বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

অনুমতি না মেলায় শোভাযাত্রা করতে পারেনি বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুলিশের অনুমতি না থাকায় ‘নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবসের’ র‌্যালি (শোভাযাত্রা) করতে পারেনি বিএনপি। পরে দিবসটি উপলক্ষে দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন দলটির  নেতা-কর্মীরা। গতকাল সকাল ১০টায় নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এই শোভাযাত্রা হওয়ার কথা ছিল। বিএনপির পক্ষ থেকে শোভাযাত্রার জন্য পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু অনুমতি মেলেনি। দুপুর পৌনে ১টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে             প্রতিবাদ সমাবেশ করেন নেতা-কর্মীরা। শোভাযাত্রার অনুমতি না দেওয়ায় সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের প্রতিটি দেশ এ দিবস পালন করছে। কিন্তু আমাদের এই কর্মসূচি পালন করতে দিল না। পুলিশ বলল, অনুমতি নেই। আমরা অনুমতির চিঠিও পাঠালাম। তারপরও এটার অনুমতি দিল না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কারণ এটা প্রচারিত হলে সরকার লজ্জা পাবে। আজকে যা ঘটছে, নিপীড়ন, নির্যাতন, উৎপীড়ন, দিনের পর দিন রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরফত আলী সপু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, যুবদলের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।

ক্ষমতাসীনদের হটাতে ঐক্য চাই : ক্ষমতাসীনদের হটাতে ‘জনঐক্য’ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘একমাত্র জনগণের শক্তি দিয়ে এই ধরনের শাসকদের পরাজিত করতে হবে। সে জন্য আমাদের সবচেয়ে বড় যেটা প্রয়োজন ঐক্য। জনগণের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে, রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। আমাদের যারা বুদ্ধিজীবী আছেন, বিভিন্ন সংগঠনে আছেন, মানবাধিকারে কাজ করছেন তাদের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করে ঐক্যবদ্ধ শক্তি দিয়ে এদেরকে পরাজিত করতে হবে।’

গতকাল রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবস-২০১৯ উপলক্ষে ‘নীরবতাও নির্যাতনের কারণ হতে পারে’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন। শুরুতে বিরোধী নেতা-কর্মীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডে র ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘রাইট টু লাইভ’ উপস্থাপন করা হয়। মানবাধিকার ডেস্কের প্রতিবেদন তুলে ধরেন দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা নির্যাতিত হয়েছি কিন্তু আমরা মানসিক দিক দিয়ে পরাজিত হয়নি। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এদেরকে পরাজিত করব। ইনশা আল্লাহ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা এদেরকে পরাজিত করতে সক্ষম হব।’

দলের মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন, জাহেদুল আলম হিটো ও ব্যারিস্টার জুয়েল ম লের পরিচালনায় সেমিনারে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন বিগত বছর নির্যাতিত নোয়াখালীর সূবর্ণচরের পারুল বেগম, সিরাজগঞ্জের মেরিনা মেরী, ময়মনসিংহের কক নুরুজ্জামান চান, রাজশাহীর দুর্গাপুরের মোশতাক আহমেদ, চট্টগ্রামের মোহাম্মদ ইয়াসিন, ঢাকার আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, আকরাম হোসেন, সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ। নরসিংদীর তানজিরুল হক লিমনকে হুইল চেয়ারে অনুষ্ঠানস্থলে নিয়ে আসার পর তার অবস্থা তুলে ধরেন তার মা মমতাজ বেগম। অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান, ইউএনডিপিসহ কয়েকটি দেশের কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন।

বিরোধী দলের ওপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, নিপীড়ন-নির্যাতনের পরও বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করা সম্ভবপর হবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর