শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভারত বধের মিশন আজ

প্রতিদিন ডেস্ক

ভারত বধের মিশন আজ

অনুশীলনে গতকাল সাকিব-মুশফিকরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

একের পর এক স্বপ্ন দুয়ারে কড়া নেড়েছে বাংলাদেশ! কিন্তু বারবার শেষ প্রান্তে গিয়ে থমকে যেতে হয়েছে। প্রতিবারই টাইগারদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারত! তারা বারবার বাংলাদেশের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিয়েছে! এই বার্মিংহামেই বছর দুয়েক আগে (২০১৭ সালে) বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ওঠার আশা হত হয়েছে কোহলিদের কাছে হেরে। তার আগে তুমুল আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়ে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে ভারত। দু-দুবার এশিয়া কাপের ফাইনাল (২০১৮ সালে দুবাই ও ২০১৬ সালে ঢাকা) থেকে বাংলাদেশকে বিদায় করে দিয়েছে। শ্রীলঙ্কায় নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে শেষ বলে বঞ্চিত হওয়ার যন্ত্রণা যেন এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় টাইগারদের। দিনেশ কার্তিকের সেই ছক্কা কেড়ে নিয়েছিল বাংলাদেশের আশা! এবারের বিশ্বকাপেও টাইগারের সামনে সেই বাধার প্রাচীর সেই ‘ভারত’!

নাহ, এবার আর থমকে যেতে চান না মাশরাফিরা। আজ বার্মিংহামে ভারতকে হারিয়েই এগিয়ে যেতে চান সামনে। ‘সেরা হতে হলে তো আগে সেরাদেরই হারাতে হবে তাই না!’ চিরন্তন সত্য হচ্ছে, এক একটি ‘পরাজয়’ যতটা কষ্ট দেয় তার চেয়ে ঢেড় বেশি দেয় শিক্ষা! ভারতের বিরুদ্ধে শেষ দুটি বড় ম্যাচ থেকে বাংলাদেশ শিক্ষা নিতে পারে! সব শেষ এশিয়া কাপের ফাইনালে লিটন-মিরাজের ১২০ রানের ঝড়ো গতির উদ্বোধনী জুটির পরও কেন বাংলাদেশ মাত্র ২২২ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল? এই এজবাস্টনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেই সেমিফাইনালে ২৮তম ওভারে ২ উইকেটে ১৫৪ রান আসার পরও কেন ইনিংসটা গুটিয়ে গিয়েছিল ২৬৪ রানে? এই দুটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজে নিয়ে আজ মাঠে নামলেই ভালো ফল পাবে বাংলাদেশ!

মাশরাফি মর্তুজা গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘যে কোনো ম্যাচ থেকেই শিক্ষা নেওয়ার অনেক কিছু আছে। আমরা দুই ম্যাচে প্রথম দিকে ভালো অবস্থানে ছিলাম। কিন্তু পরের দিকে পারিনি। দুই ম্যাচেই ওদের স্পিনাররা ভালো করেছে। ম্যাচের সময় নিজেকে ঠা া রাখাটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচের ভালো অবস্থায় থাকার সময় যে গতিটা থাকে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আমাদের এখন লক্ষ্য থাকবে যাতে এই ম্যাচে সবকিছু ঠিক থাকে। আমরা যেন ক্যালকুলেশন অনুযায়ী খেলতে পারি। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে ভালো খেলাটাই জরুরি।’

ইতিহাস যেমন বেদনা দেয় তেমনি আজ মাঠে নামার আগে আরেক ইতিহাস প্রেরণা হতে পারে টাইগারদের জন্য! ২০০৭ ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপের সেই ম্যাচটি! শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলি, রাহুল দ্রাবিড়, বিরেন্দর শেবাগ, যুবরাজ সিং, মহেন্দ্র সিং ধোনি, জহির খান, হরভজন সিংকে নিয়ে গড়া ভারতের সর্বকালের সেরা দলটিকেই তো বিদায় করে দিয়েছিল বাংলাদেশ। তাহলে আজ কেন হবে না?

ভারতকে আটকে দিতে কী করতে হবে তা দেখিয়ে দিয়ে গেছে ইংলিশরা! খেলতে হবে গাণিতিক বিশ্লেষণ মাথায় রেখে। প্রতিটি ক্রিকেটার সম্পর্কে আলাদা পরিকল্পনা থাকতে হবে। ঠিক ঠাক মতো সূত্রের প্রয়োগ করতে পারলে অঙ্ক এমনিই মিলে যাবে! সুযোগ বুঝে আক্রমণ করতে হবে ভারতের স্পিনারদের। ভারতীয় পেসারদের খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই। বুমরার লক্ষ্যই থাকে যতটা বেশি ডট বল করা যায়। তবে ভয়ঙ্কর মোহাম্মদ সামী। তিন ম্যাচেই তার ১৩ উইকেট। আর আগে ফিল্ডিং করলে টার্গেট থাকতে হবে প্রথম ১০ ওভারেই রোহিত শর্মাকে ড্রেসিংরুমে পাঠিয়ে দেওয়া। তারপর দ্রুত কোহলিকে থামিয়ে দেওয়া। প্রথম ১৫ ওভারের মধ্যে দুই ব্যাটসম্যানকে আটকে দিতে পারলে আড়াইশ রান করাও কঠিন হয়ে যাবে এই ভারতের! অতীতের সুখস্মৃতি-দুঃস্মৃতি, বর্তমানের হিসাব-নিকাশ সব কিছু মাথায় রেখে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়েই আজ মাঠে নামছে টিম বাংলাদেশ! ভারত রুখে দেওয়ার জন্য সংঘবদ্ধ টাইগাররা। কলম্বো, দুবাইয়ের মতো আর কষ্ট পাওয়া নয়, আজ বার্মিংহামে ফিরে আসুক এক যুগে ক্যারিবীয় দ্বীপের সেই স্মৃতি। সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয় হোক না হয় নাই, তবে আজ ভারতকে হারিয়ে অতীতের সব দেনা-পাওনা মিটিয়ে দিতে চান মাশরাফিরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর