহাম্মদ নাসিম আরও বলেন, কিছু কিছু ব্যবসায়ী আছেন তারা ব্যাংকের মালিক, তারা গার্মেন্টের মালিক, তারা ওষুধ কোম্পানির মালিক, এমনকি তারা সংবাদপত্রের মালিক। এ ধরনের বহুবিধ বিশ্লেষণে বিশেষজ্ঞ ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে আছেন তারা সব ব্যাপারে অভিজ্ঞ। তারা আজকে সরকারি দলে ঢুকে ক্ষমতাসীন হয়ে যাচ্ছে। এসব সুবিধাবাদী ব্যবসায়ী আমাদের বন্ধু হতে পারে না। তিনি বলেন, ওই সব ব্যবসায়ী যারা কোনো দিন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেনি, কোনো দিন রাজপথে লড়াই করেনি তারা আজ ব্যাংকের মালিক, তারা গার্মেন্টের মালিক, ওষুধ কোম্পানির মালিক, সংবাদপত্রের মালিক হয়ে দিনের পর দিন আমাদের উন্নয়নের বিরুদ্ধে লেখে যাচ্ছে। এরা সুবিধাবাদী, এরা দুই দিক থেকেই সুবিধা নেয়।

মোহাম্মদ নাসিম বাজেটে কতিপয় বিষয়ে ধার্য কর হ্রাসের দাবি জানিয়ে বলেন, মোবাইল ফোনে যে অতিরিক্ত কর ধার্য করা হয়েছে সেটা প্রত্যাহার করুন। সঞ্চয়পত্র হচ্ছে গরিবের সোনার বাটি। এর ওপর উৎসে কর ধার্য করবেন না। গ্যাসের দাম কমানোর জন্য, গরিবের বিদ্যুতের দাম কমানোর জন্য প্রয়োজনে ভর্তুকি দিন। এ সময় তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত করার প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংসদ সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করারও দাবি জানান।

১৪ দলের সমন্বয়কারী মোহাম্মদ নাসিম বিএনপির রাজনীতির সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি বার বার ভুল করেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি লোক ভাড়া করল। কাকে করল? আওয়ামী লীগে ফেইলর যে, তাকে। আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত অত্যন্ত বিদগ্ধ শিক্ষিত মানুষ। বিএনপি সেই শিক্ষিত মানুষকে ভাড়া করল, কামাল হোসেনের মতো একজন ব্যর্থ চক্রান্তকারী মানুষকে ভাড়া করল। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সামনে দাঁড় করাল। তিনি কী করলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করে মাঠ খালি করে দিলেন। আমরা ফাঁকা মাঠে গোল দিলাম। ওরা ভাড়া করে ওদের জন্য, কাজ করল আমাদের জন্য। এভাবেই বিএনপি শেখ হাসিনার কৌশলের কাছে হেরে গেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এ সময় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর