সোমবার, ১ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

গাড়ি ছিনতাইয়ের টার্গেট করে উবার চালককে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

টয়োটা কোম্পানির এলিয়ন মডেলের গাড়ি ছিনতাই করতেই উবার চালক আরমানকে হত্যা করে ছিনতাইকারীরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা এলিয়ন গাড়ি পেতে উবারের রাইড রিকোয়েস্টে পাঁচ বার কল করে। গাড়িটি ৮ লাখ টাকায় এক ব্যক্তির কাছে বিক্রির চুক্তি করেছিল। এ ঘটনায় গ্রেফতার তিন অভিযুক্ত ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) এমনটি জানিয়েছে। ডিবি বলছে, শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে সিজান, শরিফ ও সজীবকে গ্রেফতার করা হয়। গাড়িটি ছিনতাইয়ের উদ্দেশে রামপুরার বাসার ছাদে পরিকল্পনা আঁটে মূল পরিকল্পনাকারী সিজান। পরে ১৪ জুন উত্তরা ১৪ নং সেক্টরে পরিকল্পনা অনুযায়ী গলা কেটে হত্যা করা হয় উবার চালক আরমানকে। হত্যায় ব্যবহৃত দুটি সুইচ গিয়ার চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন বলেন, টার্গেট ছিল টয়োটার এলিয়ন মডেলের গাড়ি ছিনতাই করা। টার্গেট হিসেবে তারা বেছে নিয়েছিল রাইড শেয়ারিং কোম্পানি উবারের গাড়ি। পরিকল্পনা অনুযায়ী এলিয়ন গাড়ি পেতে উবারের রাইড রিকোয়েস্টে এক-দুবার নয়, পাঁচবারের চেষ্টায় পেয়ে যায় কাক্সিক্ষত এলিয়ন মডেলের গাড়ি। গত ১৩ জুন রাত ১২টা থেকে ১টার মধ্যে উত্তরার সেক্টর-১৪, রোড-১৬ এর ৫২ নং বাড়ির সামনে গাড়ির মধ্যে চালক আরমানকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। হত্যার পর ডিবি উত্তর বিভাগ ছায়া তদন্তে নামে।

তদন্তের এক পর্যায়ে জানা যায়, উবার চালক আরমান হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সিজান এবং তার সঙ্গে ছিল শরিফ ও সজীব। বর্তমানে মামলাটি ডিবি (উত্তর) তদন্ত করছে। ডিবির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, সিজান আগেও গাড়ি ছিনতাই করেছে। এক ব্যক্তিকে ৮ লাখ টাকায় এলিয়ন মডেলের গাড়ি সরবরাহের চুক্তি করে। এরপর এলিয়ন গাড়ি ছিনতাইয়ের উদ্দেশে সিজান রামপুরায় তার বাসার ছাদে শরিফকে নিয়ে ছক আঁকে। এক পর্যায়ে তাদের পরিকল্পনায় সজীবকে যুক্ত করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৩ জুন নিউমার্কেট থেকে তারা দুটি সুইচ গিয়ার চাকু কেনে। রাত ১১টার দিকে সিজান উবারের মাধ্যমে কল করলে গাড়িটি এলিয়ন না হওয়ায় কল বাতিল করে দেয়। এভাবে পাঁচ বারের চেষ্টায় পেয়ে যায় উবার চালক আরমানের এলিয়ন মডেলের গাড়িটি। গাড়িতে তারা উত্তরার উদ্দেশে রওনা হয়। পরে উত্তরার সেক্টর-১৪, রোড-১৬ এর নিরিবিলি স্থানে গাড়িটি থামাতে বলে। গাড়ির ভাড়া পরিশোধ না করে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে। রাত ১২টা ৩৭ মিনিটের দিকে চারদিকে নিরাপদ মনে করে সিজানের ইশারায় চালক আরমানের পেছনের ছিটে বসা শরিফ আরমানের মাথার চুল পেছনের দিকে টেনে ধরে চাকু দিয়ে গলা কেটে গাড়ি থেকে নেমে যায়। পরবর্তী সময়ে আশপাশে পরিবেশ অনুকূল না হওয়ায় আরমানের মরদেহসহ গাড়িটি রেখে তারা পালিয়ে যায়।

সর্বশেষ খবর